ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন : দেশের লাঞ্ছিত কুস্তিগিরদের পাশে দাঁড়িয়ে ফের বিজেপি সরকারের তীব্র সমালোচনা করলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার গোষ্ঠপাল মূর্তির পাদদেশে দাঁড়িয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,” মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘সব খেলার মাথার উপরে বসে আছে। ক্রিকেট বোর্ড থেকে শুরু করে সব খেলার মাথায় বিজেপি নেতারা বসে আছেন। একটা সময় নিয়ম ছিল যে রাজনৈতিক নেতারা কখনও কোনও ক্রীড়া সংস্থার চেয়ারম্যান বা প্রধান হতে পারবেন না। আমি যখন ক্রীড়ামন্ত্রী ছিলাম সেই সময় রুল জারি করেছিলাম। এখন সেটা নেই। স্পোর্টস লাভার্সদের খেলতে দেওয়া হয় না ৷ মেডেলটা দেশের, সেটা বোঝা উচিত বিজেপির।”
বুধবার কুস্তিগিরদের সমর্থনে পথে নেমেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী সহ বাংলার ক্রীড়া জগত। আর বৃহস্পতিবার গোষ্ঠপাল মুর্তির পাদদেশে মোমবাতি জ্বালিয়ে মেও রোডের গান্ধী মুর্তির পাদদেশে হেঁটে যান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি এদিন দেশের কুস্তি সংস্থার সভাপতি মৃল অভিযুক্ত ব্রিজভূষণ শরণ সিংয়ের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘ব্রিজভূষণ যতক্ষণ না গ্রেফতার হবে ততক্ষণ কিন্তু আইন ছেড়ে কথা বলবে না। ওয়ান পার্টি, ওয়ান নেশন। ওয়ান লিডার, ওয়ান ল, ওয়ান নেশন বলা হচ্ছে। যদি এক দেশে একই আইন থাকে তাহলে শাসক দলের নেতাদের কেন ছাড়া হচ্ছে?’’ প্রশ্ন তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, ‘‘পস্কো আইনে তো অভিযুক্তকে সবার আগে গ্রেফতার করা উচিত ছিল। সুপ্রিম কোর্ট বলল, তা সত্ত্বেও অ্যারেস্ট হলো না। দেশের নাগরিক হিসেবে লজ্জাবোধ করছি।”
এদিন বাংলার দুই কুস্তিগিরকে চাকরি দিয়েছেন। পরে তিনি লাঞ্ছিত কুস্তিগিরদের উদ্দেশ্যে বলেন,” হাল ছেড়ো না ৷ লড়াই চালিয়ে যাও ৷ কাউকে না কাউকে প্রতিবাদ তো করতেই হবে। তা না হলে এরকম অন্যায় হতেই থাকবে। কুস্তিগীররা কী পদক্ষেপ করে দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করব ৷ যা হবে ওদের সঙ্গে কথা বলেই হবে।”
এদিকে এদিন প্রচন্ড গরমে অনুষ্ঠান কভার করতে আসা এক বেসরকারি টিভি চ্যানেলের ক্যামেরাম্যান অসুস্থ হয়ে পড়েন। মুখ্যমন্ত্রী যখন মিছিল করে গান্ধী মূর্তির দিকে হাঁটছিলেন সেই সময় তাঁর নজরে আসে, এক টিভি চ্যানেলের ক্যামেরাম্যান হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন ৷ তিনি মাথা ঘুরে পড়েও গিয়েছিলেন। সঙ্গে সঙ্গে এগিয়ে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর নিরাপত্তারক্ষীরা ধরাধরি করে ওই চিত্রসাংবাদিককে উঠিয়ে বসান। এরপর মুখ্যমন্ত্রী নিজেই ওই ক্যামেরাম্যানের দিকে জল এগিয়ে দেন। সে সময় তাঁর পাশেই ছিলেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস-সহ অন্যান্য ক্রীড়াবিদরা।
মুখ্যমন্ত্রী নিজের গাড়ি দিয়ে ওই ক্যামেরাম্যানকে হাসপাতালে পৌঁছনোর ব্যবস্থাও করে দেন। এরপর যথারীতি মোমবাতি মিছিল শেষ করে নিজের এক নিরাপত্তার রক্ষীর বাইকে চড়ে রওনা হন হাসপাতালে। অসুস্থ ক্যামেরাম্যানকে দেখে আসেন মুখ্যমন্ত্রী।