ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন,রায়গঞ্জ, ৫ জুন : যারা ফুটবল কোচিং করছেন অথবা কোচিং করতে ইচ্ছুক তাদের নিয়ে অভিনব উদ্যোগ নিলেন ‘ওরিয়েন্ট জুয়েলার্স রায়গঞ্জ ইনস্টিটিউট ফুটবল অ্যাকাডেমি’র কর্তারা। রায়গঞ্জ টাউন ক্লাবের মাঠে ৩ থেকে ৫ জুন -তিন দিনের ওয়ার্কশপ করলেন সাইয়ের প্রাক্তন কোচ এবং বেঙ্গল ফুটবল অ্যাকাডেমির চিফ কোচ অনন্ত ঘোষ। শুধু স্থানীয় কোচ নয়, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার ক্যানিং,মালদার গাজল,এমনকি বিহার থেকেও কোচিং কোর্স করে গেলেন ভবিষ্যতের কোচেরা।
প্রত্যেক দিন সকাল থেকে বিকেল মাঠ ও ক্লাস চারটি ভাগে ভাগ করে কোচিং কোর্সের সূচি তৈরি করেছিলেন এ লাইসেন্স প্রাপ্ত অনন্ত ঘোষ। তাঁকে সাহায্য করেছেন আর এক এ লাইসেন্স কোচ স্বপন বিশ্বাস। তিনি আবার ফুটবলার স্কাউটও করেন।
কোচ অনন্ত ঘোষ ‘ইনসাইড স্পোর্টস’কে বলছিলেন,”এখানে না আসলে জানতেই পারতাম না এত ভাল পরিকাঠামো আছে। সব থেকে ভাল লেগেছে প্রত্যেক কোচেরা আগ্রহ নিয়ে শিখতে চায়ছে। রায়গঞ্জের ক্রীড়া সংগঠক অরিজিৎ ঘোষের নাম শুনেছিলাম। তিনি যে নিঃস্বার্থ ভাবে কিছু করতে চান সেটা বুঝতে পারছি। আমি অরিজিৎ বাবুকে কিছু পরিকল্পনা,পরামর্শ দিয়েছি। জেলার ফুটবলকে সঠিক দিশা দেখাতে অরিজিৎ ঘোষদের মত সংগঠকদের খুব দরকার।”
অনন্তবাবু আরও বলেন,”তিনদিন সময়টা খুব কম সময়। তবে ‘ডি’ ও ‘সি’ লাইসেন্স কোর্সের গাইডলাইন তুলে ধরতে পেরেছি। ভবিষ্যতে যখন এই কোচেরা এই ‘ডি’ ও ‘সি’ কোর্স করবে তখন খুব একটা সমস্যা হবে না। আসলে ফুটবলারদের সঠিক পদ্ধতিতে ফুটবল শেখাতে হলে কোচেদের ফুটবল শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়াটা খুব জরুরি। যেটা রায়গঞ্জ ইনস্টিটিউট সঠিক যায়গায় ধরেছে। এখানকার পরিবেশ খুব ভাল। এই জেলায় অনেক প্রতিভা আছে।”
গত ৩ জুন কোচেদের কোর্স শুরু হয়। মোট ২৩ জন কোচ অংশ নিয়েছেন। আজ,কোচিং কোর্সের শেষে প্রত্যেক কোচের হাতে সার্টিফিকেট তুলে দেওয়া হয়েছে। কোচ অনন্ত ঘোষের ক্লাস নিয়ে কোচেরা এতটায় খুশি হয়েছেন যে, দিনের শেষে তাঁর হাতে উপহার তুলে দিয়েছেন ২৩ জন কোচ। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য,রায়গঞ্জ ইনস্টিটিউট থেকে জানা গেল,এই তিন দিনের কোচিং কোর্সের জন্য একটি টাকাও নেননি কোচ অনন্ত ঘোষ। তাঁর ক্লাস নেওয়ার পদ্ধতি,ব্যবহার, মাঠে নেমে বোঝানোর দক্ষতা – সব মিলিয়ে ২৩ কোচ মুগ্ধ।
এই ধরনের উদ্যোগ কেন? ওরিয়েন্ট জুয়েলার্স রায়গঞ্জ ইনস্টিটিউট ফুটবল অ্যাকাডেমির প্রধান অরিজিৎ ঘোষ ‘ইনসাইড স্পোর্টস’কে বলছিলেন,”ফুটবল প্রতিভা তুলে আনতে হলে সঠিক কোচের দরকার। ‘অর্জুন’ পুরস্কার প্রাপ্ত দীপক মন্ডলকে আমাদের অ্যাকাডেমির চিফ কোচ করেছি। আমার মনে হল কোচেদের সঠিক শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হলে শুধু আমাদের অ্যাকাডেমির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না। গোটা জেলায় ছড়াতে হবে। তবেই ভাল ফল পাওয়া যাবে। সেই ভাবনা থেকেই আমরা শ্রদ্ধেয় কোচ অনন্ত ঘোষের সাহায্য চেয়েছিলাম। তিনি যে ভাবে সাহায্য করলেন প্রতিটি কোচ উপকৃত হয়েছে। অনন্তবাবুর এই উপকার কখনও ভুলতে পারব না। তাঁর কাছ থেকে অনেক পরামর্শ নিয়েছি। ভবিষ্যতে তা মেনে চলব।” কোচিং কোর্সের শেষ দিনে উপস্থিত ছিলেন ওরিয়েন্ট জুয়েলার্স গ্রুপের কর্ণধার বিপ্লব ঘোষ।