ময়দানে সুব্রতর প্রথম জন্মদিন অনুষ্ঠানে সামিল কর্তা-মন্ত্রী-ফুটবলাররা

0

◆জন্মদিনে সুব্রত দত্তর সঙ্গে মোহনবাগান সচিব দেবাশিস দত্ত,আইএফএ সহসচিব রাকেশ (মুন) ঝাঁ ও মন্ত্রী সুজিত বসু। রবিবার সন্ধ‍্যায় এয়ারলাইন্স ক্লাব তাঁবুতে◆

ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন : ময়দানে সকল ক্লাবের কর্তা থেকে কোচ, ফুটবলারদের নিয়ে আড্ডার আসর বসিয়ে থাকে জর্জটেলিগ্রাফ স্পোর্টস ক্লাব। প্রতিবছর দূর্গা পুজোর পর ‘বিজয়া সম্মিলনী’-র মাধ‍্যমে। উদ‍্যোগটা বরাবরই নিয়ে থাকেন ময়দানের অতি পরিচিত মুখ সুব্রত দত্ত। এবার তাঁর জন্মদিন ঘিরেই ময়দানে ফের একটি ‘গেট টুগেদার।’ তবে এবার এয়ারলাইন্স ক্লাব তাঁবুতে।

অতীতে ময়দানে সুব্রত দত্তর জন্মদিন এভাবে পালন করা হয়নি। এবার প্রথম। রবিবার সন্ধ‍্যায় সুব্রত দত্তর জন্মদিনে হাজির ছিলেন ময়দানের কর্তা থেকে ফুটবলার কোচেরা। প্রাক্তন ফুটবলার মানস ভট্টাচার্য, প্রশান্ত ব‍্যানার্জি, অমিত ভদ্র থেকে দীপেন্দু বিশ্বাস, গৌতম ঘোষ, প্রশান্ত চক্রবর্তী, লাল্টু দাস, সুপ্রিয় দাশগুপ্ত এসেছেন রবিবাসরীয় সন্ধ‍্যায়।

সুব্রত দত্তকে শুভেচ্ছা জানালেন সিএবি সভাপতি স্নেহাশিস গাঙ্গুলি ও কোষাধ‍্যক্ষ প্রবীর চক্রবর্তী

ছিলেন বাংলা ফুটবল দলের দুই কোচ বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য ও রঞ্জন ভট্টাচার্য। সদ‍্য সন্তোষ ট্রফিতে বাংলা ব‍্যর্থ হওয়ার পর দুই ‘ভট্টাচার্য’ কে নিয়ে তুলনা টেনে ময়দানে চর্চা চলছেই। রবিবার জন্মদিনের অনুষ্ঠানে তাঁরা কি মুখোমুখি হলেন? নজরে আসেনি। বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য এসে সুব্রত দত্তর সঙ্গে দেখা করে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান। তার পরে আইএফএ সহসভাপতি স্বরূপ বিশ্বাসের সঙ্গে এয়ারলাইন্স ক্লাব তাঁবুর সুন্দর লনে বসে কিছুক্ষণ কথা বলেই চলে গেলেন।

বিশ্বরূপ দের সঙ্গে সুব্রত দত্ত

সন্ধ‍্যার মুখেই হাজির সিএবি সভাপতি স্নেহাশিস গাঙ্গুলি। সঙ্গে উয়াড়ীর শীর্ষ কর্তা ও সিএবির কোষাধ‍্যক্ষ প্রবীর চক্রবর্তী। সুব্রত দত্তর হাতে ফুল দিয়ে চলে গেলেন।

তারও আগে মোহনবাগানের সচিব দেবাশিস দত্ত শুরু থেকেই ছিলেন। সুব্রত দত্তর কেক কাটার মুহূর্তে নিজেকে উৎসবের মধ‍্যে জড়িয়ে ফেললেন স্বতঃস্ফূর্তভাবে। শুরু থেকে ছিলেন মন্ত্রী সুজিত বসু। কেক কাটার পর কালীঘাট ক্লাবে ছুটলেন বাবলু কোলে ও সুবীর (বাবলু) গাঙ্গুলি।

