◆সুপার সিক্সের ৬ দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আইএফএ সচিব অনির্বান দত্ত◆
ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন : কলকাতা লিগে মোহনবাগান খেলবে কিনা এখনও পরিস্কার হল না। বরং ঝুলেই রইল। শনিবার আইএফএ অফিসে সুপার সিক্সের বৈঠকে মোহনবাগান জানিয়ে দিয়েছে, ক্রীড়াসূচি হাতে পাওয়ার পর এফএসডিএল অনুমতি দিলে কলকাতা লিগ খেলবে। মোহনবাগানের থেকে এমন প্রস্তাব আসতে পারে ভাবতে পারেননি সভায় উপস্থিত পাঁচ ক্লাব ও আইএফএ কর্তারা। এদিন সুপার সিক্সের ইস্টবেঙ্গল,মহমেডান, মোহনবাগানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে উপস্থিত ছিল এরিয়ান, খিদিরপুর ও ভবানীপুরের প্রতিনিধিরা।
এদিনের সভায় ইস্টবেঙ্গলের প্রতিনিধি বাবু চক্রবর্তী জানিয়ে দেন,তাঁদের কলকাতা লিগ খেলতে কোনও সমস্যা নেই। তবে ক্রীড়াসূচি হাতে পেলে ইস্টবেঙ্গলের সুবিধা হয়। মহমেডানের অন্যতম কর্তা কামরুদ্দিন বলেন,”আমাদের আই লিগ খেলা শুরু হবে ২৬ অক্টোবর। তার আগে লিগ খেলতে আমাদের সমস্যা নেই।” তবে এটিকে মোহনবাগানের প্রতিনিধি আশিস সরকার সভায় বলেন, আইএফএ বলেছিল ৩০ সেপ্টেম্বর লিগ শেষ হবে। কিন্তু পরিস্থিতি যা তাতে পুজোর আগে লিগ শেষ হবে না। আইএসএল শুরু হচ্ছে ৭ অক্টোবর। আইএসএলের আয়োজক এফএসডিএল কলকাতা লিগ খেলার অনুমতি দিলে তাদের খেলতে কোনও সমস্যা হবে না। আগে সুপার সিক্সের ক্রীড়াসূচি পাঠাক। তারপর এফএসডিএলের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত জানাতে পারবে মোহনবাগান।
এখন স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে, আইএসএল তো ইস্টবেঙ্গলও খেলবে। তারা যদি লিগ খেলতে পারে তাহলে এটিকে মোহনবাগানের খেলতে আপত্তি কোথায়?
ভবানীপুরের প্রতিনিধি ও মোহনবাগানের প্রাক্তন সচিব সৃঞ্জয় বসু সভায় আইএফএ সচিব অনির্বান দত্তকে বলেন, আইএফএ খুব ভাল ভাবেই লিগ করছে। কিন্তু মোহনবাগান খেলবে কি খেলবে না এই সিদ্ধান্ত ঝুলিয়ে রেখে ছোট দলের সমস্যা বাড়ছে। কারণ, দেশি ও বিশেষ করে বিদেশি ফুটবলারদের একটা নির্দিষ্ট সময় পযর্ন্ত চুক্তি করে রেখেছে। এখন যদি সুপার সিক্সের খেলা পিছিয়ে যায় তাহলে ছোট দল সমস্যার মধ্যে পড়ে যাবে। সৃঞ্জয়ও আগাম ক্রীড়াসূচির দাবি করেছেন।
সভার শেষে আইএফএ সচিব অনির্বান দত্ত সাংবাদিকদের বলেন?”কলকাতা লিগ খেলার জন্য এফএসডিএলের অনুমতি নিতে হবে কিনা আমার অন্তত জানা নেই। আমাদের জানতে হবে। আমরা আগামী দুই দিনের মধ্যে সুপার সিক্সের ক্রীড়া সূচি তৈরি করে ছয় ক্লাবকে পাঠাবো। দুই দিন পরেই সব জানা যাবে।”
প্রশ্ন উঠছে, লিগ না খেলার জন্যই কি বার বার অজুহাত দেখাচ্ছে এটিকে মোহনবাগান? বকেয়া টাকা, এএফসি কাপ, ডুরান্ড কাপ পরে জাতীয় দলে আট ফুটবলার গেলে খেলতে পারবে না। গতকাল জাতীয় দলে মোহনবাগানের মাত্র তিন ফুটবলারকে নিয়েছে। এবার তারা বলছে এফএসডিএল অনুমতি দিলে তবেই খেলবে। মোহনবাগানের এহেন আচরণে অনেকেই বিরক্ত। এদিন সভার শেষে ছয় ক্লাবের এক প্রতিনিধি নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক ( ময়দানে) প্রভাবশালী কর্তা আইএফএ অফিস থেকে বেরোনোর সময় হাসতে হাসতে বলে গেলেন,”লিগে না খেলার জন্য মোহনবাগান আর কত অজুহাত দেবে? অজুহাতের একটা লিমিট থাকবে তো। মানুষ বোকা নয়, সব বোঝে। মোহনবাগান সমর্থকরা ব্যাপারটা ভাল ভাবে নেবে তো?”
তবে পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে তাতে পুজোর আগে আদৌ সুপার সিক্সের ম্যাচ হবে কিনা সন্দেহ আছে। কারণ, ২৫ সেপ্টেম্বর মহালয়া। তারপর থেকে লিগের ম্যাচের জন্য পুলিশ পাওয়া যাবে না। ১ অক্টোবর থেকে ১৫ অক্টোবর পযর্ন্ত ময়দান বন্ধ। সুপার সিক্সের ম্যাচের সংখ্যা ৩০টি। ফলে কালী পুজোর আগে লিগ শেষ হবে কিনা সন্দেহ আছে।
এদিকে, গতকাল সুপার সিক্সে কোন দল উঠবে সেই বিষয় নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেছিলেন আইএফএ-এর সিএফএল কমিটির সদস্যরা। সংবিধান অনুযায়ী সমসংখ্যক পয়েন্ট হলে প্রথমে গোল দেওয়ার সংখ্যা, পরে গোল খাওয়ার সংখ্যা দেখা হয়। সেই হিসেবে ভবানীপুরের সঙ্গে খিদিরপুর ও এরিয়ান ক্লাব সুপার সিক্সে উঠেছে।