যাদবপুর, বালুরঘাটের পর এবার বাঁশদ্রোণীতে অ‍্যাকাডেমি করছেন অভিজিৎ

0

ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন : যাদবপুর, বালুরঘাটের পর এবার বাঁশদ্রোণিতেও নিজের ফুটবল অ‍্যাকাডেমির নতুন শাখা শুরু করতে চলেছেন প্রাক্তন ফুটবলার অভিজিৎ মন্ডল।

ফুটবল থেকে অবসর নেওয়ার পর যাদবপুরের গড়ফায় অভিজিৎ ২০১৮ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি প্রথম শুরু করেছিলেন তাঁর নিজের “হিরোজ অফ টুমোরো সকার অ‍্যাকাডেমি।” অভিজিৎ নিজে বালুরঘাটের ছেলে। তাই তাঁর বরাবরই ইচ্ছে ছিল বালুরঘাটে ফুটবল অ‍্যাকাডেমি করা। যাদবপুরে অ‍্যাকাডেমির কাজ শুরু করার কিছুদিনের মধ‍্যেই নিজের জন্ম ভূমি বালুরঘাটেও খুলে ফেলেন “হিরোজ অফ টুমোরো সকার অ‍্যাকাডেমি।” তাঁকে সাহায‍্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে বালুরঘাটের টাউন ক্লাব।


যাদবপুর গড়ফায় বিবেক নগর ইউথ অ‍্যাসোসিয়েশন ক্লাবের সহায়তায় অভিজিতের অ‍্যাকাডেমিতে ফুটবল শিক্ষার্থীর সংখা ১১০। কিন্তু করোনার কারণে এখন সংখ‍্যাটা কমে গিয়েছে। বালুরঘাটে ছাত্র সংখ‍্যা ৩৫। তবে লকডাউনের সময় অন লাইনে ফুটবল ক্লাস করিয়েছেন। এখন অভিজিৎ খুব শীঘ্রই বাঁশদ্রোণীর মৈত্রী সংসদের সহায়তায় “হিরোজ অফ টুমোরো সকার অ‍্যাকাডেমি”-র নতুন শাখা খুলতে চলেছেন।

অভিজিৎ মন্ডল একটা সময় টানা ৮ বছর গোয়ার ডেম্পোর এক নম্বর গোলরক্ষক ছিলেন। কোচ আর্মান্দো কোলাসো যে পাঁচবার আই লিগ জিতে রেকর্ড করেছিলেন, সেই পাঁচবারই ডেম্পোর তিন কাঠির নিচে বড় ভরসা ছিলেন এই অভিজিৎ। তার আগে বাংলার হয়ে সন্তোষ ট্রফি খেলেছেন। অভিজিৎ এখন অনূর্ধ্ব-১৯ ভারতীয় দলের গোলকিপার কোচ। এএফসি ‘বি’ ও ‘গোলকিপার লেভেল ওয়ান’ কোর্স করে ফেলেছেন। “আমার এই অ‍্যাকাডেমি নিয়ে অনেক কিছুই পরিকল্পনা আছে। করোনার কারণে গত বছর নষ্ট হয়ে গেল। বালুরঘাট, যাদবপুরে চলছে। এবার বাঁশদ্রোণীতেও শুরু করছি।” বলছিলেন অভিজিৎ। তবে সমস‍্যা আছে, এখনও সেই ভাবে কোনও স্পনসর পাননি। তবু ফুটবলার তুলে আনার লক্ষ‍্যে অবিচল অভিজিৎ।
“আমাদের অ‍্যাকাডেমিতে ফুটবল শিখতে হলে ছাত্রদের একটা ফিস দিতে হয়। কারণ, পেশাদার ভাবে এগোতে হলে বিনামূল‍্যে কিছু করুন, দেখবেন গুরুত্ব পাবেন না। ছেলেদের কাছেও ফুটবল শেখাটা তখন আর গুরুত্ব থাকে না। খুব সহজে যেন পাচ্ছে। এখন সব খেলায় পেশাদার মনোভাব। এগোতে হলে পেশাদার হবে। আমাদের লক্ষ‍্য, বয়স ভিত্তিক আই লিগে খেলা। এছাড়াও আরও অনেক পরিকল্পনা আছে। দেখা যাক।” বলছিলেন অভিজিৎ।

আপনি থাকেন কলকাতায়। তাহলে বালুরঘাটে অ‍্যাকাডেমি করার কারণ কি? অভিজিৎ ‘ইনসাইড স্পোর্টস’-কে বলছিলেন, “বালুরঘাট আমার জন্মভূমি। আমার আগে অনেক বিখ‍্যাত ফুটবলার উঠে এসেছেন। কিন্তু লক্ষ‍্য করে দেখবেন, বালুরঘাট থেকে আমার পর আর সেই ভাবে ফুটবলার উঠে আসেনি। বিশ্বাস করুন, এই ব‍্যাপারটা আমাকে ভাবায়। আমি জানি, বালুরঘাটে অনেক ট‍্যালেন্ট আছে। একটু নজর দিলে বাংলা কেন, ভারতীয় দলেও খেলার সুযোগ পেতে পারে। সেই লক্ষ‍্য নিয়েই বালুরঘাটে অ‍্যাকাডেমি শুরু করেছি। আমার এই উদ‍্যোগকে দারুন ভাবে সাহায‍্য করছে টাউন ক্লাব।”


দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার প্রাক্তন সচিব গৌতম গোস্বামীর হাত ধরে ক্রিকেট, ফুটবলের প্রসার ঘটেছে। খেলা অন্তপ্রাণ গৌতমবাবু বালুরঘাট থেকে ফোনে ‘ইনসাইড স্পোর্টস’-কে বলছিলেন,”অভিজিৎ যে উদ‍্যোগ নিয়েছে তা সত‍্যিই প্রশংসনীয়। কোনও স্পনসর ছাড়াই যে ভাবে বাংলার ফুটবলে সাপ্লাই লাইন করার চেষ্টা করছে ভাবা যায় না। আমি নিশ্চিত অভিজিতের অ‍্যাকাডেমি থেকে অনেক প্রতিভা উঠে আসবে। তবে আমি মনে করি, স্কুল স্তরে ফুটবল চর্চা না বাড়লে কিছু হবে না। বিভিন্ন জেলার গ্রামের স্কুলে ফুটবল ফিরিয়ে আনতে হবে। কোয়ান্টিটি না হলে কোয়ালিটি আসবে না।”

অভিজিতের উদ‍্যোগে “হিরোজ অফ টুমোরো সকার অ‍্যাকাডেমি”
প্রত‍্যেক বছর অনাথ শিশুদের পাশে দাঁড়ায়। তাছাড়া জেলার অনেক দুস্থ ও প্রতিভাবান ফুটবলারের নি:শব্দে পাশে দাঁড়ান অভিজিত। ক্রিকেটের পাশে এখনও বহু ছেলে ফুটবল খেলতে মাঠে আসছে। এটাই এখন বাংলার ফুটবলে একটা বাঁক বলে মনে করছেন অভিজিৎ। ছোট্ট ছোট্ট পায়ে, চলতে চলতে ফুটবলের ‘চাঁদের পাহাড়ে’ পৌঁছতে চান অভিজিৎ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here