◆বারপুজোয় মগ্ন শ্রীভূমি ফুটবল ক্লাবের সভাপতি সুজিত বসু ও সচিব রাকেশ (মুন) ঝাঁ। সল্টলেকের এইচবি ব্লকে◆
ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন : ফুটবল মরসুম শুরুর আগের মূহুর্ত। বাংলার নতুন বছরের প্রথম দিনে ফুটবলের শুভ কামনায় কলকাতা গড়ের মাঠ থেকে বিভিন্ন জেলার ফুটবল প্রেমীরা বারপুজোর উৎসবে সামিল হন স্বতঃস্ফূর্তভাবে। এপ্রিলের কাঠফাঠা গরম উপেক্ষা করে সব ভেদাভেদ দুর করে একে অপরকে শুভেচ্ছা বিনিময় হয় শুধু ফুটবলকে ঘিরেই।

এখন তিনি মন্ত্রী। কিন্তু একটা সময় গড়ের মাঠের গোলরক্ষক কোচ পটাদার কাছে ফুটবলের তালিম নিতেন সুজিত বসু। সেই সব অতীতের কথা। আইএফএ-এর বর্তমান সহসচিব রাকেশ (মুন) ঝাঁর শ্রীভূমি ফুটবল ক্লাব আছে। কলকাতা লিগের প্রথম ডিভিশনে খেলে। সেই ক্লাবের সভাপতি হলেন মন্ত্রী সুজিত বসু। এই শ্রীভূমি ফুটবল ক্লাবের সচিব রাকেশ সল্টলেকের এইচবি ব্লকে (সুশ্রুত নার্সিং হোমের পিছনে) একটা মাঠ লিজ নিয়েছেন। আজ সেই মাঠে প্রথম ঘটা করে বারপুজো করলেন রাকেশ ঝাঁ ও সুজিত বসু। পরে তাঁদের এয়ারলাইন্স তাঁবুতেও পুজো হয়।

শতাব্দী প্রাচীন উয়াড়ী ক্লাব তাঁবু কয়েক বছর আগে পুড়ে যায়। গত বছর থেকে নতুন ঝকঝকে তাঁবু বানিয়ে ফের চেনা ছন্দে উয়াড়ী। এই ক্লাবের শীর্ষ কর্তা প্রবীর চক্রবর্তীর নেতৃত্বে সুষ্ঠুভাবে বারপুজো হল। সিএবি ও আইএফএ-এর এক ঝাঁক কর্তা উয়াড়ীর বারপুজোয় সামিল হয়েছিলেন।

খিদিরপুর স্পোর্টিং ক্লাব। একদা ভুতনাথ বিশ্বাসের এই খিদিরপুর ক্লাব থেকে বহু ফুটবলার প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। প্রতি বছরের মতো এবারও প্রয়াত ভুতনাথবাবুর দুই পুত্র সিদ্ধার্থ (বুবুন) ও অমিতাভ (টুলু) বিশ্বাসের ঘটা করে বারপুজো উৎসব করলেন।

এই উৎসবে সামিল হয়েছিলেন আইএফএ সভাপতি অজিত ব্যানার্জি,চেয়ারম্যান সুব্রত দত্ত,সচিব অনির্বান দত্ত থেকে প্রাক্তন ফুটবলার প্রসূন ব্যানার্জি,সিএবির প্রাক্তন সভাপতি অভিষেক ডালমিয়া,বিশ্বরূপ দে সহ ময়দানের ছোট-বড় সব ক্লাবের কর্তারা।

পিছিয়ে ছিল না সদ্য প্রিমিয়ার ‘বি’ গ্রুপে ওঠা ডালহৌসি ক্লাব। এই ক্লাবের কোচের দায়িত্ব নিতে চলেছেন মৃদুল ব্যানার্জি। বারপুজোর অনুষ্ঠানে তিনিও হাজির ছিলেন।

সকাল থেকে বারপুজো করেছে এরিয়ান ক্লাব, মেসারার্স,কাস্টমসও। প্রতিবারের মতো প্রিমিয়ার ডিভিশনে খেলা ভবানীপুরও কোনও অংশে পিছিয়ে ছিল না। এই প্রথম ভবানীপুরের বারপুজোয় উপস্থিত ছিলেন টুটু বসু।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য,প্রাচীন এই ভবানীপুর ক্লাবটি অনেক বছর আগেই অধিগ্রহণ করেছেন বসু পরিবার। এই বছর সেরা দল গড়ার পথে। প্রচন্ড গরমেও অসুস্থ শরীর নিয়ে কয়েক ঘন্টা ভবানীপুরে কাটিয়ে গেলেন টুটু বসু। এসেছিলেন বহু প্রাক্তন ফুটবলারও।

শহর কলকাতার বিভিন্ন ফুটবল কোচিং ক্যাম্পে বারপুজো হয়। যেমন বেহালার শৈলেন মান্না ফুটবল কোচিং ক্যাম্পেও বড় করে বারপুজো করা হয়।

পিছিয়ে নেই জেলার কর্তারাও। আজকের দিনে বিভিন্ন জেলায় ঘটা করে নববর্ষ পালনের সঙ্গে বারপুজো করা হয়।

যেমন উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ শহরের প্রাচীন ক্লাব টাউন ক্লাবে ক্যাম্পের সকল ফুটবলারদের নিয়ে বারপুজো হয়। পাশাপাশি এই শহরে ‘শিশু সদন’ বলে একটি সরকারি অনাথ আশ্রম আছে। সেই আশ্রমে প্রায় ১৫০ জন ছাত্র আছে। তারা নিয়মিত ফুটবল চর্চাও করে।

আজ নববর্ষের শুভদিনে ‘শিশু সদন’ ছেলেদের ফুটবল উন্নয়নের জন্য রায়গঞ্জ টাউন ক্লাবের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধল। ফুটবলের যাবতীয় সরঞ্জাম তুলে দেওয়া হল ‘শিশু সদন’-এর ফুটবলারদে হাতে। সব মিলিয়ে আজ,শুধু নববর্ষ নয়,নতুন মরসুমের ফুটবলের শুভকামনার শপথের দিন।