ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন,৮ জুন : IWL জয়ী শ্রীভূমি ফুটবল ক্লাবের ফুটবলারদের সংবর্ধনা দিল শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাব। মজার ব্যাপার হল, শ্রীভূমি নিয়ে ধোঁয়াসা একটা আছেই। একটা দুর্গা পূজোর জন্য বিখ্যাত। আর একটা ফুটবল ক্লাব নিয়ে চর্চিত। শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাব হল লেকটাউনের সুজিত বসুর সেই বিখ্যাত দুর্গা পুজোর জন্য জনপ্রিয়। আর গড়ের মাঠে রাকেশ ঝাঁর শ্রীভুমি ফুটবল ক্লাব। এই ক্লাবেও সুজিত বসু সভাপতি। সচিব রাকেশ (মুন) ঝাঁ। ফুটবলের যাবতীয় কাজ মুন দেখেন। ফুটবলারদের যাবতীয় সুবিধা দিয়ে থাকেন এই মুন। বর্তমানে আইএফএ সহসচিব। গড়ের মাঠে কিছু কর্তা আছেন যারা পরোজীবী। তারা হায়না নাকি বাজপাখী সেটাও বোঝা যায় না। তারা স্বঘোষিত ক্লাব কর্তা। অনায়াসে ফুটবলারদের টাকা মেরে দেন। অথচ সোসাল মিডিয়ায় ফুটবলের সেবায় নিয়োজিত বলে আত্মপ্রচারে ব্যস্ত থাকেন। মুন ওরফে রাকেশ ঝাঁ সেই পথে হাঁটেননি। তিনি ফেসবুকে নেই। সোসালমিডিয়া থেকে একশো হাত দুরে। কলকাতার তিন প্রধান ক্লাব ও ভবানীপুর ক্লাব ফুটবলারদের যে টাকা, সুযোগ সুবিধা দেয়, একই রকম ভাবে সেই সুযোগ সুবিধা ফুটবলারদের দিয়ে থাকে শ্রীভূমি ফুটবল ক্লাব। এই মুহূর্তে বাংলার সেরা মহিলা দল তিনিই করেছেন। তার জন্য কৃতিত্ত্ব দিতেই হবে রাকেশ ঝাঁকে। ফুটবলারদের স্বাচ্ছন্দ্যে রাখা (থাকা,খাওয়া, পেমেন্ট) সব কিছুতেই সন্তুষ্ট ফুটবলাররা। কোন ফুটবলারের আত্মীয়র রোগিকে হাসপাতালে ভর্তি করানো। অথবা ময়দানের অনেকেই আছেন যাদের বিপদে আপদে মুন পাশে দাঁড়িয়েছেন নিঃশব্দে।
রাকেশ প্রচার বিমুখ। তাঁর মহিলা দল IWL চ্যম্পিয়ন হওয়ার পর একটা সাক্ষাৎকার নেয়ার জন্য বহুবার অনুরোধ করেছিল ‘ইনসাইড স্পোর্টস।’ সেই রাকেশ নীরব, এখনও। গড়ের মাঠ থেকে জেলা এখনও বেশ কিছু ক্রীড়া সংগঠক আছেন যারা সত্যিকারের ফুটবল নিয়ে কাজ করে থাকেন, তাদের এন্ডোর্স করা খুবই প্রয়োজন। ইউনাইটেড স্পোর্টসের নবাব ভট্টাচার্য, রাকেশ ঝাঁ, বেহালার পদ্মশ্রী শৈলেন মান্না ফুটবল অ্যাকাডেমির গৌতম দাস,রায়গঞ্জের টাউন ক্লাবের অরিজিৎ ঘোষ – সেই রকমই চার চরিত্র। আরও আছে। তাদের এন্ডোর্স করলে আখেরে বাংলার ফুটবলের মঙ্গল।
শনিবার লেকটাউনে শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাব নিজেদের ক্রিকেট কোচিং ক্যাম্পের মাঠে রবীন্দ্র-নজরুল সন্ধ্যা অনুষ্ঠান শুরুর আগে ব্রততী,ইমন,শ্রীকান্ত আচার্যের সামনে জমকালো সংবর্ধনা দেওয়া হল শ্রীভূমি ফুটবল ক্লাবের সফল মহিলা ফুটবলারদের। সুজিত বসু মঞ্চে দাঁড়িয়ে বলছিলেন, ‘শ্রীভূমি স্পোর্টিং আর শ্রীভূমি ফুটবল ক্লাব এক হলেও ফুটবল বিষয়ের পুরোটাই মুন দেখে। ও আইএফএ-সহসচিব। আমি ক্লাবের সভাপতি হলেও মুন নিজের মতো করে ফুটবল দলটা চালাই। আমাদের ফুটবলাররা আজ ভারতের বিভিন্ন দলকে হারিয়ে IWL-2 চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এবার লক্ষ্য IWL-1 চ্যাম্পিয়ন হওয়া। সামনে আরও বড় লক্ষ্য।”
এদিন প্রত্যেক ফুটবলারদের অ্যাডিডাস কোম্পানির বুট ও লাগেজ ব্যাগ উপহার দেওয়া হয়। আর এই উপহার পেয়ে বেজায় খুশি রানি,মৌসুমিসহ সকল ফুটবলাররা। এরা প্রত্যেকেই দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসা মেয়ে। তাদের সাফল্যকে যথাযথ মর্যাদা দিয়ে বরণ করে নিয়েছে শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাব।
শ্রীভূমি স্পোর্টিং তো সংবর্ধনা দিল, শ্রীভূমি ফুটবল ক্লাব কবে পুরস্কৃত করবে? উত্তরে রাকেশ ঝাঁ বলেন,”খুব শীঘ্রই গড়ের মাঠে আমাদের ক্লাব তাঁবুতেই ফুটবলারদের পুরস্কৃত করা হবে।”
IWL-2 চ্যাম্পিয়ন হবেন ভাবতে পেরেছিলেন? জবাবে মুন ওরফে রাকেশ বলেন,”আমরা ধাপে ধাপে এগোনোর চেষ্টা করছি। প্রথমে কন্যাশ্রী কাপ চ্যাম্পিয়ন। তারপর IWL-2 চ্যাম্পিয়ন। এবার IWL-1 লক্ষ্য। কঠিন পরীক্ষা। তবে মেয়েরা শুধু ক্লাবের মুখ উজ্জ্বল করেছে তা নয়, বাংলাকেও তুলে ধরেছে। এটাই বড় ব্যাপার।”