ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন :
বাংলার ফুটবলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য তৃণমূল স্তরকেই বেশি করে গুরুত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। সেই ভাবনাকে বাস্তবায়িত করতে জেলা থেকে প্রতিভাবান ফুটবলার তুলে আনার উপর জোর দিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের বেঙ্গল ফুটবল অ্যাকাডেমি।
এবার ২২ জেলা থেকে ফুটবলার এনে বাছাই করার কাজ শুরু করে দিলেন বেঙ্গল ফুটবল অ্যাকাডেমির চিফ কোচ অনন্ত ঘোষ। আজ, সোমবার থেকে অনূর্ধ্ব-১৫ ফুটবলারদের নিয়ে সল্টলেকে শুরু হয়েছে ট্রায়াল। বিভিন্ন জেলা থেকে আসা ফুটবলারদের ট্রায়াল নেওয়া হচ্ছে। সাতদিন ধরে এই ট্রায়াল চলবে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য,বেঙ্গল ফুটবল অ্যাকাডেমি শুরু হওয়ার পর তৎকালীন কোচ গৌতম সরকার,প্রশান্ত ব্যানার্জি, দেবাশিস মুখার্জিরা যা ভাবতে পারেননি অথবা উদ্যোগী হতে পারেননি সেটাই আন্তরিক ভাবে করার চেষ্টা করছেন কোচ অনন্ত ঘোষ। তিনি একটা সময় সাইয়ের কোচ ছিলেন। তাঁর হাত ধরেও একটা সময় বহু ফুটবলার উঠে এসেছে। অরূপ বিশ্বাস ক্রীড়ামন্ত্রী হওয়ার পর ব্যর্থ কোচ গৌতম সরকারদের সরিয়ে অনন্ত ঘোষকেই কোচ হিসেবে নিয়োগ করেন। ছোটদের নিয়ে কাজ করার ক্ষেত্রে জহর দাস ও অনন্ত ঘোষই এই মূহুর্তে বাংলার উজ্জ্বল নাম। অবশ্য রাজ্য ফুটবল অ্যাকাডেমিকে ভাল জায়গায় নিয়ে যাওয়ার জন্য কোচ অনন্ত ঘোষকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছেন ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস।
৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার মধ্যেও প্রথম দিনেই জেলা থেকে বহু ফুটবলার সল্ট লেকে এসে ট্রায়াল দিচ্ছে। প্রসঙ্গত, এই ট্রায়ালের জন্য প্রত্যেক জেলার ক্রীড়া সংস্থাকে এই ট্রায়ালের ব্যাপারে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এই ট্রায়ালে যোগ দিতে গেলে জেলা ক্রীড়া সংস্থার মাধ্যমেই আসতে হবে। যে সমস্ত ফুটবলার ট্রায়ালে আসছে তাদের যুবভারতীর ডরমেটারিতে থাকা,খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এই ট্রায়াল নিয়ে বেঙ্গল ফুটবল অ্যাকাডেমির চিফ কোচ অনন্ত ঘোষ ‘ইনসাইড স্পোর্টস’কে জানান,” জেলা থেকে ফুটবলার তুলে আনার জন্য রাজ্য সরকার আমাদের সাতদিন ট্রায়ালের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। আমাদের আপাতত লক্ষ্য হল,২ হাজার ফুটবলারের ট্রায়াল নেওয়া। এই দুই হাজার থেকে ১৫০ জনকে বেছে নেওয়া হবে। তারপর এই দেড়শো জনের মধ্যে চূড়ান্ত ৪০জনকে বেছে নেওয়া হবে। আমাদের আরও অনেক পরিকল্পনা আছে। ক্রীড়ামন্ত্রী থেকে ক্রীড়া দফতরের অ্যাডভাইসরি কমিটি মেম্বাররা দারুন ভাবে আমাদের সহযোগিতা করছেন।”
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য,এই সাতদিনের ট্রায়াল ভিডিও করে রাখা হচ্ছে। ট্রায়ালের পর সেই ভিডিও দেখে নেবেন অ্যাকাডেমির কোচ থেকে সাপোর্ট স্টাফরা।
করোনার জন্য গত দুই বছর বন্ধ ছিল বেঙ্গল ফুটবল অ্যাকাডেমি। এবার নতুন করে শুরু করতে চলেছে। খড়দহের বিবেকানন্দ স্টেডিয়াম হল বেঙ্গল ফুটবল অ্যাকাডেমির মাঠ। ফুটবলারদের থাকার ব্যবস্থা খুবই উন্নতমানের। এই অ্যাকাডেমিতে সুযোগ পেলে নির্বাচিত ফুটবলাররা থাকা,খাওয়ার সুব্যবস্থা আছে। প্রত্যেক দিন চারবেলা খাওয়ার জন্য ফুটবলার প্রতি ৩৮৫ টাকা করে বরাদ্দ করেছে রাজ্য ক্রীড়া দফতর। সেই সঙ্গে প্রত্যেক ফুটবলারের জন্য ৭৫০ টাকা মাসিক ভাতাও দেওয়া হয়। স্কুলে পড়াশোনার ব্যবস্থা আছে। সন্ধ্যার সময় ফুটবল শিক্ষার্থীদের জন্য প্রাইডেট টিউটরও রাখা হয়েছে। সব মিলিয়ে ফুটবল শিক্ষার্থীদের জন্য সুব্যবস্থা করেছে রাজ্য ক্রীড়া দফতর।