ফুটবল শিক্ষার্থীদের বিদেশে ট্রেনিং পরিষেবায় ‘হার্মেজ ভয়েজেস’

0

◆বিদেশে ‘হার্মেজ ভয়েজেস’-এর ব‍্যবস্থাপনায় ভারতের এক স্কুল ফুটবলারদের ট্রেনিংয়ের একটি মুহূর্ত◆

ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন : করোনার জন‍্য গত দুই বছর থমকে ছিল। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক। তাই নতুন করে ফের স্কুলের ফুটবল শিক্ষার্থীদের বিদেশে নিয়ে গিয়ে ট্রেনিংয়ের পরিষেবায় ফিরছে হার্মেজ ভয়েজেস (Hermes Voyages)। কাতার বিশ্বকাপ শেষ হওয়ার পর ফের তা শুরু করতে চলেছে হার্মেজ ভয়েজেস।

ম‍্যাঞ্চেসটার সিটিতে ভারতের এক স্কুল ফুটবলারদের ট্রেনিং

যে কোনও স্কুলের ফুটবল টিমের প্রতিভাবান ফুটবলারদের ইওরোপ মহাদেশের বিভিন্ন দেশের বিখ‍্যাত ফুটবল ক্লাবে নিয়ে গিয়ে আধুনিক ট্রেনিং এবং বেশ কয়েকটা ম‍্যাচের ব‍্যবস্থা করা হয়। এখনও পযর্ন্ত কলকাতা, মুম্বই, দিল্লি ও বেঙ্গালুরু – এই চার মহানগরের বেশ কিছু স্কুলের প্রতিভাবান ফুটবলাররা বিদেশে গিয়ে আধুনিক ট্রেনিং নিয়ে এসেছে এই হার্মেজ ভয়েজেসের মাধ‍্যমে। করোনার জন‍্য এই প্রকল্প গত দুই বছর বন্ধ ছিল। কাতার বিশ্বকাপের পর আবার শুরু হতে চলেছে।

বার্সেলোনা ক্লাবে ভারতীয় স্কুল ফুটবলাররা

হার্মেজ ভয়েজেস (Hermes Voyages ) একটি বেসরকারি সংস্থা। প্রতিষ্ঠা ২০১৪ সালে। কলকাতা শহরের স্ট‍্যান্ড রোডের ডায়মন্ড হেরিটেজ বিল্ডিংয়ের ৮ ও ৯ তলায় প্রধান অফিস। এই সংস্থার কর্ণধার হলেন উদ‍‍্যোগপতি বাঙালি অভিজিৎ দাস। এমন একটা ক্রীড়া সংস্থা কলকাতা শহরে আছে, আগে সেই ভাবে জানা যায়নি। হার্মেজ ভয়েজেস (Hermes Voyages ) আসলে স্পোর্টস টুরিজম প্রাইভেট কোম্পানি। এই সংস্থা স্কুলের প্রতিভাবান ফুবলারদের বিদেশে নিয়ে গিয়ে ট্রেনিং দেওয়ার পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন ফুটবল লিগের ম‍্যাচ টিকিটের ব‍্যবস্থাও করে। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ, বুন্দেশ লিগা, লা লিগা, সিরি এ লিগ, ফ্রেঞ্জ লিগ তালিকায় আছে।

‘হার্মেজ ভয়েজেস’-এর কর্ণধার অভিজিৎ দাস

যেমন ধরুন, কোনও ফুটবল অনুরাগী নিজের কাজে স্পেন,প‍্যারিস বা লন্ডন বা স্পেন গিয়েছেন। হঠাৎ তার মনে হল সেই দেশের বিখ‍্যাত লিগের ম‍্যাচ দেখবেন। অথচ তিনি ম‍্যাচের টিকিট পাচ্ছেন না। হার্মেজ ভয়েজেস (Hermes Voyages )-এর সঙ্গে যোগাযোগ করলে ২৪ ঘন্টার মধ‍্যে সেই ম‍্যাচের টিকিটের ব‍্যবস্থা করে দেবে।

