৭ বছর পর শিলিগুড়ির কাঞ্চনজঙ্ঘায় ন‍্যাশনাল ফুটবলের আসর

0

ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন : ৭ বছর পর শিলিগুড়ির কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে বসেছে সিনিয়র মহিলা ন‍্যাশনাল ফুটবল চ‍্যাম্পিয়নশিপের আসর। গ্রুপ ‘এইচ’ – এর মিজোরাম, তেলেঙ্গানা ও ঝাড়খন্ড এই তিনটি দল শিলিগুড়িতে অংশ নিচ্ছে। গত ১৯ অক্টোবর শুরু হয়েছে। গত ২০১৬ সালে শেষ বারের মতো শিলিগুড়িত হয়েছিল মহিলাদের সাফ গেমস। সেই বছরই হয়েছিল কলকাতা লিগের মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল ম‍্যাচ। তারপর আর কোনও ভাল ম‍্যাচ হয়নি।

অতীতে এই শিলিগুড়িতে হয়েছে নেহেরু কাপ, ফেডারেশন কাপ, জাতীয় লিগ, কলকাতা লিগের ডার্বি ম‍্যাচ। ন‍্যাশনাল টুর্নামেন্টও হয়েছে। নেহেরু কাপের পর থেকে শিলিগুড়ি সহ উত্তরবঙ্গে ফুটবলের উন্মাদনা ছিল চোখে পড়ার মতো। সেই সময় শুধু স্বীকৃত টুর্নামেন্ট নয়,শিলিগুড়ি সহ প্রান্তিক এলাকায় বিভিন্ন ফুটবল টুর্নামেন্ট হত পুজোর ঠিক আগে। কলকাতা লিগ শেষ করেই ঝাঁকে ঝাঁকে কলকাতার ফুটবলাররা সেই সব টুর্নামেন্ট (তাঁদের কাছে খেপ ফুটবল) খেলতে যেতেন। লিগ শেষ করে উত্তরবঙ্গ যাওয়ার জন‍্য অপেক্ষা করে থাকতেন কলকাতার ফুটবলাররা। আর খেপ খেলার পারিশ্রমিক নিয়ে শিলিগুড়ির হংকং মার্কেট থেকে পুজোর বাজার করে কলকাতা শহরে ফিরতেন ফুটবলাররা। ফুটবলারদের কাছে এই টুর্নামেন্ট গুলি ছিল বাড়তি টাকা উপার্জনের পথ।

সেই সব দিন এখন ইতিহাস। পরবর্তীকালে যতদিন গিয়েছে ততই শিলিগুড়িতে ফুটবলের উন্মাদনা কমতে কমতে তলানিতে এসে ঠেকেছে। আইএফএ-এর অন‍্যতম সেরা সচিব প্রদ‍্যুৎ দত্ত লড়াই করে শিলিগুড়িতে স্বপ্নের কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়াম করেছিলেন। নেহেরু কাপ আয়োজন করেছিলেন। এখন সেই স্বপ্নের কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়াম দুঃস্বপ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। অশোক ভট্টাচার্য থেকে গৌতম দেব যারাই মন্ত্রী হয়েছেন তাঁরা এই স্টেডিয়ামকে দিনের পর দিন অবহেলা করেছেন। তাঁরা “ভাষনে আছেন, রেশন নেই।” এখন তো কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়াম শিলিগুড়ির মিউনিসিপ‍্যালিটির অধীনে। মেয়র গৌতম দেব। স্টেডিয়াম নিয়ে প্রশ্ন করলেই গৌতমবাবু সংস্করণের কথা বলেন। দেড় বছর আগে ‘ইনসাইড স্পোর্টস’ কে এক সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে বলেছিলেন খুব শীঘ্রই কাজ শুরু করবেন। এই কদিন আগে ন‍্যাশনাল শুরু হওয়ার আগে বলেছেন, এএফসির গাইড লাইন মেনে স্টেডিয়ামের সংস্করণ হবে। সবে কাজ শুরু হয়েছে। শেষ কবে হবে জানা নেই। বরং শিলিগুড়িতে ফুটবলকে পিছনে ফেলে এক নম্বর খেলায় পরিণত হয়েছে ক্রিকেট। ক্রিকেটের উন্মাদনা থাকলেও মাঠ নেই। সেটাও বড় সমস‍্যা। যাদের প্রশাসনিক ক্ষমতা আছে তাঁরা ভাবেন না। কিন্তু শিলিগুড়িতে ক্রিকেট আছে স্বমহিমায়, পান পরাগের সংস্কৃতিকে নিয়েই।

মহিলাদের ন‍্যাশনালের আসর দেখতে শিলিগুড়িতে হাজির হয়েছিলেন আইএফএ সচিব অনির্বান দত্ত। তিনি জানান, মূল মাঠ ভাল আছে। ড্রেসিংরুম ও রেফারিদের রুম আর একটু ঠিক করতে হবে। আমরাও চাই শিলিগুড়ির মতো জায়গায় জাতীয় স্তরের ফুটবল টুর্নামেন্ট হোক। তাহলে এই এলাকার ফুটবল প্রেমীরা আবার মাঠ মুখী হবে।”
শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া পরিষদের সচিব কুন্তল গোস্বামী সহ কমিটি সদস‍্যদের ফুটবলের উন্মাদনাকে ফিরিয়ে আনতে যেন প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। কাজ করার চেষ্টা করছেন। যেমন এই চলতি টুর্নামেন্টের ম‍্যাচ গুলি করা হচ্ছে সন্ধ‍্যায়, ফ্লাড লাইটে। গ‍্যালারি ভর্তি না হলেও কিছু দর্শক মাঠে আসছেন। মিজোরামের দর্শকরা ড্রাম নিয়ে মাঠে আসছেন। এটা ইতিবাচক দিক। বাংলা দল এখানে খেললে দর্শক সংখ‍্যা আরও বাড়তো। SMKP (শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ) এর সচিব কুন্তল গোস্বামী বলছিলেন,” মাঠে লোক আসছে। আসলে দীর্ঘদিন কোনও জাতীয় স্তরের ম‍্যাচ হয়নি। এই ধরনের ভাল টুর্নামেন্ট পেলে আমাদের ফুটবল প্রেমীরা আবার মাঠে আসবেন। এই ধরনের ভাল টুর্নামেন্ট পেলে আমাদের ফুটবল উপকৃত হবে। এটা আমরা আইএফএ সচিব অনির্বান দত্তকে বলেছি। তিনিও আস্বস্থ করেছেন।”

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here