ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন : চার বলে ওভার ঘোষণা করার অপরাধে দুই আম্পায়ার সহ অবজার্ভারকে দুই মাসের জন্য নির্বাসনে পাঠাল সিএবির টুর্নামেন্ট কমিটি। এই দুই আম্পায়ার হলেন স্বস্তিক দত্ত চৌধুরী, দেবতোষ মুস্তাফি। আর অবজার্ভার হলেন দীপ্তেন্দু মাহাতো। প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার জে সি মুখার্জি ট্রফিতে রেঞ্জার্স মাঠে মুখোমুখি হয়েছিল কুমোরটুলি ও টালিগঞ্জ অগ্রগামী। ওই ম্যাচে কুমোরটুলি করে ১৭০ রান। জবাবে ব্যাট করতে নেমে টালিগঞ্জ জয়ের কাছাকাছি পৌঁছেও যায়। কিন্তু ১৯ তম ওভারে দুটি কম বল খেলিয়ে অর্থাৎ চার বলে ওভার ঘোষণা করেন আম্পায়ার। মাত্র দুই রানে হেরে যায় টালিগঞ্জ। প্রসঙ্গত, এই খবর সামনে আনে ‘ইনসাইড স্পোর্টস’। পরে সিএবিতে অভিযোগ করলে গতকাল (শুক্রবার) বৈঠক করে দুই আম্পায়ার ও ম্যাচ অবজার্ভারকে দুই মাসের জন্য নির্বাসনে পাঠায়।
এর পরেও সিএবির এই সিদ্ধান্ত নিয়েও উঠছে একাধিক প্রশ্ন।
১) দুই আম্পায়ার ও ম্যাচ অবজার্ভার শাস্তি পেলেন তাহলে তৃতীয় আম্পায়ার (সুবীর ব্যানার্জি) এবং দুই স্কোরার শুভম মন্ডল ও অতনু জানার শাস্তি কেন হবে না?
২) সিএবি শাস্তি দিয়ে প্রমাণ করে দিল যে, চার বলেই ওভার ঘোষণা করা হয়েছে। একই অপরাধে যুক্ত তৃতীয় আম্পায়ার ও দুই স্কোরারও। তৃতীয় আম্পায়ার ও অবজার্ভার ম্যাচে পাশাপাশি বসে থাকলেন, সব কিছুই দেখলেন অথচ পার পেয়ে গেলেন তৃতীয় আম্পায়ার!
৩) অভিযোগ, ওই ম্যাচের ১৯ তম ওভারে কত বল বাকি আছে জানতে চেয়ে স্কোরারের কাছে আম্পায়ার জিজ্ঞাসা করার পর নাকি ওই বির্তকিত ওভার ঘোষণা করেছিলেন। তাছাড়া এতবড় কেলেঙ্কারিকে মান্যতা দিয়ে সিএবি আম্পায়ারদের নির্বাসনে পাঠাচ্ছে তখন স্কোরারদের কোনও শাস্তিই দেওয়া হল না? এ এ কেমন বিচার সিএবির? প্রশ্ন উঠছে।
৪) প্রশ্ন উঠছে সিএবির দ্বারা নিযুক্ত ক্রিকেটীয় অ্যাপ ‘ক্রিক হিরোস’নিয়েও। এই অ্যাপে সিএবির সমস্ত টুর্নামেন্টের লাইভ আপডেট তথ্য পাওয়া যায়। এটা ভাল উদ্যোগ। কিন্তু সেই অ্যাপে আবার বিতর্কিত কুমোরটুলি – টালিগঞ্জ ম্যাচের স্কোর কার্ডে ২০ ওভারের তথ্য স্পষ্ট উল্লেখ আছে (টালিগঞ্জ -১৬৮/১০ (২০ ওভার)। তাহলে কোনটা ঠিক? সিএবি’র টুর্নামেন্টে কমিটি নাকি ‘ক্রিক হিরোস’? চার বলে ওভার করাটাকে মান্যতা দিয়ে সিএবি আম্পায়রদের নির্বাসনে পাঠাচ্ছে। আর ‘ক্রিক হিরোস’ অ্যাপে আছে সম্পূর্ণ খেলার বিবরণ। তাহলে তো তথ্য বিকৃতি করে আপলোড করেছে এই অ্যাপ? স্বাভাবিক ভাবেই এই অ্যাপের গ্রহণযোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে।
৫) গতকাল আম্পায়ার, অবজার্ভারদের শাস্তি দেওয়া হল। অথচ টালিগঞ্জ অগ্রগামী কোনও পয়েন্ট দেওয়া হল না। হাস্যকার সিদ্ধান্ত।
সিএবি’র আম্পায়ার্স কমিটির চেয়ারম্যান বালু ওরফে প্রশেনজিৎ ব্যানার্জির ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। তিনি প্রাক্তন আম্পায়ার। অতীতে কুমোরটুলিতে ক্রিকেট কোচিংও করেছেন। আর তিনি এই কুমোরটুলি ক্লাবের অন্যতম কর্তাও। প্রশ্ন উঠছে, টালিগঞ্জের বিরুদ্ধে কুমোরটুলিকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ প্রশেনজিৎবাবুর বিরুদ্ধে উঠছে। একটি সূত্র জানাচ্ছে, এমন ঘটনায় প্রশেনজিৎ ব্যানার্জি প্রচন্ড বিরক্ত। যদি বিরক্তই হন তাহলে কি তিনি আম্পায়ার্স কমিটির চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করবেন? এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তা জানা যায়নি।