ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন,২০ মার্চ : মোহনবাগানের আগে ATK নামটা তাঁর ভাল লাগত না। সেই জন্যই একদিন ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে আলোচনায় বসতে বলেছিলেন বলে জানালানেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার দুপুরে আইএসএল চ্যাম্পিয়ন দলের ফুটবলারদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এসে এমনই মন্তব্য করলেন মুখ্যমন্ত্রী।
মোহনবাগান ক্লাবের সবুজ মাঠে অস্থায়ী মঞ্চে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলছিলেন,”মোহনবাগানের আবেগটাই আলাদা। মোহনবাগান হল মোহনবাগানই। তার আগে ATK নামটা ভাল লাগে না। আমি একদিন অরূপকে (অরূপ বিশ্বাস) বললাম,সঞ্জীবদার (সঞ্জীব গোয়েঙ্কা) সঙ্গে আলোচনায় বসে এই নামটা বদলে দেওয়া হোক। এখন আর ATK নামটা নেই।”
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১০ জুলাই মোহনবাগানের সঙ্গে ATK যুক্ত হয়েছিল। তারপর থেকে মোহনবাগান জনতা ধারাবাহিক ভাবে ‘রিমুভ ATK’ আন্দোলন করে গিয়েছেন। পরবর্তীকালে দেবাশিস দত্ত ক্লাবের সচিব হওয়ার পর নতুন কর্ম সমিতি ATK নামটা তুলে নেওয়ার জন্য আবেদন করেছিল। ATK নাম তুলে নেওয়ার পর মোহনবাগান ক্লাবের সহসভাপতি কুনাল ঘোষ সোসাল মিডিয়ায় জানান, তিনিই প্রথম কর্ম সমিতির বৈঠকে ATK নাম তুলে নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। আজ, নিজেদের দৈনিক সংবাদপত্রে নিজের লেখায় টুটু বসুও দাবি করেছেন, ATK নাম তুলে নেওয়ার জন্য তিনি প্রথম থেকেই দাবি জানিয়ে এসেছেন।
কে বা কার দাবিতে এটিকে নামটি সরল? এই প্রশ্নের উত্তরে মোহনবাগান সচিব দেবাশিস দত্ত ‘ইনসাইড স্পোর্টস’কে জানান,”আমরা অর্থাৎ ক্লাবের কর্মসমিতি মনে করেছিলাম, ATK নামটা উঠে যাওয়া উচিত। আমরা সেই দাবি জানিয়েছিলাম। মুখ্যমন্ত্রী ব্যক্তিগতভাবে মোহনবাগানকে ভালবাসেন। তাই তিনিও চেয়েছিলেন ATK নাম সরে যাক। টুটুদাও একইভাবে চেয়েছিলেন মোহনবাগানের আগে ATK উঠে যাক। সবাই নিজের মতো করে ক্লাবের আবেগকে সম্মান দিয়েই নিজেদের ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন। এটাই তো স্বাভাবিক।”
এদিন, আইএসএল জয়ী ফুটবলারদের সংবর্ধনা জানাতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মোহনবাগান ক্লাবকে ৫০ লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়,”আমি গত বছর এখানে এসেছিলাম। মোহনবাগানকে সুন্দরভাবে গড়ে দিয়েছি। বাংলার তিনটি ক্লাবেরই উন্নতির জন্য আমাদের সরকার করেছে। আমি আজ সমর্থকদের মিষ্টি খাওয়ার জন্য ও মোহনবাগান ক্লাবের আরও উন্নতির জন্য রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে আরও ৫০ লক্ষ টাকা দিচ্ছি। আমি,অরূপকে বলব, টাকাটা দিয়ে দেওয়ার জন্য।”
তাঁর পরিবার বরাবর মোহনবাগান ও ফুটবলের সঙ্গে যুক্ত বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলছিলেন,কালীঘাট এমএস ক্লাবের সভাপতি ছিলেন তাঁর বাবা। আবার মোহনবাগানের ম্যাচের দিন সাত সকালে তাঁর মা পুজো দিতে যেতেন। মা,বাবা,দাদাদের থেকেই তাঁর ফুটবল প্রীতি বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
মোহনবাগানের প্রশংসার পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের প্রসঙ্গও উঠে আসে। ইস্টবেঙ্গল ভাল কিছু করতে পারেনি। যখন ওরা শুরু করে তখন অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। সেই ভাবে ভাল দল গড়ার সময় পায়নি। কারণ ওদের আর্থিক সমস্যা ছিল। সঞ্জীব গোয়েঙ্কার তো টাকার অভাব নেই। তাই মোহনবাগান খেলাটা আগেই খেলে দিয়েছে। ওরা নানান ভাবে ক্লাবকে সাহায্য করেছে।”