ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন, রায়গঞ্জ,২৪ ডিসেম্বর : রায়গঞ্জ টাউন ক্লাবের প্রাচীন টুর্নামেন্ট কুলদাকান্ত শিল্ডের ফাইনাল চাক্ষুস করতে এসে মন দিয়ে ফেললেন ভারতের প্রাক্তন ফুটবলার দীপক মন্ডল। তাঁর সঙ্গে রায়গঞ্জের ফুটবলে মাতলেন বেঙ্গল অলিম্পিয়ান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি স্বপন ব্যানার্জিও। সেই সঙ্গে পরিকাঠামো তৈরি করতে টাউন ক্লাবকে ১০ লক্ষ টাকার সাহায্য ঘোষণা করলেন স্থানীয় বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী।
গত সাতদিন ধরে ফুটবল উৎসব শেষ হয়ে গেল ঠিকই কিন্তু রায়গঞ্জ টাউন ক্লাবের কর্তাদের নতুন করে ফুটবল উন্মাদনা, নতুন উদ্যোগ,নতুন দায়িত্ব বাড়িয়ে দিয়ে গেলেন একদা টানা এগারো বছর ভারতীয় দলে খেলা প্রাক্তন দীপক মন্ডল।
রায়গঞ্জের টাউন ক্লাবের ফুটবল কোচিং ক্যাম্পের সঙ্গে যুক্ত হতে চলেছেন ‘অর্জুন’ পুরস্কারপ্রাপ্ত দীপক। এদিন মঞ্চ থেকেই টাউন ক্লাব ও দীপক মন্ডলের পক্ষ থেকে এমনটাই ঘোষণা করলেন দক্ষিণ দিনাজপুর তথা জেলার দক্ষ ক্রীড়া সংগঠক গৌতম গোস্বামী। “এখানকার পরিবেশ আমার ভাল লেগেছে। অনেক পরিকল্পনা আছে। সবাই মিলে একটা ভাল কিছু চেষ্টা করব।” বলছিলেন দীপক।
দীপকের সঙ্গে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বেঙ্গল অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি স্বপন ব্যানার্জি। তিনি বলেন,”রায়গঞ্জের এই কুলদাকান্ত শিল্ড দেখতে এত মানুষ মাঠে এসেছে, দেখেই ভাল লাগছে। টাউন ক্লাবের কর্তাদের বলছি,আপনারা টুর্নামেন্ট চালিয়ে যান। সামনের বছর থেকে আমার কালীঘাট লাভার্স এই টুর্নামেন্টে খেলবে। টাউন ক্লাব শুধু নয়, রায়গঞ্জ তথা উত্তর দিনাজপুর ফুটবলের সামগ্রিক উন্নয়েনর স্বার্থে আমি সব রকম সাহায্য করব। এই জেলার ফুটবলের একটা ঘরানা আছে। সুভাষ ভৌমিকের এখানে বাড়ি। তিনিও এই জেলা থেকেই উঠে এসেছেন।”
রায়গঞ্জ পৌরসভার পৌরপিতা সন্দীপ বিশ্বাস বলছিলেন,”আমাদের রায়গঞ্জের এই কুলদাকান্ত শিল্ড মানেই ঐতিহ্য। গত সাতদিন ধরে সাধারণ ক্রীড়াপ্রেমি মাঠে এসেছেন। দর্শকদের জন্য মাঠে পুলিশ দিতে হয়নি। আমার মতে কুলদাকান্ত শিল্ডে সেরা হল দর্শকরাই।”
অনুষ্ঠানের শেষ বলে ‘ছক্কা’ মারলেন বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী। তাঁর কথায়,”টাউন ক্লাব কর্তরা,আমার কাছে সাহায্য চেয়েছিল। আমি সেই সময় দিতে পারিনি। তবে আজ কথা দিয়ে যাচ্ছি,পরিকাঠামোর জন্য টাউন ক্লাবকে দশ লক্ষ টাকার ব্যবস্থা করে দেব।” কৃষ্ণ কল্যাণীর এই ঘোষণায় জনতা হাততালি দিতে থাকে। টাউন ক্লাবের সচিব অরিজিৎ ঘোষ ‘ইনসাইড স্পোর্টস’কে বললেন,”আমরা একটা নির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছি। বিধায়কের সাহায্য আমাদের খুব উপকার হবে। আশা করছি সবাই পাশে থাকবেন।”
৮৮ বছরের এই টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছিল কলকাতা প্রিমিয়ার ডিভিশনের খিদিরপুর ক্লাব ও জর্জ টেলিগ্রাফ স্পোর্টস ক্লাব। সেমিফাইনালে এই দলকে পরাজিত করেই ফাইনালে পৌঁছয় বৈদ্যবাটি ফুটবল ক্লাব ও নর্থবেঙ্গল আর্মড পুলিস ক্লাব। ফাইনালে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে শেষ হাসি হাসল নর্থবেঙ্গল আর্মড পুলিশ দল। তারা টাইব্রেকারে (৪-২) হারাল হুগলির বৈদ্যবাটি ফুটবল ক্লাবকে। ম্যাচের সারা হয়েছেন নর্থবেঙ্গল আর্মড পুলিশের গোলরক্ষক গোপাল রায়।
এদিন ফাইনাল ম্যাচ দেখতে উপস্থিত ছিলেন এই জেলার প্রাক্তন ফুটবলাররা। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক আরবিন্দ কুমার মিনা।