১৫ ক্লাবের আপত্তি! বন্ধ হয়ে গেছে দঃ২৪ পরগনার ফুটবল লিগ

0

◆সন্দীপ দে◆

শুরুতেই শেষ হয়ে গিয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা ফুটবল লিগ। ১৫ টি ক্লাবের আপত্তির কারণে এই বছর জেলা ফুটবল লিগ শেষ করতে পারলেন না দঃ২৪ পরগনা জেলা ক্রীড়া সংস্থার কর্তারা। জানা গেল, অতীতে কোভিডের সময় ছাড়া দঃ২৪ পরগনা জেলা ফুটবল লিগের ইতিহাসে কখনও লিগ বন্ধ হয়নি। যার দায় পড়েছে জেলা ক্রীড়া সংস্থার বর্তমান কমিটির উপর।

পুজোর পর লিগ খেলা সম্ভব নয়। মাঠ ও আর্থিক সমস‍্যাও আছে। তাছাড়া পুজোর পর ফুটবলারদের পাওয়া যায় না। অভিযোগ, ওই সময় নাকি বিভিন্ন জায়গায় ‘খেপ’ খেলতে ব‍্যস্ত হয়ে পড়েন ফুটবলাররা। এই কারণ দেখিয়ে লিগের ‘এ’ ডিভিশনের অংশগ্রহণকারী মাদারহাট এসি, হরিনাভি স্পোর্টিং, BYMA. জয়নগর শান্তি সংঘ সহ ১৫টি ক্লাব লিখিত ভাবে লিগ না খেলার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয় জেলা ক্রীড়া সংস্থাকে। যদিও ক্রীড়া সংস্থার কর্তারা শেষ পর্যন্ত লিগ করার চেষ্টা করেও ব‍্যর্থ হয়েছেন।

প্রসঙ্গত, তিনটি ডিভিশনের ৫৫ টি ক্লাব নিয়ে এই জেলায় প্রতি বছর লিগ শুরু হয় মে মাসের শেষে অথবা জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে। আর লিগ শেষ হয় পুজোর আগেই। কিন্তু এই বছর লিগ শুরুই হয়েছে জুলাই মাসের ২৮ তারিখ। মাত্র দুটি করে ম‍্যাচ হয়েছিল। তারপর লিগের আর কোনও ম‍্যাচই হয়নি। জেলা ক্রীড়া সংস্থার পক্ষ থেকে অতিবৃষ্টি ও মাঠ সমস‍্যার কারণ দেখানো হচ্ছে। এই জেলায় ‘ইনসাইড স্পোর্টস’ খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছে, বারুইপুরে ৬ টি মাঠ ( সাগর সংঘ, ফুলতলা, মাদারহাট, নিউ ইন্ডিয়া, আর সি মাঠ এবং হরিহরপুর জাগৃতি) আছে। সোনারপুরে আছে চারটি মাঠ (জগদ্দল ব‍্যায়াম সমিতি, রাজপুর সাধারণ সম্মিলনী, বৈকুন্ঠপুর, নয়াবাদের টিউরিয়া)। জানা গেল টিউরিয়া লিগের জন‍্য মাঠ দেয়না। এছাড়াও জয়নগরে দুটি এবং বহুরুতে একটি মাঠ আছে। নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনেরও মাঠ আছে কিন্তু মিশনের কর্তৃপক্ষর অনুমতি নিয়ে লিগের ম‍্যাচ করার চেষ্টা করা হচ্ছে না। লিগ যাতে সুষ্ঠুভাবে হয় তার জন‍্য তো জেলা ক্রীড়া সংস্থার কর্তাদেরই তো সক্রিয়ভাবে কাজ করার দায়িত্বর মধ‍্যে পড়ে।

কেন লিগ শেষ করা গেল না? এই প্রশ্নের উত্তরে দঃ২৪ পরগনা জেলা ক্রীড়া সংস্থার ফুটবল সচিব শঙ্কর বোস ‘ইনসাইড স্পোর্টস’কে বলছিলেন,”লিগ শেষ না হওয়ার কারণ একাধিক। প্রথমত মাঠ সমস‍্যা। এবছর অতি বৃষ্টির কারণে মাঠের অবস্থা খারাপ হয়েছে। আমরা সব সময় লিগ শেষ করি পুজোর আগে। সেটাও হয়নি। আমাদের জেলার রেফারি সংস্থার নতুন কমিটি দেরিতে তৈরি হওয়ায় লিগ দেরিতে শুর হয়েছে। সব মিলিয়ে একাধিক সমস‍্যা।”

৫৫ টি ক্লাব নিয়ে আপনাদের লিগ। মাত্র ১৫ টি ক্লাবের আপত্তিতেই লিগ বন্ধ করে দিলেন? এই প্রশ্নের উত্তরে দঃ২৪ পরগনা জেলা ক্রীড়া সংস্থার সচিব সুপ্রিয় ঘোষ ‘ইনসাইড স্পোর্টস’ কে জানান,”লিগ শেষ করার জন‍্য একাধিকবার ক্লাব গুলির সঙ্গে বৈঠক করেছি। একটা সময় সমস‍্যা মিটে গিয়েছিল। ফিক্সচার তৈরি করার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু ‘এ’ ডিভিশনের ১৫ টি ক্লাব চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেয় তারা খেলতে পারবে না। আমাদের সংস্থার নিজস্ব মাঠ নেই। একমাত্র সাগর সংঘর মাঠে যৌথভাবে মাঠ ব‍্যবহার করি। বাকি যেসব মাঠে আমরা লিগের খেলা করি সেই সব মাঠ হল খেলতে না চাওয়া ওই ১৫ টি ক্লাবের। ওই ১৫টি ক্লাবের লিখিত চিঠি দেওয়ার পরও আরও অনেক ক্লাব লিগ খেলতে না চেয়ে মৌখিক ভাবে জানায়। বেশ কিছু ক্লাবের অনীহা ও সদিচ্ছার অভাবেই এবছর লিগ করতে পারলাম না। অনভিপ্রেত, দূঃখজনক ঘটনা। আমরা লজ্জিত। অনেক শিক্ষা পেলাম। তিক্ত অভিজ্ঞতা। সামনের বছর যাতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেই ব‍্যাপারে আমরা সতর্ক থাকব।”

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here