◆চ্যাম্পিয়নদের হাতে সার্টিফিকেট তুলে দিচ্ছেন মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা। পাশে বীরভূম ডিএসএ সচিব বিদ্যাসাগর সাউ। বৃহস্পতিবার সিউড়ির ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ◆
ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন,সিউড়ি : বীরভূম জেলার সিউড়ি শহরে বেশ কয়েক বছর পর হয়ে গেল সাব জুনিয়র রাজ্য ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়নশিপ। পরিচালনায় বীরভূম জেলা ক্রীড়া সংস্থা। সহযোগিতায় পশ্চিমবঙ্গ ব্যাডমিন্টন অ্যাসোসিয়েশন। গত ২৭ অগাষ্ট এই চ্যাম্পিয়নশিপের আসর বসেছিল বীরভূম জেলার সিউড়ির ইন্ডোর স্টেডিয়ামে। ফাইনাল হয়ে গেল ৩১ অগাষ্ট,বৃহস্পতিবার। বাংলার প্রতিটি জেলার খেলোয়াড়রা এই চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ গ্রহণ করেছিল। বীরভূম জেলা ক্রীড়া সংস্থার কর্তাদের সুষ্ঠু পরিচালনায় খুশি রাজ্য ব্যাডমিন্টন সংস্থার কর্তারা।
পশ্চিমবঙ্গ ব্যাডমিন্টন সংস্থার সচিব শেখর বিশ্বাস বলেন,”আমরা চাই বিভিন্ন জেলায় ব্যাডমিন্টনের এই চ্যাম্পিয়নশিপ হোক। বীরভূম জেলা ক্রীড়া সংস্থার কর্তারা দক্ষতার সঙ্গে এই চ্যাম্পিয়নশিপ করেছে। তার জন্য তাঁদের অসংখ্য ধন্যবাদ। জেলায় জেলায় যত বেশি করে এই ধরনে প্রতিযোগিতা হবে ব্যাডমিন্টনের প্রসার ও প্রচার আরও বাড়বে। আগ্রহ বাড়বে জেলার ছেলে-মেয়েদের মধ্যেও।”
এই চ্যাম্পিয়নশিপ ছিল বয়সভিত্তিক। অনূর্ধ্ব -১৩ ও ১৫ বয়সের ছেলে মেয়েদের নিয়েই ছিল সাব জুনিয়র চ্যাম্পিয়নশিপ। কিন্তু প্রতিযোগিতার তৃতীয় দিনে বয়স ভাড়ানো অভিযোগ নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। বিতর্ক এমন পর্যায়ে পৌছয় যে, ওই দিন একটা সময়ের জন্য খেলা বন্ধ করে দিতে হয়। তবে সিউড়ি জেলা ক্রীড়া সংস্থার কর্তারা তৎপরতা এবং দক্ষতার সঙ্গে সেই পরিস্থিতি সামলে দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার এই বিষয়ে বলতে গিয়ে রাজ্য ব্যাডমিন্টন সংস্থার সভাপতি উষানাথ ব্যানার্জি সিউড়ির ইন্ডোর স্টেডিয়ামে প্রতিযোগী এবং তাদের অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে বলেন,”এই চ্যাম্পিয়নশিপে যে নক্কারজনক ঘটনা যারা ঘটিয়েছেন তা কাঙ্খিত ছিল না। অন্যায় হলে তা নিয়ম,শৃঙ্খলা মেনেই প্রতিবাদ করতে হবে। যারা এই এই ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছেন তাদের পরিস্কার ভাবে জানিয়ে দিতে চাই,ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা ঘটালে আমাদের রাজ্য সংস্থার অনুমোদিত কোনও প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করতে দেওয়া হবে না। সব কিছুর একটা সিস্টেম আছে। কোনও ভুল, অন্যায় হলে সিস্টেম অনুযায়ী প্রতিবাদ করুন। নিশ্চয় সেই প্রতিবাদ গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে। কিন্তু কোনও অবস্থায় বিশৃঙ্খলা বরদাস্থ করা যাবে না।”
বীরভূম জেলা ক্রীড়া সংস্থার সচিব বিদ্যাসাগর সাউ বলেন,”অনেক দিন পর আমরা রাজ্য স্তরের ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়নশিপ পরিচালনা করলাম। আমাদের এই ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ব্যাডমিন্টনের সব রকম ব্যবস্থা আছে। খেলোয়াড়দের কোনও সমস্যা হয়নি। আমরাও চাই আমাদের জেলা থেকে আরও বেশি করে ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় উঠে আসুক।ফুটবল,ক্রিকেট,অ্যাথলেটিক্স ছাড়াও ব্যাডমিন্টনের প্রসার ও প্রচারের জন্যই আমরা রাজ্য ব্যাডমিন্টন সংস্থার কাছে এই চ্যাম্পিয়নশিপ করার আবেদন করেছিলাম। সেই আবেদনে সাড়া দিয়েছেন কর্তারা। তার জন্য রাজ্য সংস্থার কর্তাদের ধন্যবাদ জানাই।”
ফাইনালে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ক্ষুদ্র, কুটির শিল্প ও বস্ত্র মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা। ছিলেন এই জেলার এডিএম। কলকাতা থেকে এসেছিলেন এরিয়ান ক্লাবের সচিব সমর পাল। যিনি বহু বছর ধরে বিভিন্ন জেলার ক্রীড়ার সঙ্গে জড়িত। এছাড়াও ছিলেন রাজ্য ব্যাডমিন্টন সংস্থার সভাপতি উষানাথ ব্যানার্জি, সচিব শেখর বিশ্বাস, বীরভূম জেলার দক্ষ ক্রীড়া সংগঠক ও সিএবির অ্যাপেক্স কাউন্সিলের সদস্য সুশান্ত ব্যানার্জি ও কোষাধ্যক্ষ (বীরভূম ডিএসএ) পার্থ প্রতীম মুখার্জি এবং সিউড়ির ক্রীড়া সংগঠক শেখ মহিম, প্রমূখ। এই প্রতিযোগিতা সংগঠনের কাজ যাতে সুষ্ঠুভাবে হয় তার জন্য বীরভূম ডিএসএ সচিব সহ কালীদাস মাহারা (যুগ্ম সচিব),রাইহান ইকবাল (সিউড়ি সাব ডিভিশন সচিব),রক্ষাকর দাস ( কনভেনর, ব্যাডমিন্টন) সক্রিয় ছিলেন।
ছেলেদের সিঙ্গেলসে (অনূর্ধ্ব – ১৩) চ্যাম্পিয়ন হয়েছে অনিকেত পাল। এই বিভাগের বালিকাদের সিঙ্গেলসে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে প্রতিষ্ঠা পাল। ছেলেদের ডাবলসে (অনূর্ধ্ব-১৩) চ্যাম্পিয়ন হয়েছে আরুষ মন্ডল ও অনিক নস্কর। একই বিভাগে মেয়েদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে অরিয়ামা চক্রবর্তী ও প্রতিষ্ঠা পাল।
অন্যদিকে ছেলেদের (অনূর্ধ্ব-১৫) সিঙ্গলসে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে প্রাঞ্জল দাস। মেয়েদের এই বিভাগে সেরা হয়েছে শ্রেণাক্ষি মন্ডল। ছেলেদের ডাবলসে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ইশান হালদার ও সৌম্যদীপ চক্রবর্তী। মেয়েদের বিভাগে চ্যাম্পিয়ন সোনিকা বনিক ও শ্রেণাক্ষি মন্ডল। মিক্সড ডাবলসে পদক জিতল সাগ্নিক দত্ত ও উপান্তিকা পাল চৌধুরী।