ময়দানের একঝাঁক কর্তাদের উপস্থিতিতে সংবর্ধিত কন‍্যাশ্রী চ‍্যাম্পিয়ন শ্রীভূমির ফুটবলাররা

0

ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন : দুই দিন হল মকর সংক্রান্তি চলে গিয়েছে। তবু মধ‍্য জানুয়ারিতে যেন “দুয়ারে দার্জিলিং।” ময়দানের সন্ধ‍্যা মানেই হাড় কাঁপানো ঠান্ডা। সেই ঠান্ডা উপেক্ষা করেই বুধবার সন্ধ‍্যায় এবারের কন‍্যাশ্রী কাপ জয়ী শ্রীভূমি ফুটবলারদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে হাজির ময়দানের সিংভাগ কর্তারা। উপচে পরা ভিড়। ময়দানের এয়ারলাইন্স তাঁবু হাত বদল হওয়ার পর শ্রীভূমি ফুটবল কর্তারা বেশ কিছু অনুষ্ঠান করেছেন। কিন্তু বুধবারের এই অনুষ্ঠান তাঁদের অতীত অনুষ্ঠানকে ছাপিয়ে গেল। এমন এক সফল উপস্থিতির সংবর্ধনা অনুষ্ঠান আয়জনের জন‍্য একশোয় দুশো নম্বর পাওয়ার দাবি রাখেন শ্রীভূমি ফুটবল ক্লাবের সচিব মুন ওরফে রাকেশ ঝাঁ।

কন‍্যাশ্রী কাপ জয়ী কন‍্যাদের বরন করতে কে আসেননি! সন্ধ‍্যায় ফ্লাইট থাকায় অনুষ্ঠান শুরুর আগেই চলে এসেছিলেন আইএফএ-এর চেয়ারম্যান সুব্রত দত্ত। ঘন্টা খানেক থেকে,ফুটবলারদের উৎসাহিত করেই সুব্রতবাবু ছুটলেন এয়ারপোর্টের দিকে। তিনি শ্রীভূমির তাঁবু ছাড়ার মুহূর্তে প্রবেশ করলেন দমকল মন্ত্রী এবং শ্রীভূমি ফুটবল ক্লাবের সভাপতি সুজিত বসু। তারপর একে একে পৌঁছে গেলেন আইএফএ-এর সভাপতি অজিত ব‍্যানার্জি, সচিব অনির্বান দত্ত, সহসচিব সুফল গিরি, শুভাশিস সরকার, নজরুল ইসলাম। মোহনবাগানের সচিব দেবাশিস দত্ত, মহমেডানের কামারউদ্দিন, প্রাক্তন ফুটবলার অমিত ভদ্র থেকে আইএফএ-এর প্রাক্তন সচিব জয়দীপ মুখার্জি,কোচ রঞ্জন ভট্টাচার্য। নিজের প্রথম বিবাহ বার্ষিকী দিনেও শ্রীভূমির মহিলা ফুটবলারদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে হাজির জর্জের অধিরাজ দত্ত। অসুস্থ শরীর নিয়ে আসেন রঘু নন্দী। এই শীতেও শ‍্যামনগর থেকে স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি ইউনাইটেড স্পোর্টসের নবাব ভট্টাচার্যর। ছিলেন ময়দানের প্রবীন কর্তা শঙ্কর দাস থেকে রবীন ঘোষ সহ ময়দানের ছোট,বড় ক্লাবের একাধিক কর্তা। অতিথিদের স্বাগত জানাতে শ্রীভূমি ফুটবল ক্লাব তাঁবুর গেটে সারাক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলেন ময়দানের আলো (অলোকেশ কুন্ডু)। ময়দানের ভয়ঙ্কর রাজনীতি উপেক্ষা করেও শ্রীভূমির ফুটবলার সংবর্ধনা অনুষ্ঠান এদিন এক ছাদের তলায় সবাইকে সামিল করল। যা গড়ের মাঠে, বাংলা ফুটবলে ফিল গুডের হাওয়া।

চ‍্যাম্পিয়ন ফুটবলারদের স্মারক, স্পোর্টস শু,ব‍্যাগ দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়। কোচ সুজাতা করকেও বিশেষ ভাবে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। তিনিই একমাত্র মহিলা কোচ যিনি পরপর দুই বছর কন‍্যাশ্রী কাপ জিতলেন (ইস্টবেঙ্গল ও শ্রীভূমি ফুটবল ক্লাব)। পাশাপাশি তিনি এবছর খেলো ইন্ডিয়ার বাংলা দলেরও কোচের দায়িত্ব পেয়েছেন।

সুজিত বসু বলেন,”আমি এই ক্লাবের সভাপতি ঠিকই কিন্তু ফুটবলের যাবতীয় ব‍্যাপার গুলো সব মুন (রাকেশ ঝাঁ) দেখে। পুরুষ ও মহিলা দল নিজের মতো করে গড়েছে। পুরুষ দল এবার প্রিমিয়ারে ওঠার সুযোগ পায়নি। সামনের বছর আবার লড়াই করতে হবে। মেয়েদের টিম কন‍্যাশ্রী কাপ জিতেছে। এবার আমাদের মেয়েরা IWL খেলবে। আমরা সব সময় ফুটবলারদের পাশে আছি,থাকবো।”
আইএফএ -চেয়ারম‍্যান সুব্রত দত্ত প্রশংসা করেন ক্রীড়া সংগঠক সুজি বসুর। অজিত ব‍্যানার্জি ও অনির্বান দত্ত মহিলা ফুটবলারদের আরও প্রসার ও প্রচারের আশা নিয়ে স্বপ্ন দেখার কথা বললেন। পাশাপাশি সুজিত বসু ও রাকেশ ঝাঁকে প্রশংসায় ভরিয়ে দিলেন ওঁরা।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ময়দানের তিন প্রধান ক্লাব বাদ দিলে, ফুটবলারদের যে সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকে তা হল ভবানীপুর ক্লাব এবং শ্রীভূমি ফুটবল ক্লাব। ফুটবলারদের পেমেন্ট, থাকা,খাওয়া সব কিছুই তাক লাগানোর মতো। এবারের কন‍্যাশ্রী কাপের দল গড়ার জন‍্য কোচ সুজাতা কর যা যা চেয়েছেন সুজিত বসু, রাকেশ ঝাঁ তাই দিয়েছেন। বিশেষ করে সচিব রাকেশ ঝাঁ নিজেদের ফুটবল দল নিয়ে পাগলের মতো পরিশ্রম করেছেন।

এদিনও অনুষ্ঠানের পুরো সময় ধরে অতিথিদের আপ‍্যায়নে কোনও ত্রুটি রাখেননি মুন। অনুষ্ঠান শেষে শ্রীভূমি ফুটবল ক্লাব তাঁবুর নিজের ঘরের চেয়ারে ক্লান্ত শরীরটাকে এলিয়ে দিয়েছেন। অনুষ্ঠান তো সুপার হিট! কথাটা বলতেই মুন ওরফে রাকেশের জবাব,”আমাদের ফুটবলারদের সম্মান জানাতে ময়দানের সকলেই এসেছেন। এর থেকে ভাল কিছু হয় না। আমরা ওঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। তাঁদের এই উপস্থিতি আমাদের ফুটবলারদের আরও বেশি করে উৎসাহিত করবে।”

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here