পাঠচক্রের ঘরে এলো মামনি আসিয়ানা গ্রুপ

0

ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন : ১৯৫৬ সালের ক্লাব। অর্থাৎ ৬৬ বছরের অখ‍্যাত ক্লাব কলকাতা পাঠচক্র। আজকের ইউনাইটেড স্পোর্টস ক্লাব অলোকেশ কুন্ডুর হাত ধরে যে ভাবে পঞ্চম ডিভিশন থেকে ভারতীয় ফুটবলের একদা সর্বোচ্চ লিগ আই লিগে উত্তরণ ঘটেছিল। সেই অলোকেশ (ময়দানের আলো) বহু বছর ধরে পাঠচক্র ক্লাবকে লালন করে আসছিলেন নীরবে। ধীরে ধীরে এই পাঠচক্র ক্লাব পঞ্চম ডিভিশন থেকে উঠে এসেছে প্রিমিয়ার ডিভিশনের ‘বি’ গ্রুপে। তার জন‍্য অলোকেশের সঙ্গে বিরাট কৃতিত্ত্ব আছে নবাব ভট্টাচার্যের। অলোকেশবাবু ইউনাইটেড ও পাঠচক্র ক্লাবের পুরো দায়িত্ব তুলে দিয়েছেন যোগ‍্য ফুটবল প্রশাসক নবাব ভট্টাচার্যের হাতে। শ‍্যামনগরে দুই ক্লাবের ফুটবলারদের পরিচর্চা ছাড়াও আছে বিভিন্ন বয়স ভিত্তিক দল। ২২ টি জেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে ফুটবলার তুলে এনে গড়ের মাঠে প্রতিষ্ঠা দেওয়ার লক্ষ‍্যে কাজ করে চলেছেন নবাব। বাংলার ফুটবলে আলো-নবাব জুটির চমৎকার সুপরিকল্পনায় ক্রমশ এগিয়ে চলেছে ইউনাইটেড স্পোর্টস ও পাঠচক্র।

নবাভ ভট্টাচার্য্য ও অলোকে কুন্ড ও

তাঁদের ফুটবল নিয়ে আন্তরিক প্রচেষ্টা দেখে পাঠচক্রের সঙ্গে অনেক আগেই যুক্ত হয়েছেন অন‍্যতম ক্রীড়া সংগঠক ও বর্তমানে কল‍্যাণী পুরসভার চেয়ারম‍্যান নীলিমেশ রায় চৌধুরী। আর এই বছর প্রিমিয়ার ডিভিশন শুরুর আগে কলকাতা পাঠচক্র ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত হল ‘মামনি অ‍্যান্ড আশিয়ানা গ্রুপ’। বলা ভাল, পাঠচক্রের ঘরে এল ‘লক্ষ্মী’ মামনি আশিয়ানা। কোনও কোম্পানি প্রিমিয়ার ডিভিশনের ‘বি’ গ্রুপের কোনও ক্লাবকে স্পনসর করতে এগিয়ে আসছে এই ঘটনা বাংলা ফুটবলে ভাল বিজ্ঞাপন। আর এমন ঘটনার সাক্ষী থাকলেন আইএফএ সচিব অনির্বান দত্ত। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা ছিল আইএফএ সভাপতি অজিত ব‍্যানার্জিরও। কিন্তু তাঁর একটা জরুরি বৈঠকে আটকে গেলেও পাঠচক্রকে আগাম শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

বক্তব‍্য রাখছেন পাঠচক্রর সভাপতি নীলিমেশ রায় চৌধুরি

মঙ্গলবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে পাঠচক্রের (স্পনসর ঘোষণা ও জার্সি উন্মোচন) অনুষ্ঠানে অনির্বান দত্ত ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পাঠচক্রের সভাপতি নীলিমেশ রায় চৌধুরী, ফুটবল কোচ সঞ্জয় সেন, পাঠচক্রের কোচ লালকমল ভৌমিক, ইউনাইটেড স্পোর্টসের কোচ স্টিভ লিওন হার্বটস, প্রাক্তন ভারতীয় ফুটবলার কুন্তলা ঘোষদস্তিদার এবং অবশ‍্যই ‘মামনি অ‍্যান্ড আশিয়ানা গ্রুপ’-এর ডিরেক্টর শেখ নাসিম আখতার।

