◆জয়ের পর DHFC এর সদস্য-সমর্থকদের উল্লাস। শনিবার মহমেডান মাঠে◆
ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন : জমজমাট মহমেডান – DHFC ম্যাচ। উপস্থিত দুই দলের সমর্থকরা। পরিপূর্ণ গ্যালারি। বহুদিন পর ভিড় দেখা গেল র্যামপার্টে। হাওড়া ইউনিয়ন ও আশুতোশ কলেজ তাঁবুর দিকের গ্যালারিতে ডায়মন্ডহারবার এফসির সদস্য-সমর্থকদের বসার ব্যবস্থা করেছিল মহমেডান কর্তারা। এদিন গোটা স্টেডিয়াম ছিল পরিপূর্ণ। ম্যাচ ঘিরে উন্মাদনা চরমে। টানটান উত্তেজনার এই ম্যাচে এগিয়ে থেকেও হেরে গেল মহমেডান স্পোর্টিং। পরপর তিন ম্যাচে জয় পাওয়ার পর হারল মহমেডান। DHFC ২-১ গোলে জিতল। কলকাতা লিগে দুই বছর খেলতে নেমে প্রথম সাক্ষাতেই এই প্রথম কোনও বড় প্রধান ক্লাবকে হারাল DHFC এর ছেলেরা। জয়ী দলের দুটি গোলই করেছেন রাহুল পাসোয়ান। মহমেডানের গোল করেন ব্যারেটো।
এদিন ম্যাচের শুরু থেকেই দুই দলই আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলে। গত তিন ম্যাচে মহমেডান যে পাসিং ফুটবল খেলেছিল সেই খেলাটা খেলতে পারেনি। DHFC এর ফুটবলাররা যে ভাবে বলকে তাড়া করে গেলেন তাতে পাসিং ফুটবলটা আর খেলার সুযোগ পেলেন না মেহেরাজউদ্দিনের ছেলেরা।
প্রথমার্ধে তুল্যমূল্য লড়াই হল দুই দলের মধ্যে। আক্রমণ, প্রতিআক্রমণের খেলা। এদিন মহমেডানের ডেভিডকে সেই ভাবে গোলের সুযোগ করতে দেয়নি। প্রথমার্ধে একটি জঘন্য ফাউল থেকে পেনাল্টির আবেদন করেছিলেন মহমেডানের ফুটবলাররা। রেফারি নাকচ করে দিয়েছিলেন। তবে এই ম্যাচের রেফারি নৃপেন হালদারের তিন চারটি সিদ্ধান্ত নিয়ে মহমেডান ফুটবলার ও দর্শকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এই ধরনের হাই ভোল্টেজ ম্যাচে নৃপেনকে দায়িত্ব না দিয়ে ফিফা রেফারি প্রাঞ্জল,প্রতীকদের দিতে পারতেন কলকাতা রেফারিজ সংস্থার কর্তারা।
ম্যাচের প্রথমার্ধের ৬১ মিনিটে দুরন্ত গোল করে মহমেডানকে এগিয়ে দেন ব্যারেটো। কিন্তু সেই গোল ধরে রাখতে পারেননি। ৬৬ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে DHFCকে সমতায় ফেরান রাহুল পাসোয়ান। ৭৪ মিনিটে সেই রাহুল পাসোয়ান জয়সূচক গোল করে ম্যাচের সেরা নির্বাচিত হন।
ম্যাচ শেষে DHFC কোচ কিবু ভিকুনা রেফারি নিয়ে অভিযোগ করে গেলেন। তাঁর দাবি রেফারির কয়েকটা সিদ্ধান্ত তাঁদের দলের বিরুদ্ধে গিয়েছে। ম্যাচের নায়ক রাহুল পাসোয়ান জোড়া গোল করে খুশি। সেই সঙ্গে মহমেডানকে জবাব দেওয়ার ইঙ্গিতও দিলেন। গত বছর তাঁকে মহমেডান কথা দিয়েও আই লিগে রেজিস্ট্রি করায়নি। মাঠে বসেই খেলা দেখতে হয়েছিল। সেই রাহুল মহমেডান মাঠে এসে মহমেডানকে দুই গোল করে হারিয়ে চরম তৃপ্ত।
এই ডায়মন্ডরবার এফসি দলটা তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ অভিষেক ব্যানার্জির। কিন্তু পুরো দলের দায়িত্বে আছেন তাঁরই ভাই আকাশ ব্যানার্জি। ম্যাচ শেষে DHFC এর সহসভাপতি আকাশ বলছিলেন,”গড়ের মাঠের ঘেরা মাঠে বড় দলের বিরুদ্ধে আমরা প্রথম খেললাম। মহমেডান মাঠের পরিবেশ, এত দর্শকের উপস্থিতি অসাধারণ। দারুন উপভোগ করেছি। আরও ভাল লাগছে আমরা লড়াই করে জিতেছি। ধাপে ধাপে এইভাবেই আমরা এগিয়ে যেতে চাই।”
এদিনের ম্যাচের আগে অভিষেক ব্যানার্জির কোনও বার্তা পেয়েছিলেন? জবাবে আকাশ বলেন,”অবশ্যই, উনি ডায়মন্ডহারবার দল নিয়ে সব সময় ভাবেন। আজ ম্যাচের আগে ফোন করে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন। ভাল লাগছে আমরা জিতেই ফিরছি।”
এদিন ডায়মন্ডহারবার এফসির জন্যই মাঠে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন ছিল। মহমেডানের মূল গেট থেকে ডায়মন্ডহারবার গ্যালারিতে পুলিশ চোখে পড়ার মতো। ম্যাচ শেষে DHFC টিম বাস না ছাড়া পযর্ন্ত পুলিশ মোতায়েন ছিল। এদিকে, প্রিমিয়ারের অন্য ম্যাচে এরিয়ান ৩-২ গোলে হারাল ইস্টার্নরেলকে। সাদার্ন সমিতি ১-০ গোলে হারাল এফসিআইকে।
ইউনাইটেড স্পোর্টস -কালিঘাট এমএস ম্যাচ গোল শূন্যভাবে শেষ হয়।