বাঁদিক থেকে স্বরূপ বিশ্বাস, নবাব ভট্টাচার্য,সুদেষ্ণা মুখার্জি,অলোকেশ কুন্ডু,সুব্রত দত্ত এবং জয়দীপ মুখার্জি

‘হ‍্যাপি বার্থডে সেলিব্রেশন’ – সুব্রত দত্তর অনুষ্ঠানের এটাই ছিল ট‍্যাগ লাইন। কিন্তু কত তম জন্মদিন তাঁর? সুব্রত দত্তর বয়সটা কত হল? মজা করে জিজ্ঞাসা করতেই সুব্রত দত্ত বলে উঠলেন,’ফেসবুকে প্রোফাইলে গিয়ে দেখে নিও।’ কিন্তু সেখানে তো শুধু তারিখ উল্লেখ আছে। সালটা কোথায়? প্রশ্ন শুনে পাশেই দাঁড়িয়ে থাকা আইএফএ-এর প্রাক্তন সচিব জয়দীপ মুখার্জি বলে উঠলেন, ‘বাপিদা নিজের বয়সটা সিক্রেট রাখতে চেয়েছে বলেই তো সালটা নেই। বুঝে নিতে হবে।’ জয়দীপের কথা শুনে সুব্রত দত্তর ঠোটে ‘দুষ্টু-মিষ্টি’ হাসি। তিনি কী বলিউডের জিতেন্দ্র না দেবানন্দকে ফলো করছেন? বুঝে নিতে হবে। একদা সুব্রত দত্তর ছায়াসঙ্গী অলোকেশ কুন্ডু হাসতে হাসতে বলছিলেন,’একটা সময়ের পরে বয়স বাড়ে না,কমে। বাপির ক্ষেত্রেও তাই।’

উৎপল গাঙ্গুলির শুভেচ্ছা। সঙ্গে লাল্টু দাস, হার্মেজ ভয়েসের কর্ণধার অভিজিত দাস, নবাব ভট্টাচার্য ও সুপ্রিয় দাশগুপ্ত

গড়ের মাঠ মানেই সবাইকে নিয়ে আনন্দ, খুনসুটি এবং অবশ‍্যই ‘পিএনপিসি’। আবার একই সঙ্গে থাকবেই ময়দানের জটিল অঙ্ক। একথা ময়দানের সবাই জানে। নতুন কিছু নয়। কথায় আছে ‘ঢেকি স্বর্গে গেলেও ধান ভাঙে’। সেই সহজাত ধারণা নিয়েই কেক,মিস্টি,ফিস ফ্রাই খেতে খেতে কেউ কেউ খোঁজ নিচ্ছিলেন, স্নেহাশিস এখনও আছেন? তিনি গেলেই কি অভিষেক ঢুকবেন? কোন ক্লাবের কোন কর্তা জন্মদিনের অনুষ্ঠানে এলেন? কতক্ষন থাকলেন? উপস্থিত কতিপয় ব‍্যক্তি-কর্তার কৌতুহল চোখে পড়ার মতোই। স্নেহাশিস চলে যাওয়ার পর ঢুকলেন অভিষেক ডালমিয়া। বহুদিন পর ময়দানে এলেন আইএফএ-এর প্রাক্তন সচিব উৎপল গাঙ্গুলি। বয়স হয়েছে। হাঁটুর সমস‍্যা। হাঁটাচলায় শ্লথগতি। তবু সুব্রত দত্তর জন্মদিন বলেই অনুষ্ঠানে হাজির তিনি। এসেছিলেন বিশ্বরূপ দে। সিআরএ সচিব উদয়ন হালদার ও দেবাশিস মিশ্রও সুব্রত দত্তকে শুভেচ্ছা জানিয়ে গেলেন।

