ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন,২২ জানুয়ারি : শনিবার শুধুই যেন মৃত্যুর খবর। শনিবার ভোরে ভারতীয় ফুটবল জগতের কিংবদন্তি সুভাষ ভৌমিকের মৃত্যু শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তার কয়েক ঘন্টার পরেই মৃত্যু হল মুর্শিদাবাদ জেলার ফুটবল জগতের সফল প্রবীণ কোচ দুর্গাপদ গাঙ্গুলির। মৃত্যু কালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। তিনি বেশ কয়েক বছর ধরেই বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন।
মুর্শিদাবাদ জেলার ফুটবল ইতিহাস লিখতে হলে দূর্গাপদ গাঙ্গুলির অবদান উল্লেখ করতেই হবে। হয়তো তাঁর হাত ধরে কোনও তারকা ফুটবলার উঠে আসেনি কিন্তু মুর্শিদাবাদ জেলার অসংখ্য ফুটবলার দুর্গাবাবুর হাতে তৈরি। মুর্শিদাবাদ জেলার শহর,গ্রামের অসংখ্য ফুটবলার তাঁর হাত ধরেই উঠে এসেছেন। তাঁর হাত ধরে বহু ফুটবলার কলকাতা লিগের বিভিন্ন ডিভিশনে খেলেছেন। তিনি ছিলেন এই জেলার ফুটবলার তৈরির কারিগর। গত সেপ্টেম্বর মাসে “ইনসাইড স্পোর্টস” -এর পক্ষ থেকে দূর্গাপদ গাঙ্গুলিকে “ক্রীড়া গুরু” সম্মান দেওয়া হয়েছিল। যদিও শারীরিক ভাবে এতটাই অসুস্থ ছিলেন যে তিনি নিজে হাতে “ক্রীড়া গুরু”-র সম্মান নিতে পারেননি। কথা হয়েছিল একটু সুস্থ হলে বহরমপুরে গিয়েই তাকে “ক্রীড়া গুরু”-র সম্মান তুলে দেওয়া হবে। কিন্তু সেই সুযোগ হারাল “ইনসাইড স্পোর্টস”। তিনি চলেই গেলেন না ফেরার দেশে।
মৃত্যুর শেষ দিন পযর্ন্ত সঙ্গে ছিলেন তাঁরই ছাত্র কেশব চন্দ্র ঘোষ। পাশে ছিলেন হিন্দ ক্লাব, এফইউসি,ভেটারেনস ক্লাব ও মুর্শিদাবাদ জেলা ক্রীড়া সংস্থার কর্তারাও। ‘হিন্দ’ ক্লাবের প্রবীন কর্তা শেখর (কুট্টি) রায় বলেন,”আমাদের জেলার ফুটবলে এক কিংবদন্তিকে হারালাম। তাঁর অবদান জেলা নয়,বাংলার ফুটবল মনে রাখবে। প্রকৃত অর্থেই দূর্গাদা ছিলেন ফুটবলারের কারিগর।” মুর্শিদাবাদ জেলা ক্রীড়া সংস্থার সচিব বিশ্বজিৎ ভাদুরি ‘ইনসাইড স্পোর্টস’কে বলছিলেন,”দূর্গাদা ছিলেন মুর্শিদাবাদের ফুটবলের দ্রোনাচার্য। মানুষটা ফুটবলকে ভালবেসে বিয়ে করেননি। সারাটা জীবন ফুটবল নিয়েই থাকলেন। কিন্তু তাঁর কাজের মূল্যায়ন কি হয়েছে? জানি না।”
দূর্গাবাবুর প্রাক্তন ছাত্র গোলাম মোবিন বলছিলেন,”দূর্গাদা অনেক বড় কোচ ছিলেন। তেমনি তাঁর মনটাও অনেক বড় ছিল। বহু ফুটবল শিক্ষার্থীকে বুট,জার্সি,খাওয়ার টাকা দিতেন। এমন মানুষ আর পাবো না।” লালবাগের শতাব্দী প্রাচীন ‘বান্ধব সমিতি’-র সহ সচিব পার্থ বনিক বলছিলেন,”আমরা ফুটবল জগতের রত্নকে হারালাম। বরেণ্য কোচের প্রয়ানে আমরা গভীর ভাবে শোকাহত “।
এদিন প্রয়াত দূর্গাপদ গাঙ্গুলির মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে বহরমপুরের হিন্দ ক্লাব,এফইউসি, ভেটারেন্স ক্লাব ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার দফতরে। সেখানে তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হবে।