মুর্শিদাবাদ DSA-এর ফুটবল অ‍্যাকাডেমির উদ্বোধন দিয়েই জেলা ফুটবলে নজর IFA সচিব-সভাপতির

0

ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন : আটের দশকের শেষ দিকে সাবডিভিশন ফুটবল প্রতিযোগিতা শুরু করে বাংলার ফুটবলে হৈচৈ ফেলে দিয়েছিলেন IFA-এর তৎকালীন সচিব প্রদ‍্যুত দত্ত। তিনি বরাবরই বেশি করে জেলার ফুটবলকে অগ্রাধিকার দিয়ে গিয়েছিলেন। সেই প্রয়াত প্রদ‍্যুত দত্তর পুত্র অনির্বান দত্ত IFA -এর বর্তমান সচিব। তিনিও যে বাবার চিন্তাভাবনায় প্রভাবিত তা পরতে পরতে বুঝিয়ে দিচ্ছেন।

এবং অজিত ব‍্যানার্জি। IFA সভাপতি। তিনি প্রায় ৫৫ বছর ধরে গড়ের মাঠ করছেন। তিনিও কিংবদন্তি প্রয়াত প্রদ‍্যুত দত্ত কাজে প্রভাবিত। তাঁর যুবক কালে, মন দিয়ে ফুটবল মাঠ করার পরামর্শ পেয়েছিলেন প্রদ‍্যুতবাবুর কাছ থেকেই। এই অজিতবাবু খুব কাছ থেকে প্রদ‍্যুত দত্তকে দেখেছেন, মিশেছেন। তাঁর কাজ সম্পর্কে ওয়াকিবহালও ছিলেন। আর এখন সেই প্রদ‍্যুত দত্তর পুত্রকে কাছ থেকে দেখছেন, পিতা-পূত্রকে দেখার অভিজ্ঞতা অজিতবাবুর। এক সঙ্গে বাংলার ফুটবল উন্নয়নে উদ‍্যোগী হয়ে উঠেছেন। এক কথায় বর্তমান IFA তে এখন অনির্বান-অজিত জুটি। তাঁরা বাংলার ফুটবল নিয়ে স্বপ্ন দেখেন। আর এই স্বপ্নকে সফল করার জন‍্য জেলার ফুটবলকে বেশি করে গুরুত্ব দিচ্ছেন ‘অনির্বান-অজিত’জুটি।

শনিবার মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুর স্টেডিয়ামে গিয়ে এক ফুটবল অ‍্যাকাডেমি উদ্বোধন করলেন IFA সচিব ও সভাপতি। “এই জেলার ফুটবল একটা সময় নামডাক ছিল। কিন্তু গতি হারিয়েছিল। মুর্শিদাবাদ আবার ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। আশাকরি ভবিষ্যতে এই জেলা থেকে উন্নত মানের ফুটবলার উঠে আসবে। আমরা সবাই জেলার ফুটবলের উন্নয়নের দিকে বিশেষ ভাবে নজর দিচ্ছি।” বলছিলেন IFA সচিব অনির্বান দত্ত।

IFA সভাপতি অজিত ব‍্যানার্জি বলছিলেন,”বালক ও বালিকাদের নিয়ে এই ফুটবল অ‍্যাকাডেমি করে দারুণ কাজ করেছে মুর্শিদাবা জেলা ক্রীড়া সংস্থা। গ্রাসরুট থেকে ফুটবলার তুলে আনতে হলে একটা সিস্টেমের মধ‍্যে থেকে কাছ করতে হবে। আর এই সিস্টেমের প্রথম ধাপটাই হল অ‍্যাকাডেমি। আমাদের জেলায় জেলায় প্রতিভার অভাব নেই। কিন্তু শারীরিক সক্ষমতায় আমরা পিছিয়ে আছি। যে সব ফুটবল শিক্ষার্থী খেলতে আসছে তাদের যাতে শারীরিক সক্ষমতা বাড়ে সেই দিকে আমাদের সবার নজর দিতে হবে।”

