◆জার্সি উন্মোচনের মুহূর্ত, বৃহস্পতিবার বালিতে◆
ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন : মোহনবাগানের সঙ্গে এটিকে, মিলন বীথির সঙ্গে মতুয়া গোষ্ঠীর গাঁটছড়া বাঁধার ঘটনা ঘটেছে ফুটবলকে কেন্দ্র করেই। এবার সেই গড়ের মাঠের ফুটবলকে কেন্দ্র করেই হাওড়ার দুটি ক্লাব গাঁটছড়া বেঁধে ফেললো।
কলকাতা ফুটবল লিগের তৃতীয় ডিভিশনের মানিকতলা স্পোর্টিং অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে জুড়ে গেল বালির ৯৭ বছরের বালি দেশবন্ধু ক্লাব। আর তার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হয়ে গিয়েছে গত ৮ জুন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়। হাওড়া জেলার এই দুই ক্লাবের হাতে হাত রেখে চলার শুভ সূচনার অনুষ্ঠানের সাক্ষী থাকলেন আইএফএ সচিব অনির্বান দত্ত, সভাপতি অজিত ব্যানার্জি, সহসচিব রাকেশ ঝাঁ, শুভাশিস সরকার, প্রাক্তন আইএফএ সচিব জয়দীপ মুখার্জি, প্রাক্তন ফুটবলার দেবাশিস মুখার্জিরা। এঁরা প্রত্যেকেই এই ক্লাবের গাঁটছড়া বাঁধাকে সাধুবাদ জানিয়ে নতুন জার্সি উন্মোচনও করলেন।
বালি অঞ্চলে বালি দেশবন্ধু ক্লাবের পাশাপাশি আছে মোহনবাগানের ঘরের ছেলে সত্যজিৎ চ্যাটার্জিদের বালি অ্যাথলেটিক ক্লাব এবং বালি প্রতিভা। এই তিনটি ক্লাবের এলাকায় যথেষ্ট নাম ডাক আছে। বালি প্রতিভা থেকে একদা বহু ফুটবলার উঠে এসেছে। এখন তারা কলকাতা লিগে তৃতীয় ডিভিশনে খেলে। কিন্তু সত্যজিতদের বালি অ্যাথলিট ক্লাব আইএফএ অ্যাফিলিয়েটেড ইউনিট নয়। তবে বালি এলাকায় চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশবন্ধু ও অ্যাথলেটিক ক্লাব। এবছর থেকে গড়ের মাঠে তৃতীয় ডিভিশনের লড়াইয়ে বালির ক্রীড়া মহলে ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হবে ‘বালি দেশবন্ধু হাওড়া মানিকতলা স্পোর্টিং ও বালি প্রতিভাকে ঘিরে।
হাওড়া মানিকতলার সচিব রবীন ঘোষ বলছিলেন,”বালি অ্যাথলেটিক ক্লাবের সঙ্গে বালি প্রতিভা ক্লাবের মধ্যে কিন্তু অলিখিত ভাবে গাঁটছড়া বাঁধা আছেই। বালি অ্যাথলেটিক আইএফএ-এর অ্যাফিলিয়েটেড ইউনিট নয়। কিন্তু বালি প্রতিভা কলকাতা লিগে তৃতীয় ডিভিশনে খেলে। এই ক্লাবও প্রাচীন।” প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এই বালি প্রতিভার একটা সোনালি ইতিহাস আছে। এই ক্লাব থেকে বিখ্যাত বহু ফুটবলার উঠে এসেছেন।
বালি অ্যাথলেটিকের সঙ্গে বালি প্রতিভার অলিখিত গাঁটছড়ার তথ্য উড়িয়ে দিলেন বালি প্রতিভা ক্লাবের সচিব অপূর্ব কুমার ঘোষ। এই বিষয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে ‘ইনসাইড স্পোর্টস’কে অপূর্ব কুমার ঘোষ বলেন, “শতবর্ষের ঐতিহ্যশালী বালি প্রতিভা ক্লাব একটা স্ব-নির্ভর ক্লাব। এই ক্লাবের সঙ্গে যারা যুক্ত আছেন, তাঁদের একটা আবেগ কাজ করে। এই ধরনের গাঁটছড়ার তথ্য কাল্পনিক। তথ্যটি সঠিক নয়।”
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ১৯৫৬ সালের ক্লাব মানিকতলা স্পোর্টিং এর সঙ্গে যুক্ত হল ৯৭ বছরের বালি দেশবন্ধু ক্লাব (১৯২৬ সালে প্রতিষ্ঠিত )। ফলে তাদের নতুন নাম হল ”বালি দেশবন্ধু হাওড়া মানিকতলা স্পোর্টিং অ্যাসোসিয়েশন।’ এই বালি দেশবন্ধু ক্লাবে মূলত ভলিবল, বাস্কেট ও কবাডি খেলার চল ছিল। ইদানিং ছোটদের নিয়ে ফুটবল চর্চা হচ্ছে। ব্রিটিশ আমলের তৈরি প্রাসাদ। সেটাই ক্লাব। এই ক্লাবের সচিব সমীর কাঁড়ার এবার গড়ের মাঠের ফুটবলকে লক্ষ্য রেখে এগোতে চান। মানিকতলা স্পোর্টিং এর সচিব রবিন ঘোষ বলছিলেন,”দেশবন্ধুর ইচ্ছে ছিল গড়ের মাঠে ছেলেদের খেলার সুযোগ করে দেওয়ার। এমন একটা ঐতিহাসিক ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে আমরাও খুশি। দেশবন্ধু কর্তারাও ফুটবলের প্রসার চায়। গাঁটছড়া বেঁধে আপাতত আমরা নার্সারি লিগ (‘এ’ ও ‘বি’ গ্রুপ) ও তৃতীয় ডিভিশনে খেলব। একটা লক্ষ্য নিয়েই এগোনোর পরিকল্পনা আছে।”
এই দুই ক্লাবের উদ্যোগ দেখে আইএফএ সচিব অনির্বান দত্ত বলছিলেন,”ফুটবলের উন্নয়নে জেলার দুই প্রাচীন ক্লাব যেভাবে গাঁটছড়া বেঁধে এগোতে চায়ছে তা খুবই ইতিবাচক দিক। আগেও বলেছি,আবার বলছি জেলার ফুটবল না এগোলে বাংলার ফুটবল এগোবে না। আর জেলার ফুটবলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে জেলার ক্লাবগুলিকে এগিয়ে আসতে হবে। বালি দেশবন্ধু ও হাওড়া মানিকতলা স্পোর্টিং-এর পথ চলা মসৃন হোক, সাফল্য কামনা করছি।”