নাসিম আখতার হঠাৎ কেন ফুটবলে এলেন? জবাবে ‘মামনি অ‍্যান্ড আশিয়ানা গ্রুপৈর কর্ণধির শেখ নাসিম আখতার বলছিলেন,”আমি পূর্ব মেদিনীপুরের ছেলে। বাবার ব‍্যবসা নিয়ে থাকি। অতীতে বহু বড় ফুটবল টূর্নামেন্টের সঙ্গে থেকেছি। ফুটবল আমার কাছে একটা ভাল লাগার জায়গা। আমি দেখলাম শুধু টুর্নামেন্টের সঙ্গে থেকে ফুটবলারদের লাভ হচ্ছে না। আমার বহুদিনের ইচ্ছে জেলার ফুটবলারদের বড় মঞ্চ দিতে না পারলে সন্তুটি হচ্ছিল না। কিছু একটা করতে চাইছিলাম। আমি খবর নিয়ে দেখলাম নবাবদা, আলোদারা জেলার ফুটবল নিয়ে খুব ভাল কাজ করছেন। তাঁদের সঙ্গে কাজ করতে পারলে আমার ভাল লাগবে। সেই ভাবনা থেকেই পাঠচক্রের সঙ্গে যুক্ত হলাম। আমাদের লক্ষ‍্য প্রিমিয়ার ‘এ’ ডিভিশনে ওঠা।”

বক্তব‍্য রাখছেন মামনি অ‍্যান্ড আশিয়ানা গ্রুপের কর্ণধার শেখ আনিস আখতার

পাঠচক্র ক্লাবের সভাপতি নীলিমেশ রায় চৌধুরী জানান,”ফুটবলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে পৃষ্ঠপোষকের খুব প্রয়োজন। এই করোনা কালে সব ক্ষেত্রেই বিরাট ক্ষতি হয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় ‘মামনি অ‍্যান্ড আশিয়ানা গ্রুপ’ যেভাবে এগিয়ে এসেছে তার জন‍্য কোনও প্রশংসা যথেষ্ট নয়।” ইউনাইটেড স্পোর্টস ও পাঠচক্রের অন‍্যতম ডিরেক্টর নবাব ভট্টাচার্য বলছিলেন,”মামনি অ‍্যান্ড আশিয়ানা গ্রুপের কর্ণধার শেখ নাসিম আখতার যে ভাবে আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন তাতে আমরা মুগ্ধ হয়েছি। এভাবে যদি ছোট-বড় কোম্পানি বিভিন্ন ক্লাবের পাশে এসে দাঁড়ায় তাহলে বাংলার ফুটবলটা বদলে যাবে।”

আইএফএ সচিব অনির্বান দত্ত বলেন, “মামনি অ‍্যান্ড আশিয়ানা যে ভাবে ফুটবলের জন‍্য এগিয়ে এসেছেন তা প্রশংসনীয়। আপনাদের মত মানুষ যত এগিয়ে আসবে বাংলার ফুটবল ততই এগিয়ে যাবে।” সঞ্জয় সেন বলেন, “একটা সময় নবাব, আলোর দলের দায়িত্বে ছিলাম। ওরা ফুটবলের জন‍্য সত‍্যিই ভাল কিছু করতে চায়। ভবিষ্যতে আমার দিক দিয়ে যা সাহায‍্য লাগবে আমি তৈরি আছি”। ইউনাইটেড স্পোর্টসের ডিরেক্টর নবাব ভট্টাচার্য বলেন,” পাঠচক্র হল ইউনাইটেডের রিজার্ভ বেঞ্চ। আমরা ২০১৩ সালে স্পনসর হারিয়েছিলাম। তারপর এগিয়ে এল শেখ নাসিম আখতার। তিনিও ফুটবল অন্ত প্রাণ। তাঁকে অসংখ‍্য ধন‍্যবাদ।”

এদিন স্পনসর ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে পাঠচক্রের জার্সি উন্মোচনও করা হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here