ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন, ৩০ নভেম্বর : বিওএ (বেঙ্গল অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন) নির্বাচন ঘিরে ‘ব্যানার্জি ব্রাদার্সে’র লড়াই তুঙ্গে। দুই ভাইয়ের দুই গোষ্ঠী। এই লড়াইটা প্রকাশ্যে আসে গত বছরই। এবারও সেই বিওএ-র সভিপতি হওয়ার লড়াইকে কেন্দ্র করে মূখ্যমন্ত্রীর দুই ভাইয়ের লড়াই সামনে এসে গিয়েছে।
এই লড়াইয়ে গত সপ্তাহে নির্বাচন বাতিল ঘোষণা করে ভাই স্বপন ব্যানার্জি (বাবুন)কে চাপে ফেলে দিয়েছিলেন দাদা অজিত বন্দ্যোপাধ্যায়। বসে থাকেননি ভাইও। দুদিন পরে বিওএ-র এক্সিকিটিভ কমিটির সদস্যদের একত্রিত করে, জরুরি সভা ডেকে বাজিমাত করলেন স্বপন ব্যানার্জি। সোমবার কাস্টমস ক্লাব তাঁবুতে হওয়া এই সভায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। আগামী ৬ ডিসেম্বর পিয়ারলেস হোটেলে বিওএ-র নির্বাচন হচ্ছে। নতুন ইলেকশন পর্যবেক্ষক হিসেবে পল্টু রায় চৌধুরীকে নিয়োগ করা হল।
প্রসঙ্গত, আসন্ন বিওএ-র নির্বাচনে সভাপতির পদে মনোনয়নপত্র জমা দেন স্বপন ব্যানার্জি। গতবছর সংস্থার নির্বাচন নিয়ন্ত্রণ না রাখতে পারলেও এই বছর বেশির ভাগ সদস্য স্বপনের পক্ষে চলে আসেন। সেটা বুঝতে পেরে সিঁদুরে মেঘ দেখছিলেন অজিত ব্যানার্জি। তিনি এতদিন সংস্থার সভাপতি ছিলেন। এবারও থাকতে চেয়েছিলেন। পরিস্থিতি জটিল দেখে গত শুক্রবার দুপুরে আইও এবং রাজ্য সংস্থাগুলিকে মেল করে জানিয়ে দেন, নির্বাচনের যে ভোটার লিস্ট তৈরি করা হয়েছে সেটা অস্বচ্ছ। তাই আপাতত নির্বাচন স্থগিত রাখা হচ্ছে। অজিতবাবু যেদিন নির্বাচন বাতিল করার মেল করেন সেই দিন সন্ধ্যায় সভাপতির পদে মনোনয়নপত্র জমাও দেন বলে সংস্থার একাধিক সদস্যরা জানান। এমন ঘটনায় অজিত ব্যানার্জির উপর বিরক্ত বিওএ-র সদ্যসরা। ঘটনা জানার পরেই সচিব স্বপন ব্যানার্জি এক্সকিউটিভ কমিটির জরুরি সভা ডাকেন সোমবার।
সংস্থার একাধিক সদস্য প্রশ্ন তোলেন, নির্বাচন বাতিল বা স্থগিত করার সিদ্ধান্ত কি করে একা নিতে পারেন সভাপতি অজিত ব্যানার্জি? স্থগিত যখন করলেন, তখন নিজে সভাপতি পদে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন কেন? বিএও-র প্রবীণ সদস্য (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) ‘ইনসাইড স্পোর্টস’-কে বলছিলেন,”অজিত যেটা করল সেটা ওর কাছ থেকে আশা করিনি। এটা না করলেও পারত।”
সোমবার প্রায় দু ঘন্টার বৈঠকের শেষে অজিত ব্যানার্জি জানান,”এই মিটিংটা কি ভাবে হয়? সভায় প্রশ্ন তুলেছিলাম। সভাপতি হিসেবে আমার সঙ্গে কথা না বলেই এই সভা ডেকেছে। আমি এই সভায় এসেছি। আমি কাজে বিশ্বাসী। লোকবলে নয়। নির্বাচনে তো হারজিৎ থাকবেই। কিন্তু নির্বাচনটা প্রপার ওয়েতে হওয়াটা বাঞ্চনীয়। যেটা হচ্ছে না। এখন যদি কেউ আদালতে চলে যায় তাহলে কি হবে জানি না।”
একাধিক সদস্য প্রশ্ন তুলেছেন, একদিকে আপনি নির্বাচন বাতিল করছেন আবার মনোনয়নপত্র জমাও করছেন। উত্তরে অজিতবাবু অদ্ভুত যুক্তি দিলেন। তাঁর কথায়,” আমি নিজে জমা দিতে যায়নি। অ্যাসোসিয়েশনকে দিয়েছিলাম।”
সভাপতি পদের প্রার্থী স্বপন ব্যানার্জি ‘ইনসাইড স্পোর্টস’-কে জানান,”নির্বাচন বাতিল করার অনেক নোংরা খেলা হয়েছে। কিন্তু সকল সদস্য নির্বাচন চেয়েছে। সভার সিদ্ধান্ত, আগামী ৬ ডিসেম্বর পিয়ারলেস হোটেলে নির্বাচন হচ্ছে।”
আপনার দাদা তো বললেন,আজকের এই মিটিং কি করে করা হল? নির্বাচনের আগে ‘কারও’ আদালতে চলে যাওয়ারও সম্ভানার ইঙ্গিত দিলেন আপনার দাদা। প্রশ্ন শুনে স্বপন ব্যানার্জি বলেন, “আগেও উনি নির্বাচন বাতিল করতে চেয়েছিলেন। আবার মনোনয়নপত্র জমাও করেছিলেন। আদালত দেখিয়ে কিছু লাভ নেই। সভার সকল সদস্য নির্বাচন চেয়েছেন। তাঁদের মান্যতা দিয়েই নির্বাচন হচ্ছে।”
সব মিলিয়ে আসন্ন বিওএ-র নির্বাচনে নিয়ন্ত্রণে স্বপন ব্যানার্জির।