মহমেডান স্পোর্টিং – ১ (মার্কোস)
রেলওয়ে এফসি – ০
ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন,১৮ নভেম্বর : চারের দশকে মহমেডান স্পোর্টিং ক্লাবের তখন জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। সেই সময় ইলিয়ট রোড থেকে মল্লিকবাজার,পার্ক সার্কাসের কিছু মহল্লায় নিজেদের প্রিয় ক্লাবকে নিয়ে ছড়া গান গাইতেন মহমেডান সমর্থকরা-“মহমেডান তুমকো লাখো সেলাম…..”। ৪০ বছর পর ফের কলকাতা ফুটবল লিগের খেতাব জেতার পর সেই অতীতের ছড়া গান কেউ গাইবে কিনা জানা নেই। তবে চ্যাম্পিয়ন ফুটবলারদের নিয়ে যুবভারতীর গ্যালারিতেই জয়ধ্বনি দিলেন মহমেডান সদস্য-সমর্থকরা।
কলকাতা ফুটবল লিগের ইতিহাসে মোট ১১ বার কলকাতা ফুটবল লিগ জিতেছিল মহমেডান। তারপর আর খেতাব জিততে পারেনি। প্রত্যেক বছর মাঠে গিয়ে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসা। এভাবেই গত ৪০ বছর ধরে চলে আসছিল। শেষবার লিগ জিতেছিল ১৯৮১ সালে। সেই লিগ জয়ী দলের তিন সদস্য প্রশান্ত ব্যানার্জি,অলোক মুখার্জি ও কৃষ্ণেন্দু রায় এদিন মাঠে বসে মহমেডানের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দৃশ্য দেখতে দেখতে ফিরে যাচ্ছিলেন ১৯৮১ সালে। “মনে আছে,সেই বার লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়ে ইন্ডিয়া টিমে ডাক পেয়েছিলাম। কত স্মৃতি। মহমেডানের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দরকার ছিল।” বলছিলেন অলোক মুখার্জি।
এই নিয়ে ১২ বার লিগ খেতাব ঘরে তুললো মহমেডান। আবেগপ্রবন হয়ে ‘ইনসাইড স্পোর্টস’-কে মহমেডানের কর্তা কামরুদ্দিন বলছিলেন,”যেদিন থেকে মহমেডান ক্লাবের প্রশাসনে এসেছি সেদিন থেকে জীবনের লক্ষ্য ছিল লিগ চ্যাম্পিয়ন হব। কিন্তু বছরের পর বছর ব্যর্থ হতে হতে ভেবেছিলাম,মৃত্যুর আগে হয়তো লিগ জেতা দেখে যেতে পারব না। আজ আমি খুব খুশি। আজকের দিনে সুলতান ভাইয়ের কথা খুব মনে পড়ছে। উনি বেঁচে থাকলে খুব খুশি হতেন।”
ম্যাচের আগে ধরেই নেওয়া হয়েছিল রেলওয়ে এফসিকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়াটা শুধু সময়ের অপেক্ষা। ম্যাচের তিন মিনিটের মাথায় মার্কোসের গোল হতেই উল্লাসে মেতে উঠলেন উপস্থিত প্রায় ২৩ হাজার মহমেডান সমর্থক। তখনই শুরু হয়ে গেল বিজয় উল্লাসের প্রস্তুতি। কিন্তু ম্যাচের বয়স যত এগিয়েছে ততোই পাল্টা আক্রমণে উঠে গিয়েছেন রেলওয়ে এফসির ফুটবলাররা। গোলের সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে হয়তো এই বছরও ব্যর্থ হয়েই ফিরতে হত মহমেডানকে। কোনও রকমে রেলওয়ে এফসিকে ১-০ গোলে হারিয়ে লিগ খেতাব জিতল। এদিন মহমেডান যে ফুটবল খেলেছে সেই ধারা চললে আসন্ন শিল্ড ও আই লিগে ভুগতে হবে। তবে এদিন ক্লাবের ফুটবলার,কর্তা,সদস্য-সমর্থকদের খেলার মান ভুলে আপাতত উৎসবে মেতেছেন। এটাই স্বাভাবিক। ৪০ বছরের যে ‘গাঁট’ তৈরি হয়েছিল সেটা কেটে গেল। বাংলার ফুটবলের স্বার্থে পাড়ায় পাড়ায় অতীতের সেই ছড়া গান ছড়িয়ে পড়ুক – “মহমেডান,তুমকো লাখো সেলাম,,,,,”।