ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন : খোলনলচে বদলে যাচ্ছে ১৩১ বছরের মহমেডান স্পোর্টিং ক্লাব। রেড রোডের ধারে ভারতীয় ফুটবলের এক ঐতিহ্য দাঁড়িয়ে আছে। চার বছর আগেও মহমেডান সেকালেই পড়ে ছিল। কিন্তু এখন এই শতাব্দী প্রাচীন ক্লাবে গেলে চমকে উঠতে হয়।
ঠিক কি কি বদলে যাচ্ছে মহমেডানের? কি কি নয়,বদলে যাচ্ছে প্রায় পুরো ক্লাব তাঁবু। মহমেডান কর্তারা প্রথমেই তৈরি করেছেন নিজেদের মূল মাঠ। সবুজ মখমল। এই মূহুর্তে এত ভাল মাঠ ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগানেরও নেই। যদিও মোহনবাগান নতুন মাঠ তৈরি করছে। ক্লাব তাঁবু থেকে মূল মাঠে যাওয়ার ফাঁকা রাস্তাটা টানেল তৈরি করা হয়েছে। যা ময়দানে এই ধরনের টানেল প্রথম তৈরি হল।
ক্যান্টিনের জায়গায় ঝকঝকে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ক্যাফেটারিয়া তৈরি হয়েছে গত বছর। ক্যাফেটারিয়ার পাশে (আগে যেখানে মহমেডান এ সি ক্লাব ঘর ছিল) তৈরি হচ্ছে ফুটবলারদের দুটি সাজঘর। সেখানেও আধুনিকতার ছোঁয়া। সাজঘরের পাশে ম্যাচ কমিশনার,রেফারিদের ঘর তৈরি হচ্ছে।
এখানেই শেষ নয়, মহমেডানের যে মুল তাঁবু সেটাও পুরো ভেঙে ফেলা হবে। তৈরি হবে দোতলা তাঁবু। গ্রাউন্ড ফ্লোরে থাকবে কনফারেন্স রুম, অতিথিদের বসার ঘর এবং ক্লাবের পদাধিকারীদের আলাদা চেম্বার। আর দ্বিতীয় তলায় ক্লাবের অফিস ঘর করা হবে। যেখানে ক্লাবের যাবতীয় প্রশাসনিক কাজকর্ম করবেন কর্মীরা।
বদলে যাচ্ছে মহমেডান ক্লাবের প্রধান গেটও। সিমেন্টের তৈরি সাদা-কালোয় লেখা মহমেডান স্পোর্টিংয়ের সেই পুরনো গেটও ভেঙে ফেলা হবে। ইতিমধ্যে এই পুরনো গেটের উপর দিয়ে বিশাল গেট তৈরি হয়ে গিয়েছে। মূল গেটের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থে অনেকটাই বাড়ানো হয়েছে।
মহমেডান ক্লাবের অন্যতম কর্তা কামরুদ্দিন ‘ইনসাইড স্পোর্টস’কে বলছিলেন,”আমরা ক্লাব তাঁবুর পুরোটাই বদলে ফেলছি। পুরো কাজ শেষ হতে আরও ৬ মাস লাগবে। আসলে আমাদের লক্ষ্য ২০২৩ সালে আইএসএলে খেলা। আইএসএলে খেলতে হলে পরিকাঠামো থাকতে হবে। তাই সবটাই বদলে নতুন করে করছি। যা যা প্রয়োজন সব করব।”
এবছর কলকাতা লিগের ম্যাচ কি আপনাদের নিজেদের মাঠেই এবার খেরবেন? কামারুদ্দিন বলেন,”নিজেদের মাঠে খেলব বলেই তো আগে মাঠ তৈরি করেছি। ২০১৯ সালে আমরা নিজেদের মাঠে মাত্র সাতটা ম্যাচ খেলেছি। তারপর দুই বছর আর কোনও ম্যাচ হয়নি। আমাদের সদস্য-সমর্থকরাও নিজেদের মাঠে এসে খেলা দেখতে চায়। আমরা আইএফএকে বলেছি,আমাদের ম্যাচ ছাড়া অন্য কোনও ম্যাচ এই মাঠে করব না। বর্ষায় অন্য ম্যাচ হলে মাঠের অবস্থা খারাপ হয়ে যাবে। আই লিগ যখন হবে তখন হোম ম্যাচ আমাদের মাঠেই খেলব।”
মহমেডানের ফুটবল সচিব দীপেন্দু বিশ্বাস বলছিলেন,”আগামী ১০ জুলাই ঈদ। তার পরের দিন থেকেই নতুন মরসুমের জন্য ক্লাবের অনুশীলন শুরু হয়ে যাবে। তবে অনুশীলন হবে সল্টলেকে। আর এবার থেকে ফুটবলারদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে নিউ টাউনের ফ্ল্যাটে।” দীপেন্দু জানালেন,ক্লাব তাঁবুর সংস্করণের জন্য রাজ্য সরকার মহমেডানখে ৪৭ লক্ষ টাকা দিয়েছে। বাকি টাকা ইনভেস্টর দিচ্ছে। সব মিলিয়ে মহমেডান স্পোর্টিংয়ে এখন ‘ফিল গুডে’র হাওয়া। সদস্য-সমর্থক-কর্তাদের এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।