গত মার্চ মাসে ফিফা কংগ্রেসে ফিফা সভাপতি ইনফান্তিনোর সঙ্গে অভিজিৎ দাস

এই সংস্থার হাত ধরে কলকাতা সহ অন‍্য রাজ‍্যের বহু ফুটবল ভক্ত
গত বিশ্বকাপের (২০১৮) ম‍্যাচ দেখে এসেছেন। আসন্ন কাতার বিশ্ব কাপের ম‍্যাচ দেখার জন‍্য শহরের বহু ব‍্যবসায়ী ফুটবল অনুরাগী এই সংস্থার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ করেছেন। এদের মধ‍্যে আছে কিছু সেলিব্রিটি ও প্রভাবশালী (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক )। এই তালিকায় আছেন কলকাতা ময়দানের এক শতাব্দী প্রাচীন ক্লাবের সচিব, বাংলার এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার। আছেন কয়েকজন কর্পোরেট সংস্থার এমডি, সিইও। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এই সংস্থার সঙ্গে ফিফার ভাল যোগাযোগ আছে। কয়েক মাস আগে কাতারে যে ফিফা কংগ্রেসের সভা হয়েছিল সেখানে গেস্ট অ‍্যাপিয়েরেন্স হিসেবে উপস্থিত থাকার সুযোগ পেয়েছিলেন হার্মেজ ভয়েজেস (Hermes Voyages )-এর কর্ণধার অভিজিৎ দাসের।

ফিফা কংগ্রেসে সুব্রত দত্তর সঙ্গে অভিজিৎ দাস

অভিজিৎ দাস ‘ইনসাইড স্পোর্টস’কে বলছিলেন,”আমাদের এই হার্মেজ ভয়েজেস (Hermes Voyages ) আসলে একটি স্পোর্টস টুরিজম কোম্পানি। অবশ‍্যই ব‍্যবসায়িক প্রতিষ্ঠন। আমাদের প্রথম কাজ হল দেশের বিভিন্ন স্কুলের প্রতিভাবান ফুটবলারদের বিদেশে নিয়ে গিয়ে আধুনিক ট্রেনিংয়ের ব‍্যবস্থা করা। ২০১৪ সাল থেকে ২০১৯ পযর্ন্ত বহু স্কুল আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিদেশে গিয়েছে। এক্ষেত্রে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল বেশি আগ্রহ দেখায়। এর পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন লিগের ম‍্যাচের টিকিটের ব‍্যবস্থা করি। বিখ‍্যাত লিগের ম‍্যাচ দেখতে হলে অনেক আগে থেকে টিকিট বুক করতে হয়। আমরা কিন্তু ২৪ ঘন্টার মধ‍্যে ম‍্যাচ টিকিটের ব‍্যবস্থা করি। শুধু ফুটবল নয়, উইম্বলডনের ম‍্যাচ টিকিটও দিয়ে থাকি।”

‘হার্মেজ ভয়েজেস’র ব‍্যবস্থাপনায় গত বিশ্বকাপের আসরে এক ঝাঁ বাঙালি

এবারের কাতার বিশ্বকাপের টিকিটের চাহিদা কেমন? উত্তরে অভিজিৎবাবু বলছিলেন,”খুব ভাল রেসপন্স। শুধু কলকাতা নয়, ইস্টার্ন ইন্ডিয়া থেকে ভাল রেসপন্স পাচ্ছি। তবে আর্জেন্টিনা, পর্তুগাল ও ব্রাজিলের টিকিটের চাহিদা বেশি। এটাই সম্ভবত মেসি ও রোনাল্ডোর শেষ বিশ্বকাপ। হয়তো সেই কারণেই ভারতের ফুটবল প্রেমীরা মেসি,রোনাল্ডোর ম‍্যাচের টিকিট বেশি করে চায়ছেন।”

হার্মেজ ভয়েজেস-র সঙ্গে বিশ্বকাপের আসরে আইএফএ সহসচিব শুভাশিস সরকার

আপনি একজন বেসরকারি সংস্থার কর্ণধার হয়ে ফিফা কংগ্রেসের সভায় পৌঁছলেন কি করে? এটাও সম্ভব? “ফিফা কাউন্সিলের কোনও সদস‍্য একজনকে অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানাতে পারেন। অবশ‍্য ফিফা সভাপতির অনুমোদনের প্রয়োজন। আমার সৌভাগ‍্য, সেই সুযোগ এবার পেয়েছি।” বলছিলেন অভিজিৎ দাস। পরে তিনি বলেন বাংলার ফুটবলের উন্নয়নে যদি তার কোম্পানি কাছে লাগে তবে তিনি সব সময় ইতিবাচক মনোভাবই দেখাবেন। তবে তিনি মনে করেন স্কুল ফুটবলটাই হল ফুটবলের আঁতুরঘর।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here