ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন : বেলঘরিয়া অ্যাথলেটিক ক্লাবের সভাপতি ও প্রাক্তন ক্রীড়ামন্ত্রী মদন মিত্রর ম্যাচ গড়াপেটার অভিযোগ খারিজ করে দিল আইএফএ নিযুক্ত ৫ সদস্য তদন্ত কমিটি। আজ,বৃহস্পতিবার আইএফএ সচিব অনির্বান দত্তর কাছে তদন্ত কমিটি রিপোর্ট জমা করেছে। সেই রিপোর্টে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, বেলঘরিয়া অ্যাথলেটিক ক্লাবের অভিযোগ তদন্ত করে ম্যাচ গড়াপেটার প্রমাণ কিছুই পাওয়া যায়নি। স্বাভাবিক ভাবেই কলকাতা লিগের প্রথম ডিভিশনের ক্লাব বেলঘরিয়া অ্যাথলেটিক ক্লাবের অভিযোগ খারিজ হয়ে গেল।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বেলঘরিয়া অ্যাথলেটিক ক্লাবের সভাপতি মদন মিত্র ফেসবুকে লাইভ করে ম্যাচ গড়াপেটার নিয়ে আইএফএকে এক হাত নিয়েছিলেন। কিন্তু পরে লিখিতভাবে আইএফএ-এর কাছে অভিযোগ করেছিলেন ওই ক্লাবের সচিব প্রদীপ রায় চৌধুরী। তারপরেই আইএফএ সচিব অনির্বান দত্ত পাঁচ সদস্যর তদন্ত কমিটি গঠন করে। এই কমিটিতে ছিলেন, প্রাক্তন অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার অফ পুলিশ অলোক ঘোষ, আইনজীবী অপূর্ব কুমার ঘোষ, প্রাক্তন ফিফা রেফারি প্রদীপ নাগ, কলকাতা ফুটবল লিগের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান চিত্তরঞ্জন দাস এবং মহম্মদ জামাল।
তদন্ত শুরু হওয়ার পর অভিযুক্ত ক্লাবের কর্তা থেকে ফুটবলারদের এবং রেফারিদেরও ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা। কিন্তু যিনি অভিযোগ করলেন সেই বেলঘরিয়া অ্যাথলেটিক ক্লাবের সচিব প্রদীপ রায় চৌধুরী, ফুটবল সচিব বাবলু চন্দ্র সরকারকে তদন্ত কমিটি ডাকলেও আসেননি। বৃহস্পতিবার তদন্ত কমিটির সদস্য অপূর্ব কুমার ঘোষ সাংবাদিকদের বলেন,”ওঁরা না আসার পরেও আমরা ভার্চুয়ালি প্রদীপবাবুকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম। যে ম্যাচ গড়াপেটা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন,সেই ম্যাচের দিন মাঠে তিনি উপস্থিত ছিলেন কিনা জানতে চায়লে তিনি বলেন, মাঠে ছিলেন না। ফুটবল সচিব বাবলু তাঁদের বলেন। তখন আমরা বাবলু সরকারের সঙ্গে ফোনে জিজ্ঞাসা করি। তখন বাবলুবাবুও বলেন,তিনি মাঠে ছিলেন না। তাঁকে কোনও কর্তা বলেছেন। তবে কোন কর্তা গড়াপেটার কথা বলেছেন তার নাম বাবলুবাবু আমাদের বলতে পারেননি। পাশাপাশি এই তদন্তে অভিযোগকারীরা কোনও তথ্য প্রমাণ দেখাতে বা জমা করতে পারেননি।”
প্রসঙ্গত,বেলঘরিয়া অ্যাথলেটিক ক্লাব এবছরই প্রথম কলকাতা লিগের প্রথম ডিভিশনে খেলার সুযোগ পেয়েছে। একই ডিভিশনে অনুশীলনী ক্লাবের কাছে গোল পার্থক্যে পিছিয়ে পড়ায় এবছর আর প্রিমিয়ার ডিভিশনে ওঠার সুযোগ হারিয়েছে বেলঘরিয়া। আর তারপরেই মদন মিত্র অভিযোগ যে, তাঁদের চক্রান্ত করে আটকে দেওয়া হয়েছে।
প্রশ্ন হল, মদন মিত্র লিগে নিজের ক্লাবের অবস্থান নিয়ে কতটা ওয়াকিবহাল ছিলেন তাই নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই। পাশাপাশি বেলঘরিয়া অ্যাথলেটিক ক্লাবের সচিব জনৈক প্রদীপ রায় চৌধুরী অভিযোগ করেও কেন তদন্ত কমিটির সামনে আসার সৎ সাহস দেখাতে পারলেন না? অভিযোগের তথ্য,প্রমাণ দিতে পারবেন না বলেই কি তদন্ত কমিটিকে এড়িয়ে গেলেন প্রদীপ? তিনি কি ভেবেছিলেন, তাঁদের প্রভাবশালী সভাপতি মদন মিত্রকে দিয়ে গরম গরম বিবৃতি দিয়ে আইএফএকে চাপে ফেলে প্রিমিয়ার ডিভিশনে খেলার ছাড়পত্র আদায় করবেন? সব সময়, সব জায়গায় প্রভাবশালীকে দিয়ে প্রভাব খাটানো যায় না। প্রভাব খাটিয়ে প্রিমিয়ারে ওঠা যায় না। মাঠে খেলতে হয়। প্রশ্ন আরও উঠছে,তা হল, লিখিতভাবে অভিযোগ করেও কেন তদন্ত কমিটির সামনে হাজির হলেন না, তার ব্যাখ্যা বা জবাব জনৈক সচিব প্রদীপ রায় চৌধুরীর কাছে চায়বেন মদন মিত্র?