◆আর্জেন্টিনা: ৩ (৪)
◆ফ্রান্স: ৩ (২)
ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন : হয়তো রবিবারের কাতারে আর্জেন্টিনা-ফ্রান্স ম্যাচটাই বিশ্বকাপের সেরা ফাইনাল ম্যাচ। দেশের হয়ে শেষ ম্যাচ খেলা মেসির দুরন্ত ফুটবল। বয়স বেড়েছে, তাই একটু গতিও কমেছে। কিন্তু ফুটবল শিল্প একই আছে। ৭২ মিনিট ধরে ম্যাচ শুধুই আর্জেন্টিনার তার পরেই ফ্রান্সের ‘দৈত্য’ জেগে উঠলেন। পরপর দুই গোল করে ফ্রান্সকে ম্যাচে ফেরালেন এমবাপে। একটা ম্যাচে (ট্রাইব্রেকারের গোল নিয়ে) মেসি করলেন তিনটি গোল আর এমবাপে করলেন চারটি। ম্যাচের ভাগ্য পেন্ডুলামের মত দুলে গেল টাইব্রেকার পযর্ন্ত। টান টান উত্তেজনা। স্বপ্নের ম্যাচ। এমবাপে হ্যাটট্রিক করলেও শেষ হাসি হাসলেন লিওনেল মেসি। নিজের শেষ বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয়ে স্বপ্ন পূরণ করলেন। এ যেন রূপ কথার গল্প।
এদিন ম্যাচের শুরু থেকেই আর্জেন্টিনা ছিল দুরন্ত। নক আউটে দি মারিয়াকে খেলানো যায়নি চোটের কারণে। কিন্তু ফাইনালে শুরু থেকে নেমে চমকে দিলেন। বাঁ প্রান্ত থেকে মুর্হুমুহু আক্রমণে ফ্রান্সকে চাপে ফেলে দিয়েছিলেন মারিয়া। ৭০ মিনিট পর্যন্ত দাপটে খেলে গেলেন মেসি বাহিনী। প্রথমার্ধেই ২-০ গোলে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। আর্জেন্টিনা প্রথম গোল পায় পেনাল্টি থেকে। বক্সের মধ্যে মারিয়াকে ফাউল করেন ওসমান দেম্বেলে। পেনাল্টি পায় আর্জেন্টিনা। পেনাল্টি থেকে গোল করেন মেসি।
আর্জেন্টিনার দ্বিতীয় গোল আসে দি মারিয়ার পা থেকেই। প্রতি আক্রমণে নিজেদের অর্ধে বল পেয়ে রদ্রিগোকে পাস দেন মেসি। রদরিগো থেকে আলভারেস। ততক্ষণে বাঁ দিক দিয়ে বিপক্ষের বক্সে পৌঁছে গিয়েছিলেন মারিয়া। আলভারেসের কাছ থেকে বল পেয়ে গোলরক্ষক লরিসের উপর দিয়ে গোল করেন দি মারিয়া। আর্জেন্টিনা এগিয়ে যায় ২-০ গোলে।
ম্যাচের বয়স তখন ৭৮ মিনিট। যাকে ম্যাচে খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছিল না সেই কিলিয়ন এমবাপে মোক্ষম সময়ে জ্বলে উঠলেন। দুই মিনিটের ব্যবধানে দুটি গোল করে (প্রথমটি পেনাল্টি থেকে) একাই ম্যাচের রং বদলে দিলেন। বক্সের ধারে কাছে এমবাপে যে কত ভয়ঙ্কর তার প্রমাণ আবার দিলেন।
ম্যাচ ২-২ হওয়ায় অতিরিক্ত সময়ের খেলা শুরু হয়। অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধে মেসি গোল করে আর্জেন্টিনাকে ৩-১ গোলে এগিয়ে দেন। ম্যাচ তখন তিন মিনিট বাকি। আবার মোক্ষম সময়ে পেনাল্টি থেকে গোল করে ৩-৩ করে দেন সেই এমবাপে।
শেষ দিকে ম্যাচ জেতার সহজ সুযোগ পেয়েছিলেন ফ্রান্সের কোলো মুয়ানি। কিন্তু তাঁর জোরালো শট অবিশ্বাস্য ভাবে বাঁচিয়ে দেন আর্জেন্টিনা গোলরক্ষক মার্তিনেস। খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানে বাজিমাত করল আর্জেন্টিনা।
টাইব্রেকারেও গোল করলেন এমবাপে এবং মেসি। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না ফ্রান্সের দুটি গোল নষ্ট করায়। চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা,চ্যাম্পিয়ন মেসি। এ যেন বিশ্বকাপে তাঁর ইচ্ছে মতন, ইচ্ছে পূরণ। পাশাপাশি ৩৬ বছর পর আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ জিতল। তারা শেষ বিশ্বকাপ জিতেছিল ১৯৮৬ সালে, মারাদোনার হত ধরে। এবার মেসির হাত ধরে ট্রফি এল।
এবারের বিশ্বকাপে ৯ টা গোল করে গোল্ডেন বুট পেলেন এমবাপে। আর ৮ টি গোল করে, দেশকে চ্যাম্পিয়ন করে মেসি পেলেন গোল্ডেন বল। পুরস্কার তালিকাটা হল –
◆সোনার বল: লিও মেসি
◆সোনার বুট: কিলিয়ান এমবাপে
◆সোনার গ্লাভস: এমি মার্টিনেজ
◆বিশ্বকাপের সেরা তরুণ ফুটবলার: এঞ্জো ফার্নান্দেজ (আর্জেন্টিনা)
◆চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনার পুরস্কার মূল্য: ৪২ মিলিয়ন ডলার
◆রানার্স আপ ফ্রান্সের পুরস্কার মূল্য: ৩০ মিলিয়ন ডলার