অনুষ্ঠানের ফাঁকে সুব্রত দত্তর একটা সেলফি

এয়ারলাইন্স ক্লাব তাঁবুর গেটে হাজার ওয়াটের আলো। সেই গেটে দাঁড়িয়ে থেকে অতিথিদের অভ‍্যর্থনা জানাচ্ছেন অলোকেশ কুন্ডু। ময়দান জানে, ‘দত্ত’ পরিবার হোক বা তাঁর অন‍্য প্রিয় মানুষের অনুষ্ঠান হোক, গেটের বাইরে থেকেই অতিথিদের অভ‍্যর্থনা জানানোটাই অলোকেশ কুন্ডুর দস্তুর।

মোহনবাগান সচিব দেবাশিস দত্ত বেরোনোর সময় বীরভূমের একদা দোর্দন্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতা অনুব্রত মন্ডলের ঢংয়ে (‘উন্নয়ন রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে’) যেন বলে উঠলেন,”অনুষ্ঠানের আলো তো এই গেটেই দাঁড়িয়ে আছে। ময়দানের আলো।” তাঁর মন্তব‍্য শুনে হাসলেন অলোকেশ কুন্ডু। ভিতরে তখন সদা ব‍্যস্ত আইএফএ সহসচিব রাকেশ ঝাঁ (মুন), সহসভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস, প্রাক্তন সচিব জয়দীপ মুখার্জি। একটা মানুষের জন্মদিন ঘিরে সবাই যেন উৎসবে সামিল হয়েছেন। সুব্রত দত্তর জন্মদিন অনুষ্ঠানের দাপটে ময়দানের ‘ওরা-আমরা’ কি পি সি সরকারের সেই বিখ‍্যাত ম‍্যাজিক – গুসকরা স্টেশন থেকে আস্ত ট্রেন ভ‍্যানিসের মতো উধাও হয়ে গেল? নাকি ‘ওরা-আমরা’ ম‍্যাজিক ‘গিলি গিলি গো’-এর মতো পাত্রর অফুরন্ত ‘জল’? বুঝে নিতে হবে।

মহমেডানের সভাপতি ও সচিব আমিরুদ্দিন ববি ও ইসতিয়াক আহমেদ

সুব্রত দত্ত বলছিলেন, ‘ময়দানে সবাই নিজের মতোই থাকে। স্বাধীন ভাবে। নিজের পছন্দ মত দল করে। কিন্তু এই সবের উর্ধ্বে গিয়ে ব‍্যক্তি বাপি বা বাপিদার জন‍্য অনুষ্ঠানে আজ যেভাবে এসেছেন সেটা দেখেই মন ভরে গিয়েছে। আমি মুগ্ধ।

মুগ্ধ হওয়ারই তো কথা। রবিবাসরীয় সন্ধ‍্যায় সেই শ‍্যামনগর থেকে ছুটে এসেছেন ইউনাইটেডের কর্তা নবাব ভট্টাচার্য। এসেছিলেন বিওএ-এর সভাপতি স্বপন (বাবুন) ব‍্যানার্জি। হাজির মহমেডানের কামরুদ্দিন,ইসতিয়াক আহমেদ, আমিরুদ্দিন ববি,বেলাল আহমেদরা। কলকাতা ক্রীড়া সাংবাদিক ক্লাবের এক ঝাঁক লাল গোলাপের শুভেচ্ছা বার্তা পেয়ে খুশি সুব্রত।

দেবাশিস দত্তর শুভেচ্ছা বার্তা

অনুষ্ঠান তখন কার্যত শেষ, ময়দানের এক কর্তা আর এক কর্তাকে বিড়বিড় করে উপস্থিত অতিথিদের নামগুলি বলছিলেন। একটু দুরেই দাঁড়িয়ে ছিল ‘ইনসাইড স্পোর্টসে’র এই প্রতিবেদক। উপস্থিত অতিথিদের যে নাম গুলি কানে এলো তার মধ‍্যে অজিত ব‍্যানার্জি, অনির্বান দত্ত এবং দেবব্রত সরকারের নাম শোনা যায়নি। সেই কর্তার বলার ভুল নাকি এই প্রতিবেদকের শোনার ভুল? কনফিউশনটা থেকেই গেল।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here