ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন : কলকাতা লিগের ডার্বি ম্যাচকে কেন্দ্র করে আইএফএ সচিব ও মোহনবাগান সচিব দুই মেরুতে অবস্থান করছেন। মুখে তাঁরা ‘সৌজন্য’-এর কথা বলছেন ঠিকই কিন্তু বাস্তবে দুই দত্ত আছেন দুই মেরুতেই। এটা বোঝার জন্য বিশেষজ্ঞ হতে হবে না।
যদিও মঙ্গলবার বিকেলে কলকাতা ক্রীড়া সাংবাদিক ক্লাবের ৬৯ তম প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠান শুরুর আগে হঠাৎ মুখোমুখি আইএফএ সচিব অনির্বান দত্ত এবং মোহনবাগান সচিব দেবাশিস দত্ত। CSJC-এর লনে তখন বসে আছেন মহমেডান সচিব ইসতিয়াক আহমেদ,আইএফএ-এর বর্তমান ও প্রাক্তন দুই সচিব অনির্বান দত্ত ও জয়দীপ মুখার্জি। ঠিক তখনই লনে পৌঁছন মোহনবাগান সচিব দেবাশিস দত্ত। অনির্বানের পাশে বসার আগে দুজনেই করমর্দন করলেন। উপস্থিত মিডিয়ার প্রতিনিধিরা ধরেই নিলেন দুই দত্তর আড়ি কেটে ভাব হয়ে গেল। ফুটবলের স্বার্থে দুই দত্তর ভাব হওয়ার দৃশ্য কার না ভাল লাগে। CSJC যেন দুই দত্তকে মিলিয়ে দিলেন। যা বাংলার ফুটবলে ভাল বিজ্ঞাপন।
কিন্তু “পিকচার অভি বাকি হ্যায়” এটা তখন বোঝা যায়নি, ‘কহানির টুইস্ট’ সামনে এলো অনির্বান-দেবাশিসের করমর্দনের আধ ঘন্টা পর। CSJC-এর মূল অনুষ্ঠানে ফুটবল নিয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে দুই দত্ত বুঝিয়ে দিলেন,”দত্ত ভার্সেস দত্ত” বহাল তবিয়তেই আছে। কথার লড়াই,যুক্তির লড়াইয়ে টক্কর দেওয়ার চেষ্টা প্রকট ওঁদের।
বক্তব্য রাখতে গিয়ে দেবাশিস দত্ত বলতে থাকেন,”বাংলার ফুটবল নিয়ে সবাই হাহাকার করছেন। এটা মনে হয় ঠিক নয়। মহমেডান আই লিগে দারুন খেলছে। আইএসএলে মোহনবাগান,ইস্টবেঙ্গল খেলছে। মোহনবাগান আইএসএল,ডুরান্ড চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। সন্তোষ ট্রফিতে বাংলা ব্যর্থ হয়েছে ঠিকই কিন্তু বাংলার ক্লাব তিনটি ভাল রেজাল্ট করছে। এই ক্লাবদের নিয়ে যে বাংলার আবেগ আছে সেই আবেগকে কেউ কমাতে পারবে না।”
দেবাশিস দত্তর বক্তব্যকে খন্ডন করতে গিয়ে আইএফএ সচিব অনির্বান দত্ত তাঁর বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলতে থাকেন,”বাংলার ফুটবলে তিন প্রধানের গুরুত্ব আছে। যেদিন সব বাঙালি ছেলেরা খেলবে। সেই দিন বলব বাংলার ফুটবল সফল।” আসলে অনির্বান দেবাশিসকে পরোক্ষে বুঝিয়ে দিলেন, তাঁরা মুখে বাংলার ফুটবলের কথা বললেও দলে বেশি সংখ্যক বাঙালি ফুটবলারদের নিয়ে খেলেন না। অর্থাৎ ভিন রাজ্য এবং বিদেশি ফুটবলারদের নিয়েই মোহনবাগান সাফল্য পাচ্ছেন। সেই রকমই ইঙ্গিত করলেন অনির্বান দত্ত। সংক্ষিপ্ত বাক্যের মধ্যে তা বুঝিয়ে দিলেন অনির্বান।
অনুষ্ঠান শেষে দুই দত্তর দুরত্ব কি কমল? এই প্রশ্নের উত্তর দেবাশিস বলেন,”দুরত্ব কিসের? ব্যক্তিগত দুরত্ব নেই। এটা তো প্রিন্সিপাল পলিসির ব্যাপার। আমাদের স্ট্যান্ড পয়েন্ট একই আছে।” অনির্বানের গলায় একই সুর। তাঁর কথায়,”আমাদের মধ্যে ব্যক্তিগত ভাবে কোনও লড়াই নেই। ডার্বি ম্যাচ নিয়ে যে মতান্তর হয়েছে সেটা মিডিয়া তুলে ধরেছে। এর বেশি কিছু নয়।” দুই জনের মুখে ‘সৌজন্য’র কথা আর মনে? বুঝে নিতে হবে।
এদিন,CSJC ও সুলেখা যৌথভাবে তিন প্রধান ক্লাবের (মোহনবাগান,ইস্টবেঙ্গল ও মহমেডান স্পোর্টিং ) জার্সির রংয়ের কালি বাজারে আনলেন। ঝর্ণা পেন সঙ্গে সবুজ-মেরুন,লাল-হলুদ এবং সাদা-কালো রংয়ের কালির উদ্বোধন করলেন দেবব্রত সরকার,দেবাশিস দত্ত,ইসতিয়াক আহমেদ। ছিলেন দুই প্রাক্তন ফুটবলার গৌতম সরকার,প্রশান্ত ব্যানার্জি। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আইএফএ-এর বতর্মান ও প্রাক্তন সচিব অনির্বান দত্ত, জয়দীপ মুখার্জি ও সহসভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস।