বার পুজোঃ বাগানে জনতার ঢল,অভিষেকের ক্লাবের শুভ সূচনা

0

ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন,১৫ এপ্রিল : করোনার জন‍্য গত দুই বছর খেলার মাঠে বার পুজো হয়নি সেই ভাবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় বাংলা ক্রীড়া জগতের ঘটা করে হয়ে গেল নতুন মরসুমের শুভ সূচনা। জেলা থেকে কলকাতার গড়ের মাঠ – স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি।

সব থেকে মানুষের ঢল নেমেছিল মোহনবাগান ক্লাবে। আইএসএলের দলের কোচ জুয়ান ফেরান্দো থেকে লিস্টন,প্রীতম,শুভরা বারপুজো দেখলেন। ছিলেন এক ঝাঁক প্রাক্তন ফুটবলার। আর সবাইকে ছাপিয়ে গিয়েছে মোহনবাগান জনতা। দুই বছর পর নিজের ক্লাবের প্লেয়ারদের দেখতে এবং বারপুজোয় অংশ নিতে সকাল থেকেই ভিড় করে ছিলেন মোহনবাগান সমর্থকরা। মুখে মুখে ‘জয় মোহনবাগান’ আওয়াজ। আর তাই দেখে কোচ থেকে ফুটবলাররা মুগ্ধ। “দারুন অনুভূতি। এতদিন ফাঁকা গ‍্যালারিতেই খেলতে হয়েছে। সমর্থকদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি। বাঙালির নতুন বছরের উৎসবে আসতে পেরে খুশি হয়েছি।” বলছিলেন এটিকে মোহনবাগান কোচ ফেরান্দো।

প্রীতম কোটাল জনতার উদ্দেশ‍্যে বলে উঠলেন,”আপনারাই সব। ভাল খেলি,খারাপ খেলি, এভাবেই আমাদের পাশে থাকবেন।”

ইস্টবেঙ্গলের বার পুজো

মোহনবাগানের নতুন সচিব বৃহস্পতিবার কাশ্মীর থেকে ফিরেছেন। কিন্তু তিনি ফোনে ফোনে নির্দেশ দিয়ে পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠান আয়োজন করলেন দারুন ভাবেই। “আমি শহরে ছিলাম না ঠিকই। কিন্তু আমাদের নতুন কমিটি সবাই দায়িত্ব নিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে পেরেছে। মাঠে ফুটবলাররা এসেছিল বলে এত সমর্থক আজ মাঠে এসেছে। আমি আবার বলছি, আমরা একটা লক্ষ‍্য নিয়ে এগোচ্ছি।” বলছিলেন মোহনবাগান সচিব দেবাশিস দত্ত। তবে বাগান জনতার মধ‍্যে একটাই ‘ফিসফাস’-“টুটু বসু,সৃঞ্জয় বসু কেন চলে গেল?” হ‍্যাঁ প্রায় দুই দশকের বেশি সময়ের পর এই প্রথম ‘বসু পরিবার’ ছাড়াইহ মোহনবাগানে বার পুজো হল। বাগানে যখন জনতার উচ্ছ্বাস তখন নিজের ভবানীপুর ক্লাবের বারপুজো নিয়ে ব‍্যস্ত ছিলেন সৃঞ্জয় বসু। সাংবাদিকরা তাঁর কাছে গেলেই সৃঞ্জয়ের একটাই অনুরোধ,”মোহনবাগান নিয়ে কোনও প্রশ্ন করবেন না।”

বাটানগরে নিজের ক্লাবের জার্সি উনমোচনে অভিষেক বন্দ‍্যোপাধ‍্যায়ের

সচিব দেবাশিস দত্তকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, আজকের দিনে, টুটু বসু,সৃঞ্জয় বসুকে কি আপনি মিস করছেন? উত্তরে দেবাশিস দত্ত বলে উঠলেন,”আজ আমি সত‍্যিই অঞ্জনদাকে মিস করছি। টুটুদাকে মিস করছি।” সৃঞ্জয়ের নামটা এড়িয়ে গেলেন সচেতন ভাবেই। মিস করা নিয়ে ফের প্রশ্ন করলে দেবাশিসবাবু বলতে থাকেন,”মিস করার তালিকা বলতে গেলে তো উমাপতি কুমার,গোষ্ট পালকেও মিস করছি বলতে হয়।” বৈশাখের গরমে দেবাশিস দত্তর মুখ থেকেও যেন ‘আগুন’ বেরিয়ে পড়ছিল। সত‍্যজিৎ রায়ের লালমোহন বাবু সাংবাদিক সম্মেলনে থাকলে দেবাশিসবাবুর ‘মিস’ করার বিবৃতি নিয়ে নিশ্চয় ‘কাল্টিভেট’ করতেন।

