ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন : চলে গেলেন ভারতের প্রাক্তন ফুটবলার বাবু মানি। আজ,শনিবার সন্ধ্যা ৭ টা ২০ মিনিট নাগাদ এক বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৫৯ বছর। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি কিডনি সমস্যায় ভুগছিলেন। প্রায় কুড়ি দিন ধরে কোঠারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। সেখান থেকে বাইপাসের ধারে আর একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। চলে গেলেন বাবু মানি।
আটের দশকে মঈদুল ইসলামের উদ্যোগে বেঙ্গালুরু থেকে কলকাতা এসে প্রথমে মহমেডানে সই করেন বাবু মানি। মূলত তিনি ফরোয়ার্ড পজিশনে খেলতেন। পরবর্তীকালে তিনি বিভিন্ন পজিশনে খেলেছেন। মহমেডানের পর মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গলেও দাপটের সঙ্গে খেলেছেন। ১৯৮২ তে প্রথম ভারতীয় দলে খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন। ১৯৮৪ ও ১৯৮৭ সালে ভারতের। হয়ে সাউথ এশিয়ান গেমসে সোনাও জিতেছিলেন। সাফ গেমস, নেহেরু কাপ,প্রি ওয়ার্ল্ড কাপ,প্রি অলিম্পিকেও খেলেছেন। খেলেছেন। কৃষ্ণেন্দু রায়, অলোক মুখার্জি, বিকাশ পাঁজি, কৃশানু দে, সুদীপ চ্যাটার্জি, অমিত ভদ্রর সঙ্গে ভারতীয় দলে খেলেছেন মাথা উঁচু করে।
বাবু মানির মৃত্যুর খবর পেয়ে ভারতের প্রাক্তন ফুটবলার অমিত ভদ্র স্তম্ভিত। অমিত ভদ্র ‘ইনসাইড স্পোর্টস’কে বলছিলেন,”বাবু মানি খুব উঁচু মানের ফুটবলার ছিল। ও কলকাতা শহরে আসার পর দক্ষিণের বহু ফুটবলারকে কলকাতায় খেলতে সাহায্য করেছে। মুনিয়াপ্পা,ফিরোজদের এনেছিল বাবুই। আমার সঙ্গে যোগাযোগ ছিল। কিডনির সমস্যায় ভুগছিল। এত তাড়াতাড়ি ও চলে যাবে ভাবতে পারিনি। বাবুর সঙ্গে কত স্মৃতি আজ মনে পড়ছে। মোহনবাগানের হয়ে খেলতে গিয়েছি বেঙ্গালুরুতে। সকালে ওর মা পুরো দলের জন্য ব্রেক ফাস্ট খাইয়েছিলেন। আবার বেঙ্গালুরুতে ওর পরিচিত কেউ গেলে সব রকম ভাবে সাহায্য করত। মনটাও ভাল ছিল ওর। বাবুর চলে যাওয়াটা মেনে নিতে পারছি না।”
বাবু মানির আর এক সিনিয়র সতীর্থ কৃষ্ণেন্দু রায় বলছিলেন,”খুব খারাপ খবর। একটা সময় গড়িয়ার মিতালি সঙ্ঘে কোচিংও করছিল। কিন্তু শারীরিক ভাবে অসুস্থ হয়ে যাওয়ায মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিল। ফুটবলার হিসেবে মাথা উঁচু করে খেলে গিয়েছে। ভারতীয় ফুটবলে বাবু মানি একটা সফল নাম।”
বাবু মানি ফুটবল থেকে অবসর নেওয়ার পর আর বেঙ্গালুরুতে ফিরে যাননি। কলকাতা শহরেই থেকে যান। এফসিআইতে চাকরি করতেন। তিনি রেখে গেলেন এক পুত্র ও স্ত্রীকে। তাঁর মৃত্যুতে কলকাতা ময়দান সহ ভারতীয় ফুটবলে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া।