◆প্রয়াত রতন সমাজদার◆
ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন,২০ জানুয়ারি : বাংলার ক্রীড়া জগৎ থেকে একে একে চলে যাচ্ছেন। রাজ্যের ফুটবল যখন বিপন্ন তখনও ফুটবল নিয়ে স্বপ্ন দেখতেন রতন সমাজদার। গতকাল রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। মৃত্যুকালে রতনবাবুর বয়স হয়েছিল ৬৮ বছর। কিছুদিন আগে অসুস্থ হয়ে ন্যাশনাল মেডিকেলে ভর্তি হতে হয়েছিলেন। ন্যাশনাল মেডিকেল থেকে বাড়ি এসেছিলেন। পরে আবার অসুস্থ হলে কল্যাণীর গান্ধী মেমোরিয়াল হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। না, এবার আর বাড়ি ফেরা হল না। চলে গেলেন জেলার এক অভিজ্ঞ, দক্ষ ক্রীড়া সংগঠক।
উঃ২৪ পরগনা জেলা ক্রীড়া সংস্থার সচিব ছিলেন রতনবাবু। এটাই তাঁর পরিচয় নয়। ছোট্ট চেহারা। গাল ভর্তি সাদা দাড়ি। কম কথা বলতেন। কাজ বেশি করতেন। জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে বেড়াতেন। লক্ষ্য একটাই – জেলার খেলার প্রসার ও প্রচার। উঃ২৪ পরগনা জেলার যে কোনও ক্লাবে রতন সমাদ্দারের নাম বললেই শ্রদ্ধায় মাথা নিচু হয়ে যায়। দীর্ঘদিন প্রভাতী সংঘের সঙ্গে যুক্ত। পরে নাকি যুগের প্রতীকের সঙ্গেও যুক্ত হয়েছিলেন। এই জেলায় ফুটবল লিগ নিয়ে, জেলা সংস্থার কতিপয় কর্তাদের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন আছে। আছে বিতর্কও। কিন্তু রতনবাবু সবাইকে সঙ্গে নিয়ে ভাল কিছু করার চেষ্টা করে গিয়েছেন। তিনি হলেন জেলার মাঠের সব্বার প্রিয় মানুষ। কাছের বন্ধু, অজাতশত্রু।
এই উঃ২৪ পরগনা জেলা ছিল ভারতীয় ফুটবলের বড় সাপ্লাই লাইন। অথচ এখন সেই আগের মত ফুটবলটাই হয় না। সেই ইতিহাস জানে বাংলার খেলার জগৎ। তাই নিয়ে রতনবাবু যন্ত্রণার মধ্যে ছিলেন। ব্যক্তিগত আলোচনায়, আড্ডায় এই নিয়ে তাঁর সেই যন্ত্রণার কথা বলতেন।
এই জেলার বর্তমানে ফুটবল নিয়ে খুব ভাল কাজ করছেন ইউনাইটেড স্পোর্টসের ডিরেক্টর নবাব ভট্টাচার্য। রতন সমাজদারের মৃত্যুর খবরে হতাশ তিনি। নবাব ভট্টাচার্য বলছিলেন, “রতনদার আকস্মিক প্রয়াণের খবর পেয়ে আমি বাকরুদ্ধ। জেলার খেলাধুলো নিয়ে কাজ করবার আর একজন নিঃস্বার্থ, নির্লোভ এবং কর্মদক্ষ খেলার সংগঠককে হারালাম। রতনদাদের মত বিনা পারিশ্রমিকে, শুধু খেলার উন্নতিতে কাজ করবার লোক এখন আর হয় না। সামনেই শ্যামনগর ফুটবল ফেস্টিভ্যালে রতনদাকে সংবর্ধিত করার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। সেই সুযোগ আর দিলেন না।”
উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলা ক্রীড়া সংস্থার কার্যকরি সভাপতি প্রীতিময় চন্দ বলছিলেন,”জেলার মাঠে একনিষ্ঠ কর্মী ছিল। নিজেকে কখনই সচিব হিসেবে দেখতো না। জেলার খেলা নিয়েই তাঁর মন,প্রাণ। রতনের চলে যাওয়াটা আমাদের জেলার বড় ক্ষতি হয়ে গেল।”