ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন: মোহনবাগান ক্লাব সচিব দেবাশিস দত্তর বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করলেন ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের কর্ম সমিতির সদস্যরা। রীতিমতো ক্লাব তাঁবুতে সাংবাদিক সম্মেলন করে দেবাশিস দত্তর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ আনলেন ইস্টবেঙ্গলের কর্তারা।
গতকাল (বৃহস্পতিবার) ইমামি অফিসের বাইরে যে ইস্টবেঙ্গলের কিছু সদস্য বিক্ষোভ দেখিয়েছেন, তাঁরা নাকি ইস্টবেঙ্গলের সভ্য সমর্থক নয়। তারা হল ‘নিতু বাহিনী।’ সেই বিক্ষোভরত সমর্থকদের ছবি ইমামির কর্ণধার আদিত্য আগরওয়ালকে মোবাইলের মাধ্যমে পাঠিয়েছেন মোহনবাগান সচিব দেবাশিস দত্ত। এমনটাই অভিযোগ করেছেন রাজা ওরফে রজত গুহ।
এদিন দুপুর তিনটে নাগাদ সাংবাদিক সম্মেলন করে ইস্টবেঙ্গলের কর্ম সমিতির সদস্য রজত গুহ বলেন,”আমার ৫০ বছরের ময়দানের কেরিয়ারে কখনও কাউকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করিনি। কিন্তু বেশ কিছুদিন ধরে দেখছি,মোহনবাগান সচিব দেবাশিস দত্ত আমাদের ক্লাব আর ব্যক্তিকে আলাদা করার চেষ্টা করছেন। শুধু তাই নয়, গতকাল আমাদের বোর্ড মিটিং ছিল। সেই মিটিংয়ের আগে ইমামি অফিসের বাইরে বেশ কিছু ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা বিক্ষোভ দেখান। সেই বিক্ষোভ দেখানো সমর্থকদের ছবি আদিত্য আগরওয়ালের মোবাইলে পাঠান মোহনবাগান সচিব। এবং আগরওয়ালকে দেবাশিস দত্ত জানায়, এই সমর্থকরা মোটেও ইস্টবেঙ্গলের সভ্য সমর্থক নয়। তারা হল নিতু বাহিনী। উনি যেটা করেছেন তা ময়দানের পরিবেশ নষ্ট করছেন। দুই প্রধানের পারস্পরিক শ্রদ্ধা থাকা উচিত। আমরা পুরো বিষয়টা ক্রীড়ামন্ত্রীকে জানাবো। আশাকরি ভবিষ্যতে উনি এই ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকবেন।”
ইস্টবেঙ্গলের আর এক কর্তা সদানন্দ মুখার্জি অভিযোগ করে বলেন,”দেবাশিস দত্ত এটাই প্রথম নয়। এর আগেও কোয়েস ও শ্রীসিমেন্ট কর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে আমাদের সঙ্গে কোয়েসের দুরত্ব তৈরির চেষ্টা করেছিলেন। ভুল বোঝানোয় মদত দিয়েছিলেন এই দেবাশিস দত্ত। কোয়েস কর্ণধার অজিত আইজ্যাককে মেল পযর্ন্ত করেছিলেন দেবাশিস। দুটি ক্লাবই শতাব্দী প্রাচীন ক্লাব। লড়াইটা মাঠের মধ্যে থাকাটাই ভাল।”
ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের এমন চাঞ্চল্যকর অভিযোগ শোনার পর সাংবাদিকরা স্ক্রিনশট (আদিত্য আগরওয়ালের মোবাইলে দেবাশিস দত্তর পাঠানো ছবি) দেখতে চাইলে অবশ্য সেই স্ক্রিনশট দেখাননি কর্তারা। বরং এমন প্রশ্ন শুনে একটু বিরক্ত হয়ে শান্তিরঞ্জন দাশগুপ্ত সাংবাদিকদের বলতে থাকেন,”আপনারা বার বার স্ক্রিনশট দেখতে চাইছেন কেন? আমাদের কথা বিশ্বাস হচ্ছে না? আমরা যার বিরুদ্ধে অভিযোগ করছি এবার তিনি প্রমাণ করুন যে তিনি এই কাজ করেননি।”
অন্যদিকে, নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের উত্তর দিতে গিয়ে মোহনবাগান সচিব দেবাশিস দত্ত বলেন,”যে বিক্ষোভের ছবির কথা বলছে তা আমার কাছে নেই। আমি ফেসবুকে একবার দেখেছি। কে, কার বাহিনী তা আমি জানবো কি করে? এটা তো ইমামি ও ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের আভ্যন্তরীণ ব্যাপার। এই বিষয়ে আমার কোনও মন্তব্য করা ঠিক নয়।”
ইস্টবেঙ্গল কর্তা সদানন্দ মুখার্জির অভিযোগের জবাবে মোহনবাগান সচিব জানান,” কোয়েস, শ্রীসিমেন্ট তো অনেক বড় সংস্থা। আমি যদি তাদের মেসেজ করে কিছু বলি তাতে ওরা শুনবে? এটা সম্ভব? কোয়েস কর্ণধারের সঙ্গে আমাদে সম্পর্ক খুব ভাল। চেন্নাইয়ে নিজের বাড়িতে আমাকে ও টুম্পাইকে খাইয়েছিলেন কোয়েস কর্ণধার। মনে রাখবেন তখন কিন্তু আমাদের কোনও স্পনসর ছিল না। টুটুদার টাকাতে ক্লাব চলছিল। তখন এমনও বলা হয়েছিল,আমরা নাকি ইস্টবেঙ্গল থেকে ভাঙিয়ে কোয়েসকে আমাদের ক্লাবে আনার চেষ্টা করছি। সেটা তো হয়নি। এই সব অভিযোগের আর কি উত্তর দেব?”