ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন : কলঙ্কিত ফুটবল। কলঙ্কিত বাংলার রেফারি। রেফারি প্রতীক মন্ডলের দেওয়া জঘন্য পেনাল্টিতে মান বাঁচল ডায়মন্ডহারবার এফসির। সোমবার বিধাননগরে কলকাতা লিগের প্রিমিয়ার ডিভিশনের খেলায় বিতর্কিত পেনাল্টি থেকে গোল করে এরিয়ানকে 1-0 গোলে হারিয়ে মান বাঁচাল ডায়মন্ডহারবার এফসি। টেলিভিশন চ্যানেলে এই ম্যাচ সরাসরি সম্প্রচার হয়েছে। সেই খেলা দেখার পর বিশেষ করে রেফারি প্রতীকের অমন জঘন্য সিদ্ধান্ত দেখে গড়ের মাঠে রেফারির মান নিয়ে সমালোচনার ঝড়।
গত বছরের মতোই এবারও কলকাতা লিগে রেফারির মান নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে মরসুমের শুরু থেকেই। দেড় সপ্তাহ আগে BSS – কালীঘাট এমএস ম্যাচে রেফারির জঘন্য পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেখে মাঠেই সংযম হারিয়ে খোদ আইএফএ সভাপতি অজিত ব্যানার্জি বিরূপ মন্তব্য করেছিলেন। কদিন আগে IFA সচিব অনির্বান দত্ত, CRA (ক্যালকাটা রেফারিজ অ্যাসোসিয়েশন) কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন। কিন্তু রেফারিদের ভুলের সংখ্যা বেড়েই চলেছে।
এদিন এরিয়ানের বিরুদ্ধে দাপটের সঙ্গে খেললেও গোল করতে পারছিলেন না DHFC (ডায়মন্ডহারবার এফসি)-র ফুটবলাররা। ম্যাচের শেষ দিকে DHFC ফুটবলার বল নিয়ে এরিয়ানের বক্সে ঢুকে পরেন। সামনে গোলরক্ষক দেবজিৎ। DHFC ফুটবলারের পা থেকে অনেকটা দুরে বল বেড়িয়ে যাওয়ার পর (বল কন্ট্রোলের বাইরে চলে গিয়েছিল) এরিয়ান গোলরক্ষকের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। রেফারি প্রতীক মন্ডল সঙ্গে সঙ্গে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেন। এই সিদ্ধান্ত দেখে রেফারিকে প্রতিবাদ করেন এরিয়ানের ফুটবলাররা। কিন্তু রেফারি প্রতীক কর্ণপাত করেননি। সেই পেনাল্টি থেকেই গোল করে ম্যাচ জিতল ডায়মন্ডহারবার।
এই ঘটনায় রেফারি প্রতীকের সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধীতা করে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায় এরিয়ানের সাপোর্ট স্টাফদের। প্রতীক তখন দুই গোলরক্ষক কোচকে লাল কার্ড দেখিয়ে মাঠ থেকে বার করে দেন। তাই নিয়ে ক্ষুব্ধ এরিয়ান শিবির।
এদিন দুরন্ত ম্যাচ খেলেছেন এরিয়ানের গোলরক্ষক দেবজিৎ ঘোষাল। বাগনানের এই গোলরক্ষক যেন একাই ডায়মন্ডহারবারকে আটকে রেখেছিলেন। পেনাল্টির সিদ্ধান্ত নিয়ে দেবজিৎ বলেন,”আমি বলের উপর ঝাঁপিয়েছিলাম। বরং ওদের রাহুল আমার উপরে পরে এসে পড়ল। বড় ক্লাবগুলি বেশি সুবিধা পেয়ে থাকে। কলকাতার ফুটবলে এটাই নাকি হয় শুনলাম।”
এরিয়ানের সহকারী কোচ রাজদীপ নন্দী বলেন,”আমাদের ছেলেরা যা লড়াই করল তার মূল্য পেল না। কি ভাবে আমাদের আজ হারতে হয়েছে সবাই টিভিতে খেলা দেখেছেন। এই রেফারি ISL ম্যাচ খেলায়। তারপরও যদি এমন সিদ্ধান্ত দিয়ে দেয় কিছু বলার নেই। এই রেফারিং দেখে আমরা সত্যিই হতাশ।”
এরিয়ানের কোচ অরিন্দম দেব বলেন,”আজ আমাদের গোলরক্ষক যে ম্যাচটা খেলেছে তার দাম কিন্তু ও পেল না। ইচ্ছে করে পেনাল্টি দিয়ে হারানো হল। শুধু তাই নয়, অন্যায় ভাবে আমাদের গোলরক্ষক কোচদের লালকার্ড দেখাল। আমাদের কেউ তো রেফারিকে মারতে যায়নি। গালাগালও দেয়নি। পেনাল্টির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করেছে মাত্র। অথচ হলুদ কার্ড না দেখিয়ে লাল কার্ড দেখিয়ে দিল? রেফারি নিজে যা মনে করেছে সেই ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই ভাবে চললে বাংলার ফুটবল খারাপের দিকে যাবে। আইএফএ-এর দেখা উচিত।”
CRA সভাপতি ভোলা দত্তর প্রতিক্রিয়া জানতে গেলে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে CRA তাঁবুতে বসে টিভিতে পুরো ম্যাচ দেখেছেন এক প্রাক্তন রেফারি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেই রেফারি এই প্রতিবেদকের প্রশ্নর উত্তর দিতে গিয়ে বলছিলেন,”ম্যাচ তো আমরাও দেখলাম, আপনিও দেখেছেন। কেন এই সিদ্ধান্ত নিল বুঝতে পারছি না। কি আর বলব।”
এই ম্যাচের ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন ওঠাটায় স্বাভাবিক। কারণ, যে দল পেনাল্টি পেয়েছে সেই দলটির নাম ডায়মন্ডহারবার এফসি। আর রেফারির নাম প্রতীক মন্ডল।
এদিন, প্রিমিয়ারের অপর দুই মাচের মধ্যে সুরুচি সংঘ 2-0 গোলে হারায় পাঠচক্রকে। কালীঘাট এমএস ও খিদিরপুর স্পোর্টিং ম্যাচ গোলশূন্যভাবে শেষ হয়েছে।