গঙ্গাপারের ক্লাবের বারপুজোর আগেই ইস্টবেঙ্গল ক্লাবেও সুষ্ঠুভাবে বারপুজো হয়। উপস্থিত ছিলেন একাধিক প্রাক্তন ফুটবলার। ছিলেন সদস‍্য-সভর্দকরাও। চরম বিপর্যয় কাটিয়ে আলোয় ফিরতে ইস্টবেঙ্গল কর্তারা আজ যেন নতুন করে শপথ নিলেন। উপস্থিত লাল-হলুদ জনতার মধ‍্যে চাপা টেনশন। তাকিয়ে আছে আগামী ‘১৫ দিনে’র দিকে।

খিদিরপুর ক্লাবে রাজ‍্য ফুটবল প্রশাসকরা

প্রতিবারের মতো বারপুজোয় মাতলেন শতাব্দী প্রাচীন ক্লাব খিদিরপুর স্পোর্টিং ক্লাব। কিংবদন্তি প্রয়াত ভুতনাথ বিশ্বাসের খিদিরপুর ক্লাবকে সুন্দর ভাবে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন তাঁর দুই পুত্র সিদ্ধার্থ বিশ্বাস ও অমিতাভ বিশ্বাস। একটা সময় বাংলার এক ঝাঁক ফুটবলার খিদিরপুর খেলেই ভারতীয় দলের জার্সি পেয়েছিলেন। সেই সোনালী অতীত ময়দান ভোলেনি। বছরের এই দিনটাতে (বারপুজো) এই খিদিরপুর ক্লাব তাঁবুতে ঘুরে যাবেন ময়দানের ছোট বড় সব কর্তা।

খিদিরপুর স্পোর্টিং ক্লাব

প্রত‍্যেক বছরের মতোই এবারও খিদিরপুর ক্লাবে এসে আড্ডা মেরে গেলেন এআইএফএফের সহ সভাপতি সুব্রত দত্ত, চেয়ারম‍্যান অজিত ব‍্যানার্জি,সচিব জয়দীপ মুখার্জি, সহসচিব রাকেশ (মুন) ঝাঁ, সহসভাপতি পার্থসারথী গাঙ্গুলি।

তবে এই বছর বাংলার ফুটবলে নতুন মাত্রা এনে দিয়েছেন সারা ভারত তৃণমূল কংগ্রেসের সম্পাদক অভিষেক বন্দ‍্যোপাধ‍্যায়। তাঁর নতুন ক্লাব ডায়মন্ড হারবার ফুটবল ক্লাব এবারের কলকাতা লিগে অংশ নিচ্ছে। তার আগেই বাটানগরে পয়লা বৈশাখের পুজো দিয়ে নতুন ক্লাবের জার্সি উন্মোচন করলেন স্বয়ং অভিষেক বন্দ‍্যোপাধ‍্যায়। ছিলেন প্রাক্তন ফুটবলার প্রসূন বন্দ‍্যোপাধ‍্যায়, মানস ভট্টাচার্য, কৃষ্ণেন্দু রায়, রহিম নবি প্রমূখ।

এরিয়ান ক্লাবের পুজো

অন‍্যদিকে, সমর পালের উদ‍্যোগে এড়িয়ান ক্লাবেও ঘটা করে বারপুজো হয়। ক‍্যালকাটা পোর্ট ট্রাস্ট,কাস্টমসেও সদস‍্য, প্রাক্তন ফুটবলারদের উপস্থিতিতে পুজো দিয়ে নতুন মরসুমের শুভ সূচনা হয়।

উত্তর দিনাজপুরের টাউন ক্লাবের পুজো

পয়লা বৈশাখে বারপুজোয় মাতলেন বিভিন্ন জেলার ক্লাব কর্তারা। যেমন মুর্শিদাবাদের শতাব্দী প্রাচীন ক্লাব বান্ধব সমিতি,উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের টাউন ক্লাবে ঘটা করে বারপুজো হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here