ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন,১৩ জুন : এতদিন ধরে ইস্টবেঙ্গল ও লগ্নিকারী শ্রী সিমেন্টের মধ্যে ‘চিঠিরলড়াই’, ‘শর্তের লড়াই’, ‘সই করা না করার লড়াই’ ময়দান দেখে আসছিল। সবাই দেখে আসছে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে দুই শিবিরের কর্তাদের বিবৃতির লড়াই। শুধু তাই নয়, টার্মসিটে সই না করার জন্য সোসাল মিডিয়ায় ইস্টবেঙ্গল কর্তা দেবব্রত সরকারের সমালোচনা তীব্র আকার ধারণ করেছে। এবার এসবকে ছাপিয়ে, লকডাউনকে উপেক্ষা করে ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের বিরুদ্ধে পথে নামলেন এক ঝাঁক লাল-হলুদ সমর্থক। আর এই বিক্ষোভ সামাল দিতে ঘটনাস্থলে দেখা গেল ইস্টবেঙ্গলের কার্যকরি সমিতির সদস্য বীরেন সাহা ও মাঠ সচিব ভাই ওরফে সরোজ ভট্টাচার্যকে।

রবিবার দুপুরে বেলঘরিয়া স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় এম বি রোড ইস্টবেঙ্গল ফ্যান ক্লাব বিক্ষোভ শুরু করে। হাতে প্ল্যাকার্ড ও দেবব্রত সরকারের কুশপুতুল। ক্ষুব্দ লাল-হলুদ সদস্য সমর্থকদের দাবি লগ্নিকারীদের টার্মসিটে সই করতে হবে। মূখ্যমন্ত্রীর সম্মান রক্ষার্থে সই করে আইএসএলে খেলতে হবে। ইস্টবেঙ্গলের বর্তমান কর্তাদের ক্লাব পরিচালনায় স্বেচ্ছাচারিতা বন্ধ করতে হবে। এমন সব দাবি নিয়ে বেলঘরিয়া স্টেশনের কাছেই বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন ইস্টবেঙ্গল সদস্য-সমর্থকরা।

সূত্রের খবর, বিক্ষোভ চলার সময় ওই পথ দিয়ে নাকি যাচ্ছিলেন ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের কার্যকরি কমিটির সদস্য বীরেন সাহা। তাকে দেখার পর বিক্ষোভকারীরা বীরেন সাহার কাছে তাদের অভিযোগ শোনার জন্য আসতে বলেন। প্রথমে বীরেন রাজি ছিলেন না। পরে বীরেন নাকি ফোন করে ডেকে নেন ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের মাঠ সচিব ভাই ওরফে সরোজ ভট্টাচার্য কে।
জানা যায়, রবিবার দুপুরে বরনগরে এক দরিদ্র নারায়ণ সেবার এক অনুষ্ঠানে ছিলেন সরোজ। তিনি বেশ কিছু ছেলেদের নিয়ে বেলঘরিয়ায় পৌঁছন। বীরেন, সরোজরা বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে একটি দোকানের খোলা বারান্দায় বোঝানোর চেষ্টা করেন যে, এভাবে সই করা মানে ক্লাবকে বিক্রি করে দেওয়ার সামিল। পাল্টা যুক্তি দিয়ে ক্লাব কর্তাদের কর্ম পদ্ধতি নিয়ে বলতে থাকেন ভিক্ষোভকারীরা। দেবব্রত সরকার সই না করে যে যুক্তি দিচ্ছেন তা তারা মানতে চান না। বছরের পর বছর ক্লাবে সাফল্য নেই। ইনভেস্টর চলে গেলে আর কোথায় পাবে? শ্রী সিমেন্ট চলে গেলে এবার আর আইএসএলে খেলতে পারবে না তাদের প্রিয় ক্লাব।

বীরেনরা নাকি বলতে থাকেন, এই ভাবে বিক্ষোভ না করাই ভাল। যদি এটা চলতে থাকে কিছু করার নেই। আলোচনার সময় বিক্ষোভকারীদের হাতে ছিল ইস্টবেঙ্গল কর্তা দেবব্রত সরকারের কুশপুতুল। দাহ করার জন্যই আনা হয়েছিল। তা দেখে বীরেনরা দেবব্রত সরকারের কুশপুতুল না পোড়ানোর অনুরোধ করেন। এক বয়স্ক কর্তাও একই অনুরোধ করেন। কিন্তু ওই সময় প্রবল বৃষ্টি শুরু হওয়ায় দেবব্রতর কুশপুত্তলিকা আর দাহ করা হয়নি। তবে বেলঘরিয়ার এম বি রোডের ইস্টবেঙ্গল ফ্যান ক্লাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ক্লাব কর্তাদের স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে তাদের বিক্ষোভ চলতে থাকবে। লকডাউন উঠে গেলে বিভিন্ন এলাকার ইস্টবেঙ্গল ফ্যান ক্লাবের সদস্যরা পথে নেমে বিক্ষোভ দেখাবে।