◆চ্যাম্পিয়ন মালদা দলের সঙ্গে আইএফএ সচিব অনির্বান দত্ত◆
ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন,মালদা : হাওড়া জেলাকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হল মালদা জেলা। WBDSF (ওয়েষ্ট বেঙ্গল ডিস্ট্রিক্ট স্পোর্টস ফেডারেশন) – এর পরিচালনায় তিন বছর পর এই অনূর্ধ্ব-১৫ ফুটবল প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছিল। রবিবার মালদা স্টেডিয়ামে ছিল ফাইনাল। হাওড়াকে ৪-০ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হল মালদা। মালদার হয়ে রনি মন্ডল দুটি এবং বীত শঙ্কর রায় ও পঙ্কজ গায়েন একটি করে গোল করেন।
তবে এই প্রতিযোগিতার শুরু থেকেই বেশি বয়সের ছেলেদের খেলানোর অভিযোগ ওঠা শুরু হয়। বিশেষ করে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা ও হাওড়া জেলা দলের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ ওঠে। ফাইনাল ম্যাচ শুরুর আগেও এই বয়স বিতর্ক উঠে আসে হাওড়া জেলার বিরুদ্ধে। বিতর্ক এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে, হাওড়া নিজেদের দল মাঠে নামাতে চায়নি। তবে পরে কর্তাদের বুঝিয়ে হাওড়াকে মাঠে নামানো হয়।
রবিবার ফাইনাল ম্যাচের আগে দুই দলের ফুটবলারদের জন্ম তারিখ সম্পর্কৃত নথি দেখার পর বেশি বয়সের কারণে হাওড়ার বেশ কিছু ফুটবলারকে মাঠে নামতে নিষেধ করা হয়। ফাইনাল ম্যাচের অবজার্ভার হিসেবে ছিলেন কোচবিহার ডিএসএ-সচিব সুব্রত দত্ত। তিনি ফুটবলারদের যাবতীয় নথি দেখার পর হাওড়া দলের কয়েকজন ফুটবলারদের ম্যাচে খেলার ব্যাপারে আপত্তি জানান।
সঙ্গে সঙ্গে মালদা স্টেডিয়ামে হাওড়া দলের সঙ্গে থাকা কর্তারা যোগাযোগ করেন হাওড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার কর্তাদের সঙ্গে। ফাইনাল ম্যাচ না খেলে দল নিয়ে ফিরে আসার কথা জানিয়ে দেন হাওড়া কর্তারা। চলতে থাকে আয়োজক WBDSF ও হাওড়া কর্তাদের যুক্তি, পাল্টা যুক্তির খেলা। পরে অবশ্য মাঠে নেমে পুরো ম্যাচ খেলে হাওড়া জেলা দল। তবে ম্যাচ শেষে হাওড়া ক্রীড়া সংস্থার সচিব শ্যামল মিত্র প্রচন্ড বিরক্ত হয়ে WBDSF – এর জনৈক এক কর্তাকে টেক্সট করে জানান, ‘তাঁরা আর কখনও WBDSF এর টুর্নামেন্ট খেলবেন না। WBDSF কে তাঁরা মানেন না। তাঁরা শুধু আইএফএকে মানেন। তনুময় বসু থাকলে এমনটা হত না।’
শ্যামল মিত্রর এহেন হোয়াটসঅ্যাপ টেক্সট পড়ে ব্যাথিত এবং বিরক্ত WBDSF কর্তারা।ম্যাচের অবজার্ভার সুব্রত দত্ত আয়োজক কর্তাদের বলছিলেন,’হাওড়ার কর্তারা যা বলছেন আর আমার হাতে ফুটবলারদের যে নথি ছিল তা মিলছিল না। নথি তো অন্য কথা বলছে।’
এই ফাইনাল ম্যাচে বিশেষ অতিথি হিসেবে মালদা স্টেডিয়ামে উপস্থিত ছিলেন আইএফএ সচিব অনির্বান দত্ত। এই ব্যাপারে তিনি বলেন,”আমি,ম্যাচ শেষ হওয়ার দশ মিনিট আগে স্টেডিয়ামে পৌঁছয়। এই ঘটনা সম্পর্কে আমি অবগত নই। না জেনে এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করব না।’ WBDSF এর সচিব দেবব্রত সাহা বলছিলেন,’অবাঞ্চিত ঘটনা না ঘটলেই ভাল হত। দূঃখজনক। সমস্ত জেলা নিয়েই তো WBDSF সংস্থা। তিন বছর পর টুর্নামেন্ট শুরু করলাম। জেলার ফুটবলের স্বার্থে সবাইকে এক হয়ে আমাদের এই সংস্থাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।’
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য,এই বয়স ভিত্তিক ফুটবলে বয়স বিতর্ক সর্বত্র। কলকাতা লিগেও এমন ঘটনা ঘটেছে। আইএফএও এই বয়স ভাঁড়ানো নিয়ে চিন্তিত। আসলে কোনও আইন করে এই বয়স ভাঁড়ানো বন্ধ করাটা মুস্কিল। ক্লাব ও জেলা কর্তাদের মধ্যে সচেতনতা না বাড়লে কোনও স্তরেই বয়স ভিত্তিক ফুটবল টুর্নামেন্ট সুষ্ঠুভাবে করা যাবে না।
এদিকে,এই ফাইনাল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয় ফ্লাড লাইটে। ম্যাচ শেষে হাওড়ার সকল ফুটবলার, সাপোর্ট স্টাফ ছাড়াও ফুটবলারদের অভিভাবকদেরও খাওয়ার ব্যবস্থা করেন মালদা জেলা ক্রীড়া সংস্থার সচিব ও পৌরসভার চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী। তিনি বলেন,”খেলায় জয়-পরাজয় আছে। ভেঙে পড়লে চলবে না। হাওড়া দলের সঙ্গে ফুটবলারদের অভিভাবকরাও এসেছেন। তাঁরা আমাদের অতিথি। ওঁদের যেন কোনও অসম্মান না হয় সেটা দেখাও আমাদের দায়িত্বের মধ্যে পরে।’