ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন : কিছু কিছু খেলা থাকে যা ময়দানে সবার অলক্ষ্যে হয়ে থাকে। সেপাক টাকরো খেলাটা সেরকমই। যাদের ময়দানে যাতায়াত আছে,তারা হয়তো জানেন। নামটাও শুনে থাকবেন। কিন্তু খেলাটা কাউকে খেলতে দেখেছেন? কখন, কোথায় হয়? ময়দানে জানে না।
কি ধরনের খেলা এই সেপাক টাকরো? সেপাক টাকরো খেলাটি আসলে হল কিক ভলিবল। পা দিয়ে ভলিবল খেলার মতো। অর্থাৎ ভলিবল খেলতে হবে পা দিয়ে। কোর্ট ব্যাডমিন্টনের আকারে। আর নেট হল অনেকটা ভলিবলের মতো। তবে উচ্চতা কম, ৫ ফুটের একটু বেশি। খেলতে হয় পা দিয়ে। চারটি ইভেন্টে হয় খেলা। গেম হয় ২১ পয়েন্টে।
দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার একটি জনপ্রিয় খেলার নাম সেপাক টাকরো। হাতের পরিবর্তে পা, হাটু, বুক ও মাথা ব্যবহার করে খেলা হয়! খেলার বলটি নরম কাঠের তৈরি!
১৯৯০ সালে বেইজিং এশিয়ান গেমসে দিয়ে এশিয়ার সবচেয়ে বড় এই ক্রীড়া আসরে অন্তর্ভূক্ত হয়েছে খেলাটি।
এই খেলাটি চীন, থাইল্যান্ডে খুব জনপ্রিয়। পশ্চিমবঙ্গে সেপাক টাকরোর খেলা শুরু হয় ১৯৮৩ সালের পর। ততদিনে সেপাক টাকরো ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া তৈরিও হয়ে গিয়েছিল। আমাদের রাজ্যে সেপাক টাকরো একটা সময় (আটের দশকে শেষ ও নব্বইয়ের দশকের শেষ দিক পর্যন্ত) মাথা তুলে দাঁড়াতে শুরু করেছিল। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য,অরূপ ঠাকুর ও সুকৃতি দত্তর হাত ধরে এই রাজ্যে সেপাক টাকরোর চর্চা শুরু হয়। এই খেলায় শেষ বারের মতো ন্যাশানালের আসর বসেছিল ১৯৮৯ সালে। তারপর গত ৩১ বছরে কলকাতায় আর ন্যাশনালের মতো আসর বসেনি। ২০০২ সালে কর্তাদের অন্তর্দ্বন্দ্বের ফলে মুখ থুবড়ে পড়েছে। ময়দানে আর সেইভাবে খেলা হয় কোথায়?
ঠিক এই জায়গায় সংস্থার নতুন সভাপতি ড.পার্থ সারথী গাঙ্গুলি সেপাক টাকরোকে ফেরাতে মরিয়া।
পার্থবাবু হলেন আইএফএ র সহ-সভাপতি। সম্প্রতি ডালহৌসি ক্লাব নির্বাচনে সহ-সভাপতির পদে লড়াই করে সব থেকে বেশি ভোট পেয়ে জিতেছেন। সোমবার সভার শেষে পার্থবাবু ‘ইনসাইড স্পোর্টস’কে জানালেন,”আমরা সবাই সেপাক টাকরোকে ফিরিয়ে আনতে চাই। এখনও সময় আছে। সবাই মিলে চেষ্টা করলে খেলাটা ফিরে আসবে। আজ আমরা সকল সদস্য মিটিং করেছি। আগামী মার্চ মাসের টুর্নামেন্ট করছি।”
সেপাক টাকরোর রাজ্য সংস্থার সচিব বিমল কান্তি পাল জানান,”একটা সময় আমাদের রাজ্য থেকে প্রচুর খেলোয়াড় দেশের হয়ে খেলেছেন। স্বীকার করতে দ্বিধা নেই যে, রাজ্যে গত ১৭ বছর আগে সেপাক টাকরো অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে। পার্থবাবু আমাদের সভাপতি হয়েছেন। আশাকরছি ভাল কিছুই হবে।”
উল্লেখ্য, ফেডারেশনের অ্যাফিলিয়েশন পেলেও বিওএ-র অনুমোদন পায়নি রাজ্যের সেপাক টাকরো। হয়তো সেই কারণেই সরকারের ৫ লাখ টাকা পাননি বলে জানালেন বিমল বাবু।
এখন সব বিতর্ক ভুলে সেপাক টাকরোকে স্বমহিমায় ফিরিয়ে আনাটাই তাদের প্রধান লক্ষ্য।