◆নবাব কাপের উদ্বোধনী ম্যাচ শুরুর আগের মুহুর্ত। রবিবার লালবাগের আস্তাবলের মাঠে◆
ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন,১২ ফেব্রুয়ারি : তিন বছর পর আবার শুরু হল মুর্শিদাবাদ জেলার ঐতিহ্যবাহী নবাব কাপ। স্বাভাবিক ভাবেই স্থানীয় এলাকায় এই নবাব কাপ ঘিরে উন্মাদনার সৃষ্টি হয়েছে। এই জেলায় নবাব কাপ ছাড়াও হুইলার শিল্ড ও বীনাপানি ফুটবল টুর্নামেন্ট ছিল বিখ্যাত। অতীতে পিকে-চুনী সহ বিখ্যাত ফুটবলাররা এই মুর্শিদাবাদের টুর্নামেন্টে খেলে গিয়েছেন। হুইলার ও বীনাপানি বহু বছর আগেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু বান্ধব সমিতির কর্তারা নানান সমস্যা কাটিয়ে এখনও জেলার ঐতিহ্যবাহী নবাব কাপ চালু রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ১৯০২ (মতান্তরে ১৯১৬) মুর্শিদাবাদের লালবাগ শহরে শুরু হয়েছিল এই নবাব কাপ। ট্রফিটা পুরোটাই রুপোর তৈরি। জনপ্রিয় এই নবাব কাপ শুর করেছিলেন মীরজাফরের বংশধর নবাব ওয়াসেফ আলি মির্জা। তিনি যখন ইংল্যান্ডে পড়াশোনা করছিলেন সেই সময় ইংল্যান্ডের রানী নবাবের নৈপুন্যে খুশি হয়ে এই রূপোর ট্রফিটি উপহার হিসেবে দিয়েছিলেন। যার একদিকে ব্রিটিশ প্রতীক খোদায় করা আছে। দেশে ফিরে নবাব ওয়াসেফ আলি ট্রফিটির অপর প্রান্তে নবাবের বাসস্থান ‘ওয়াসেফ মঞ্জিল’ -এর প্রতীক খোদায় করেন। তারপর লালবাগ শহরের আস্তাবল মাঠে ‘নবাব কাপ’ নামে ফুটবল টুর্নামেন্ট শুরু করেছিলেন।
স্বাধীনতার আগে ব্রিটিশ দলগুলি এই নবাব কাপে অংশ নিত। ১৯৪৬ সালে নবাব ওয়াসেফ আলি মির্জা এই নবাব কাপের দায়িত্ব তুলে দিয়েছিলেন লালবাগ শহরের প্রাচীন ক্লাব বান্ধব সমিতির হাতে। এই বান্ধব সমিতির প্রতিষ্ঠা হয়েছিল ১৯১৯ সালে। এই নবাব কাপ ২০১৪ সালে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ২০১৯ সালে ফের শুরু হয়। কিন্তু কোভিডের কারণে তিন বছর এই টুর্নামেন্ট করা যায়নি। সব বাধা কাটিয়ে এই বছর আবার শুরু হল মুর্শিদাবাদের ঐতিহ্যবাহী নবাব কাপ।
আজ, রবিবার মুর্শিদাবাদ জেলার লালবাগ শহরের আস্তাবলের মাঠে উদ্বোধনী ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল মুর্শিদাবাদ জেলা লিগ চ্যাম্পিয়ন হিন্দ ক্লাব ও কলকাতার বিধাননগর মিউনিসিপ্যালিটি স্পোর্টস অ্যাকাডেমি। পুরো ম্যাচে দাপটের সঙ্গে খেলেও একাধিক গোল নষ্টের কারণেই হেরে মাঠ ছাড়তে হল হিন্দ ক্লাবের দলটিকে।
এবারেরর নবাব কাপে মোট আটটি দল অংশ নিচ্ছে। মুর্শিদাবাদের একমাত্র হিন্দ ক্লাবকে টুর্নামেন্টে নেওয়া হয়েছে। বাকি সব কলকাতা, শ্যামনগর, অশোকনগর, সিঙ্গুর থেকে দল অংশ নিচ্ছে। তাদের মধ্যে কলকাতা প্রিমিয়ার ডিভিশনের ইউনাইটেড স্পোর্টস, শতাব্দী প্রাচীন ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিং এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বেঙ্গল ফুটবল অ্যাকাডেমি উল্লেখযোগ্য। ফাইনাল আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি।