ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন : প্রয়াত ফুটবলের অলিম্পিয়ান বদ্রু ব্যানার্জি। গতকাল(শুক্রবার) রাত ২.১০ মিনিটে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯২ বছর।
অসুস্থ হয়ে গত ২৭ জুলাই এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল বদ্রুবাবুকে। হাসপাতালেই তাঁর করোনা হলে বাঙ্গুরে ভর্তি করা হয়। পরে সুস্থ হয়ে উঠলেও বার্ধক্যজনিত নানান রোগে ভুগছিলেন। কয়েক দিন আগে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল। টানা ২৪ দিন লড়াই করার পর গতকাল ভোর রাতে পরলোকে চলে গেলেন সব থেকে বেশি বয়সের ফুটবল অলিম্পিয়ান বদ্রু ব্যানার্জি।
তাঁর পোষাকী নাম সমর ব্যানার্জি। কিন্তু ময়দান তাঁকে বদ্রু নামেই চিনত। ১৯৩০ সালের ৩০ জানুয়ারি হাওড়ার বালিতে বিখ্যাত ব্যানার্জি পরিবারে জন্ম বদ্রু ব্যানার্জির। মিলন সমিতি ক্লাবে অভিষেক হয় বদ্রুবাবুর। পরে বালি প্রতিভা ক্লাবে যোগ দিয়েছিলেন। বালি প্রতিভা থেকে যোগ দেন বিএনআর-এ।কলকাতা লিগে বিএনআরের হয়ে বেশ ভাল খেলার সুবাদে পরের বছর মোহনবাগানে সই করেন। সালটা ছিল ১৯৫২। ১৯৫২ থেকে ১৯৫৯ মোট আট বছর মোহনবাগানের হয়ে খেলেন তিনি। মেডিকেলের ছাত্র হিসেবে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ফুটবলকে অগ্রাধিকার দিতে গিয়ে সেই ভাবে আর ডাক্তারি পড়া হয়নি তাঁর।
বদ্রুবাবু ১৯৫৬ সালে সাফল্যের শীর্ষে পৌঁছন। ভারতীয় ফুটবল দলের নেতৃত্ব পান তিনি। ১৯৫৬ সালের মেলবোর্ন অলিম্পিকে বদ্রুবাবুর নেতৃত্বেই ভারত খেলতে নেমেছিল। হাঙ্গেরির বিরুদ্ধে ওয়াক ওভার পায় ভারত। কোয়ার্টার ফাইনালে ভারত ৪-২ গোলে হারিয়েছিল অস্ট্রেলিয়াকে। সেমিফাইনালে তৎকালীন যুগোস্লাভিয়ার বিরুদ্ধে হেরে যায় ভারত। সেবারের অলিম্পিকে ভারত চতুর্থ হয়েছিল।
ফুটবল থেকে অবসর নেওয়ার পর বড়িশা এসসি ক্লাবকে কোচিং করিয়েছিলেন। কোচ হিসেবে বাংলাকে সন্তোষ ট্রফি এনে দিয়েছিলেন। তিনি ‘অর্জুন’ বা ‘পদ্মশ্রী’ সম্মান পাননি কেন তা আজও ফুটবল প্রেমীদের অবাক করে। তবে ভারতীয় ডাকবিভাগ বদ্রু ব্যানার্জির সম্মানে বিশেষ ডাকটিকিট প্রকাশ করেছে। রাজ্য সরকারের তরফে পেয়েছেন জীবনকৃতি সম্মান। ২০০৯ সালে মোহনবাগান রত্ন সম্মান পেয়েছিলেন বদ্রু ব্যানার্জি।