মোহনবাগান সভাপতিঃ টুটুর জায়গায় নাম ভাসছে মন্ত্রী অরূপ রায়ের

0

◆সন্দীপ দে◆

মোহনবাগান ক্লাবের সভাপতি কে হবেন? টুটু বসুই সভাপতি থাকবেন? নাকি তিনি পুত্র সৃঞ্জয়ের মতোই সরে দাঁড়াবেন? নাকি সৃঞ্জয় বসু সভাপতি হতে পারেন? ময়দানে এখন মোহনবাগান সভাপতির নাম নিয়েই আলোচনা তুঙ্গে।

আগামী ৩০ মার্চ বিকেল সাড়ে চারটের সময় মোহনবাগানের নতুন কর্ম সমিতির বৈঠক। সেই বৈঠকেই ক্লাব সভাপতির নাম ঠিক হওয়ার কথা। ক্লাব সূত্রের খবর, শনিবার টুটু বসুর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন নবনির্বাচিত সচিব দেবাশিস দত্ত। শোনা যাচ্ছে, টুটু বসুকে আর সভাপতি পদে দেখা যাবে না। তাঁর জায়গায় সভাপতির দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছেন মন্ত্রী অরূপ রায়। হাওড়ার বাসিন্দা অরূপ রায় আগেও মোহনবাগানের পদে ছিলেন। ক্লাবের একটা বড় অংশ নাকি মন্ত্রী অরূপ রায়কেই চায়ছে। তবে একটা সমস‍্যা আছে তা হল, সভাপতি হতে গেলে নাকি তিনটি টার্মের এক্সিকিউটিভ মেম্বার হতে হবে। আর সর্বনিম্ন মোহনবাগান ক্লাবের ২০ বছর সদস‍্য পদ থাকতে হবে। মন্ত্রী অরূপ রায় এই দুটি সম্পূর্ণ করে রেখেছেন কিনা তা এখনই জানা যাচ্ছে না। তবে এই শর্তদুটিই অরূপবাবুর বাধা হতে পারে। কিন্তু আপাতত তাঁর নামই ভেসে উঠছে।

আবার ক্লাবের একটা অংশ কৌশলে ময়দানে ভাসিয়ে দিয়েছে যে,টুটুবাবুর সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে নাকি সৃঞ্জয় বসুকে সভাপতি হওয়া প্রস্তাব দিয়ে এসেছেন মোহনবাগানের নতুন সচিব দেবাশিস দত্ত। যদিও এই খবরের সত‍্যতা যাচাই করেনি “ইনসাইড স্পোর্টস”।

এখন প্রশ্ন হল, মোহনবাগান ক্লাব থেকে বসু পরিবারের জমানা শেষ হয়ে গেল? বসু পরিবার মোহনবাগান অন্তপ্রাণ। টুটু-সৃঞ্জয় ক্লাব করতে এসে ক্লাবকে কোটি কোটি টাকা দিয়েছেন। একথা স্বীকার করবেন তাঁদের চরম বিরোধীরাও। মোহনবাগানকে প্রচন্ড ভাল বেসেও দুই মাস আগে সৃঞ্জয় বসু মোহনবাগানের সমস্ত পদ থেকে পদত‍্যাগ করেছেন। ক্লাব থেকে কেন চলে গেলেন সৃঞ্জয়? টুটু বসুও কেন নীরব থাকলেন? কি তার রহস‍্য? এই রহস‍্য এখনও কাটেনি। ময়দানে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে,রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বা প্রভাবের জন‍্যই নাকি ক্লাব থেকে চলে যেতে বাধ‍্য হয়েছেন সৃঞ্জয় বসু। তাই যদি হয় তাহলে কার নির্দেশে সৃঞ্জয়কে চলে যেতে হল? সৃঞ্জয় বা টুটু বসু কেন মুখ খুলছেন না? তাঁরা কাউকে ভয় পাচ্ছেন? বহু প্রশ্নর উত্তর নেই।

একটা সময় মোহনবাগানে টুটু বসু ও অঞ্জন মিত্র জুটি ছিল। তারপরেই দেবাশিস দত্ত – সৃঞ্জয় বসু নতুন জুটি হয়ে কাজ করছিলেন। দুজনের চমৎকার বোঝাপড়া ছিল। সৃঞ্জয় যখন ক্লাব থেকে সরে গেলেন, তখন দেবাশিস দত্ত সরে না গিয়ে থেকে গেলেন। শুধু থেকে যাওয়ায় নয়, রীতিমতো ক্লাবের সচিব হয়ে সবাইকে চমকে দিয়েছেন দেবাশিস দত্ত। তাহলে কি সৃঞ্জয় বসুর সঙ্গে তাঁর দুরত্ব তৈরি হয়েছে? যে পরিবারের সঙ্গে থেকে বছরের পর বছর ক্লাব প্রশাসন চালিয়ে এসেছেন সেই বসু পরিবার থেকে বেড়িয়ে এসেছেন দেবাশিসবাবু? এক মাস আগেও মোহনবাগানের বর্তমান ফুটবল সচিব স্বপন (বাবুন) ব‍্যানার্জি আওয়াজ তুলেছিলেন,”দেবাশিস দত্ত হটাও,মোহনবাগান বাঁচাও।” এই স্লোগান শোনার পরও স্বপন ব‍্যানার্জির বিরুদ্ধে দেবাশিস দত্তকে কোনও মন্তব‍্য করতে দেখা যায়নি। নীরব ছিলেন টুটু-সৃঞ্জয়ও। পরবর্তীকালে সেই দেবাশিস দত্তকেই সচিব হিসেবে সমর্থন করে সবাইকে চমকে দিলেন স্বপন ব‍্যানার্জি। দেবাশিস দত্ত সচিব হলেন। আর মোহনবাগান ক্লাব থেকে ছিটকে গেল “বসু পরিবার।”

গত বৃহস্পতিবার সচিব পদে বসে দেবাশিস দত্ত বলেছিলেন,” টুটু বসু মানেই মোহনবাগান। টুটুদার কোনও পদের দরকার লাগে না। তাঁর অবদানের কথা মনে রেখেই মোহনবাগান জনতার হৃদয়ে থাকবেন টুটুদা।” সেদিন এই মন্তব‍্য করে দেবাশিসবাবু কি বার্তা দিলেন? ময়দানের রাজনীতির অঙ্ক সকাল-বিকেলে বদলে যায়। বাগানে এখন বদলের হাওয়া। মোহনবাগানের নতুন কর্মসমিতির এই সিনিয়র সদস‍্য (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ), এই প্রতিবেদককে হাসতে হাসতে বলছিলেন, দুই মাস আগেও বাগানে ছিল “টি-ডি” (টুম্পাই-দেবাশিস) – এর জমানা। আর এখন সেটা বদলে হয়ে গেল “বি-ডি” (বাবুন-দেবাশিস)।
সত‍্যিই কি “বি-ডি”? নাকি এঁদের নেপথ‍্যে মোহনবাগানে অন‍্য কোনও নাম শক্ত হয়ে বসে গেল?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here