◆অনির্বান (জয়) দত্ত ও সুব্রত দত্ত (ফাইল ছবি)
◆সন্দীপ দে◆
আইএফএ-এর কোষাধ্যক্ষ কৃষ্ণেন্দু ব্যানার্জির মৃত্যুর পর কে হবেন নতুন কোষাধ্যক্ষ? গত ১২ দিন ধরে টানটান চাপা উত্তেজনায় কাঁপছিল গোটা ময়দান। আর এই কোষাধ্যক্ষর পদকে কেন্দ্র করে ময়দানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুরু হয়। একদিকে বাংলার ফুটবল প্রশাসনের কিংবদন্তি প্রশাসক প্রয়াত প্রদ্যোৎ দত্তর জৈষ্ঠ পুত্র অনির্বান (জয়) দত্ত। যিনি দীর্ঘদিন ধরে জর্জটেলিগ্রাফ স্পোর্টস ক্লাবের যুগ্ম সচিব। অপর দিকে কোষাধ্যক্ষের লড়াইয়ে নেমে পড়েছেন মানিকতলা স্পোর্টিংয়ের সচিব হাওড়ার বাসিন্দা রবীন ঘোষ। আইএফএ-এর একটা গোষ্ঠী রবীন ঘোষকে সমর্থন করেছিল ঠিকই। কিন্তু কলকাতার বেশিরভাগ ক্লাব এবং জেলা প্রতিনিধিদের কাছে অনির্বান (জয়) দত্তর প্রভাব,গ্রহণ যোগ্যতা ক্রমশই বাড়তে শুরু করে। প্রয়াত প্রদ্যোৎ দত্তর উত্তরসূরি হিসেবে অনির্বানকেই চায়ছে ময়দানের একাধিক ক্লাব ও জেলা।
অনির্বান দত্ত ও রবীন ঘোষের লড়াই যখন অবসম্ভাবী ঠিক তখনই এই লড়াইয়ে কার্যত জল ঢেলে দিলেন ময়দানের “কিং মেকার” সুব্রত দত্ত। বাংলার ফুটবলের স্বার্থে আইএফএ-এর একটাই দল থাকুক। লক্ষ্য, বাংলার ফুটবলের উন্নয়ন। অযথা নির্বাচন ডেকে এনে আইএফএ-এর দলকে টুকরো করা মানেই বাংলার ফুটবল উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি করা। যা ভুল বার্তা পৌঁছবে। পাশাপাশি ক্লাব,জেলার মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে আইএফএ-এর চেয়ারম্যান সুব্রত দত্তর প্রস্তাবে অনির্বান (জয়) দত্তকে সমর্থন সচিব জয়দীপ মুখার্জির। পরির্বতিত পরিস্থিতিতে কোষাধ্যক্ষ পদে নির্বাচন না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। অর্থাৎ শাসক গোষ্ঠীর প্রার্থী হিসেবেই অনির্বান (জয়) দত্তর কোষাধ্যক্ষ পদে বসাটা এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।
মঙ্গলবার বিকেলে দুই সহসভাপতি,তিন সহসচিবকে নিয়ে এই নির্বাচন নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেছিলেন আইএফএ সচিব জয়দীপ মুখার্জি। বৈঠকে ঠিক হয়,চলতি মাসের শেষে স্পেশাল জেনারেল মিটিং হবে। সেই মিটিংয়ে সাইনিং অথরিটি নিয়ে সংবিধান বদলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য,অতীতে সই করার ক্ষেত্রে একমাত্র বাধ্যতামূলক সইয়ের অধিকার ছিল শুধু কোষাধ্যক্ষর। এবার সেই সংবিধান বদলে ফেলা হতে চলেছে। চার জনের (সভাপতি, সচিব, একজন সহসচিব এবং কোষাধ্যক্ষ)-এর মধ্যে তিন জন সই করার সুযোগ আসতে চলেছে। বৈঠক শেষ করেই সন্ধ্যায় ময়দানের এক ক্লাব তাঁবুতে “থিঙ্ক ট্যাঙ্ক” কর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসেন সচিব জয়দীপ। তারপরেই সুব্রত দত্তর প্রস্তাবে অনির্বান (জয়) দত্তকে সমর্থন করেন সচিব জয়দীপ মুখার্জি। আর পাঁচ জনের মতো তিনিও নির্বাচন চান না। সবাই এক হয়ে বাংলার ফুটবলের উন্নয়ন চান। একটাই দল – আইএফএ। সুব্রত দত্ত যেমন সচিব জয়দীপ মুখার্জির কাজের প্রশংসা করেন। তেমনি সুব্রত দত্তকেও গুরু বলে মনে করেন জয়দীপ। সোমবার আইএফএ সচিবের ঘরে বসে (সহসভাপতি পার্থ সারথী গাঙ্গুলি ও সহ সচিব রাকেশ (মুন) ঝাঁর উপস্থিতিতে) এই প্রতিবেদককে জয়দীপ বারবার বলছিলেন,”আমার মাঠের গুরু হলেন সুব্রত দত্ত। বাপীদার (সুব্রত দত্ত) জন্যই মাঠে এসেছি। ওনার যেকোনও পরামর্শ,প্রস্তাব,নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করব। আমি কখনও বাপীদার বিরুদ্ধে যেতে পারব না।”