ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন,১৬ অগাস্ট : ১৯৮০ সালের ১৬ অগাস্ট অভিশপ্ত ডার্বি ম্যাচের শহীদদের মনে করতেই প্রত্যেক বছর এই দিনটাতেই রক্তদান শিবিরের ব্যবস্থা করে আইএফএ। এবার এই দিনটাতে এই শহীদদের উদ্দেশ্যে সারা রাজ্য জুড়ে “খেলা হবে দিবস” পালন করে রাজ্য সরকার। তবে “খেলা হবে দিবসে”-র ফাঁকেও নিজেদের “ফুটবল প্রেমী দিবস” পালন করলেন আইএফএ কর্তারা। সোমবার সকাল থেকেই নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ঘটা করেই এই রক্তদান শিবির করা হয়।

এই অনুষ্ঠানে উল্লেখযোগ্য হল, ফোর্টউইলিয়াম থেকে এসে ২৫ জন সেনা রক্ত দিয়ে গেলেন। ১৯৮১ সাল থেকে এই ১৬ অগাস্টে ফুটবল প্রেমি দিবস পালন করে আসছে। গত ৪০ বছরে কোনও সেনা “ফুটবল প্রেমী দিবসে” কোনও সেনা রক্ত দিয়েছেন এমন তথ্য দিতে পারলেন না ময়দানের অভিজ্ঞ কর্তারাও। প্রথমেই রক্ত দেন পূর্বাঞ্চলীয় সেনা প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল মনোজ পান্ডে। তারপরেই আরও ২৪ জন সেনা রক্ত দিয়ে যান। এমন ঘটনায় উচ্ছ্বসিত আইএফএ কর্তারা।

এদিন “ফুটবল প্রেমী দিবস” আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু করেন রাজ্যের ক্রীড়া মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, ইস্টবেঙ্গলে কর্তা দেবব্রত সরকার,এটিকে মোহনবাগানের ডিরেক্টর দেবাশিস দত্ত, আইএফএ-এর সভাপতি অজিত ব্যানার্জি,চেয়ারম্যান সুব্রত দত্ত ও সচিব জয়দীপ মুখার্জি। ছিলেন বিধায়ক দেবাশিস কুমার,প্রাক্তন ফুটবলার মানস ভট্টাচার্য, টেকনো ইন্ডিয়া গ্রুপের কর্ণধার সত্যমরায় চৌধুরী প্রমূখ।
এদিন “ফুটবল প্রেমী দিবসে” কলকাতাসহ বিভিন্ন জেলায় মোট ৮৭৬ জন রক্তদান করেছেন। কলকাতার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে আইএফএ ও এসোসিয়েশন অফ ভলান্টারী ব্লাড ডোনার্স ওয়েস্ট বেঙ্গলের উদ্যোগে এক শিবিরে ৩৭৩ জন রক্ত দিয়েছেন। রক্তদাতাদের উৎসাহিত করতে রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু,পূর্বাঞ্চলীও সেনাপ্রাধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল মনোজ পান্ডে, আই এফ এ সভাপতি অজিত ব্যানার্জি, বেঙ্গল অলিম্পিক সংস্থার সভাপতি স্বপন ব্যানার্জি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে, রাজ্য সরকারের “খেলা হবে দিবস” উপলক্ষ্যে এদিন যুবভারতীতে ভারতীয় ফুটবল দল ও বাংলা দলের মধ্যে একটি প্রদর্শণী ম্যাচও হয়। এছাড়াও ২৩ জেলা সহ বিভিন্ন পাড়ায়”খেলা হবে দিবস” পালন করা হয়। এই “খেলা হবে দিবস”উপলক্ষ্যে বেহালার বিজয় সংঘের উদ্যোগে গ্রাসরুট ফুটবল অ্যাকাডেমি শুরু হল। উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন ফুটবলার চন্দন ব্যানার্জি, মোহনবাগানের জুনিয়র দলের প্রাক্তন কোচ অমিয় ঘোষ। এদিন নিজের এলাকায় ফুটবল খেলতে দেখা যায় মন্ত্রী সুজিত বসু, ফিরহাদ হাকিমদের।

এদিকে, ইডেনের পাঁচ নম্বর গেটে শহীদদের উদ্দেশ্যে ফুল, মালা দিলেন সিএবির সভাপতি অভিষেক ডালমিয়া। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ১৯৮০ সালের ১৬ অগাস্ট মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল ম্যাচে ইডেনের এই পাঁচ নম্বর গেটের ভিতরের গ্যালারিতেই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছিল। মৃত্যু হয়েছিল ১৬ জন ফুটবল দর্শকের। এই গেটের বাইরের দেওয়ালে মৃত ফুটবল দর্শকদের নাম লেখা আছে। সেখানেই সিএবি কর্তারা শহীদদের শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।