বৈঠকে IFA কর্তাদের একাধিক প্রশ্নের সামনে কোচ রঞ্জন চৌধুরী!

0

ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন : অবশেষে আইএফএ কর্তাদের সামনে সন্তোষের ব‍্যর্থতার কারণ ব‍্যাখ‍্যা করলেন এবারের বাংলা দলের ব‍্যর্থ কোচ রঞ্জন চৌধুরী। এক ঘন্টা কুড়ি মিনিটের ম‍্যারাথন বৈঠকে কোচ ছাড়াও হাজির ছিলেন বাংলা দলের ম‍্যানেজার রাজীব বাগ। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আইএফএ সচিব অনির্বান দত্ত, সহ সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস, চার সহসচিব সুফল গিরি,রাকেশ (মুন) ঝাঁ, শুভাশিস সরকার এবং নজরুল ইসলাম।

বাংলা দলের কোচ, ম‍্যানেজারকে নিয়ে দেড় ঘন্টার এই বৈঠকে কি কি আলোচনা হয়েছে তা আইএফএ-এর কোনও কর্তাই সরকারি ভাবে বিস্তারিত ভাবে মিডিয়াকে বলতে চাননি। তবে কোচ রঞ্জনের ব‍্যাখ‍্যায় যে আইএফএ কর্তারা সন্তষ্ট হতে পারেননি তা বৈঠক শেষে কর্তাদের শারীরিক ভাষাতেই একটা ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে।

বৈঠক শেষে আইএফএ সচিব অনির্বান দত্তকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন,”দুটি দিক নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এবার সন্তোষ ট্রফিতে এমন ব‍্যর্থতা মেনে নেওয়া যায় না। কেন এমন বিপর্যয় হল তার ব‍্যাখ‍্যা কোচ দিয়েছেন। আর আগামী বছর ভাল করে দল গড়ে কিভাবে সাফল‍্য পাওয়া যায় সেই ব‍্যাপারেও আলোচনা হয়েছে।”
কোচের বিরুদ্ধে যে এত অভিযোগ সেই নিয়ে কোচকে কি জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল? এই প্রশ্নের উত্তরে অনির্বানবাবু বলেন,”দেখুন, কোচ নিজের পছন্দ মতো দল গড়েছেন। সেই স্বাধীনতা তাঁকে দেওয়া হয়েছিল। অভিযোগ থাকতেই পারে। একটা ব‍্যাপারে প্রায় সবার মুখেই শুনছি, ভবানীপুরের বেশি ফুটবলারকে বাংলা দলে নেওয়া হয়েছে। সব ব‍্যাপার গুলোই আমরা খতিয়ে দেখছি। তার পর আমরা সবাই মিলে বসে একটা সিদ্ধান্ত নেব।”

কোচকে কি ভৎর্সনা করলেন? প্রশ্নের উত্তরে সহসভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস বলেন,”না। তাঁকে কোনও অসম্মান করা হয়নি। সন্তোষ ট্রফির ব‍্যর্থতার ব‍্যাপারে এক একটা বিষয় নিয়ে কোচের সঙ্গে আলোচনা করেছি। পুরো বিষয়টা পরিস্কার হতে একটু সময় তো লাগবে। একবারেই হবে না।”
দুই সহসচিব সুফল গিরি ও রাকেশ (মুন) ঝাঁ মিডিয়ার সামনে কোনও মন্তব‍্য করতে চাননি। তবে বৈঠকের মাঝপথে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সহসচিব শুভাশিস সরকারকে জিজ্ঞাসা করলে আইএফএ-এর রিসেপশনের সামনে দাঁড়িয়ে এই প্রতিবেদককে বলেন,”অ‍্যাকসিডেন্ট হলে পোস্টমর্টমরের রিপোর্ট বের হয় না। আমি বৈঠকে বলেছি,বাংলার এই ব‍্যর্থতার পোস্টমর্টমের রিপোর্ট যেন আসে। ফুটবলের স্বার্থে এটা খুব দরকার।”

আসলে বাংলা দলের কোচ,ম‍্যানেজারকে নিয়ে বৈঠকের বিস্তারিত আলোচনা আপাতত গোপন রাখতে চায়ছেন আইএফএ কর্তারা। বৈঠকের আলোচনায় কি কি বিষয় উঠে এসেছিল তা নিয়ে মুখ বন্ধ রেখেছে আইএফএ কর্তারা। শুধু মুখ বন্ধ রাখাই নয়, সংবাদমাধ‍্যমকে বৈঠকের ছবি তোলার অনুমতি দেননি আইএফএ কর্তারা। কেন এত গোপনীয়তা? জানা যায়নি।

এদিন বৈঠক শুরু হয় চারটে পঁচিশ নাগাদ। ম‍্যানেজার রাজীব পৌঁছে গেলেও কোচ রঞ্জন তখনও পৌঁছতে পারেননি। বৈঠক শুরুর প্রায় বারো মিনিট পর আইএফএ অফিসের কনফারেন্স রুমে ঢুকতে গেলে কোচ রঞ্জনকে বৈঠকের বাইরে সচিবের ঘরে অপেক্ষা করতে বলা হয়। ততক্ষন ম‍্যানেজারের সঙ্গে আলোচনায় ব‍্যস্ত ছিলেন আইএফএ কর্তারা। প্রায় কুড়ি মিনিট পর কোচ রঞ্জনকে বৈঠকে ডেকে নেওয়া হয়। তবে যেটুকু জানা যায়, সেটা হল, বৈঠকে উপস্থিত কর্তাদের একাধিক প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে কোচ রঞ্জন চৌধুরীকে। দল গড়ার ক্ষেত্রে তাঁর কিছু ভুল সিদ্ধান্তের প্রসঙ্গও তোলা হয়। নিজের বিরুদ্ধে ওঠা একাধিক অভিযোগকে খন্ডন করতে গিয়ে কোচ রঞ্জন যে ভাবে নিজের মতো করে ব‍্যাখ‍্যা দিয়েছেন তাতে আইএফএ কর্তারা যে সন্তুষ্ট নয় তা জানা গিয়েছে। তবে নিজেদের অসন্তুষ্টির কথা এখনই প্রকাশ‍্যে আনতে নারাজ আইএফএ কর্তারা। বৈঠক শেষে উপস্থিত সংবাদ মাধ‍্যমের ছয় প্রতিনিধিদের এড়িয়ে আইএফএ অফিস থেকে বেরিয়ে যান কোচ রঞ্জন চৌধুরী।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here