মুর্শিদাবাদ জেলায়, একটা সময় হুইলার শিল্ড, বীনাপানি, নবাব কাপ হত। এই জেলায় খেলে গিয়েছেন চুনী-পিকে-সাত্তাররা।
এই জেলা থেকে কলকাতার তিন প্রধানেও খেলেছেন একটা সময়। এখন সবই যেন অতীত। এইজেলার লালবাগ শহরে সিরাজদৌল্লার ঐতিহাসিক আস্তাবল মাঠের ‘নবাব কাপ’ হল বিখ‍্যাত। কখনও হয়,কখনও হয় না। ঐতিহ্যই তরুণ প্রজন্মকে নতুন করে উদ‍্যোগী করে তোলে, স্বপ্ন দেখাতে শেখায়। কিন্তু যাদের হাতে দায়িত্ব থাকে তারা যদি জেগে ঘুমোয় তাহলেই সমস‍্যা। যেমন লালবাগের বান্ধব সমিতি ক্লাব এই ‘নবাব কাপ’ করে থাকে। এই ক্লাবের সভাপতি ইন্দ্রজিত ধর। ইনি আবার লালবাগ পুরসভার চেয়ারম্যান এবং মুর্শিদাবাদ জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহসভাপতি। এই ইন্দ্রজিতবাবু লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে সাংস্কূতিক অনুষ্ঠান করতে পারেন অথচ বান্ধব সমিতির সভাপতি হয়ে জেলার ঐতিহ্যবাহী ‘নবাব কাপ’ করতে পারেন না। এহেন অভিযোগ খোদ বান্ধব সমিতি ক্লাবের অন্দর মহলেই শোনা যায়। ক্রীড়া প্রসাসকের পোষাক পড়ে চেয়ারে বসলে যা হওয়ার তাই হচ্ছে। রাজনীতির সঙ্গে ক্রীড়া সংগঠন জড়িত। সমস‍্যা নেই। কিন্তু সবাই তো আর সুজিত বসু, নীলিমেশ রায় চৌধুরী,মদন মিত্র, পার্থ ভৌমিক হতে পারে না।

তবে মুর্শিদাবাদ জেলা ক্রীড়া সংস্থায় সবাইকে নিয়ে একটা টিম হয়ে জেলার ক্রীড়া উন্নয়নের স্বপ্ন দেখছেন সংস্থার সচিব বিশ্বজিৎ ভাদুড়ি। তিনি আবার IFA এর সহ সচিবও। তাঁর কাজের প্রতি দায়বদ্ধতা দেখে IFA -এর শীর্ষকর্তারা বিশ্বজিৎ ভাদুড়িকে রাজ‍্য ফুটবল নিয়ামক সংস্থার সহসচিব পদে এনেছেন। সেই বিশ্বজিৎবাবু বলেন,”আমরাএকটা স্পোর্টস অ‍্যাকাডেমি করার পরিকল্পনা করেছি। ফুটবল অ‍্যাকাডেমি হল তার একটা অংশ। সবাইকে নিয়েই আমরা সুষ্ঠুভাবে এই অ‍্যাকাডেমি চালিয়ে নিয়ে যেতে পারবো বলে মনে করি।” প্রসঙ্গত, এদিন ফুটবল অ‍্যাকাডেমি উদ্বোধনের পাশাপাশি বছরের সেরা ক্লাব ও খেলোয়াড়দের পুরস্কৃত করে জেলা ক্রীড়া সংস্থা।

এদিকে, মুর্শিদাবাদ জেলা ক্রীড়ার সামগ্রিক উন্নয়ন নিয়ে রবিবার জেলা শাসক রাজশ্রী মিত্রর সঙ্গে বেঠক করবেন IFA সচিব ও সভাপতি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here