ইনসাইড স্পোটাসের প্রতিবেদন : দিকে দিকে নিভিছে দেউটি। দিয়েগো মারাদোনা, আলেজান্দ্রো সাবেয়ার পর এবার চলে গেলেন ইতালির অন্যতম সেরা স্ট্রাইকার পাওলো রোসি। গত কাল (বুধবার) প্রয়াত হয়েছেন। বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন পাওলো। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৬ বছর।
১৯৭৬ সালে প্রথম ইতালির জাতীয় দলের হয়ে অভিষেক হয় পাওলো রোসির। কিন্তু কয়েক বছর খেলার পর তাঁর জীবনে নেমে আসে অন্ধকার। ম্যাচ গড়াপেটায় প্রমাণিত হওয়ায় পাওলোকে নির্বাসনে যেতে হয়। নির্বাসন উঠতেই তাঁকে ১৯৮২ এর বিশ্বকাপ স্কোয়াডে ডেকে নিয়েছিলেন ইতালির জাতীয় দলের তৎকালীন কোচ এনজো বিয়েরজোত। তাই নিয়ে ইতালির সংবাদপত্রে ব্যাপক সমালোচনাও হয়। সেই বিশ্বকাপের শুরুর দিকে খুব একটা ভাল খেলছিলেন না পাওলো। তবুও কোচ তাঁকেই খেলিয়ে যাচ্ছিলেন। তাই নিয়েও বিস্তর সমালোচনা। কিন্তু তারপরেই অন্য পাওলো রোসিকে দেখল ফুটবল বিশ্ব।
আসলে উইঙ্গার হলেও কেরিয়ারের দীর্ঘ সময় সেন্টার ফরোয়ার্ড হিসেবে খেলেছেন রোসি। বিরাশির বিশ্বকাপে তাঁর মহানায়কোচিত পারফরম্যান্স আজও মনে রেখেছে ইতালি। মূলত তিনি একাই ইতালিকে সেই বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন। ব্রাজিলের বিরুদ্ধে দুর্দান্ত হ্যাটট্রিক করে ৩-২ গোলে দলকে জেতান রোসি। সেমিফাইনালে পোল্যান্ডের বিরুদ্ধে করেন জোড়া গোল। ফাইনালে পশ্চিম জার্মানির বিরুদ্ধে ৩-১ গোলে জেতে ইতালি। সেই ম্যাচের প্রথম গোলও তাঁরই করা। ক্রিশ্চিয়ান ভিয়েরি এবং রবার্টো বাজ্জিওর সঙ্গে ইটালির হয়ে বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ ৯ গোল করার রেকর্ড তাঁরই দখলে। ইতালির হয়ে ৪৮ ম্যাচে করেছেন মোট ২০টি গোল। ক্লাব কেরিয়ারেও সমান সফল ছিলেন রোসি। জুভেন্তাস, এসি মিলানের মতো প্রথম সারির ক্লাবে খেলেছেন। বিভিন্ন ক্লাবের হয়ে মোট ৩৩৮ ম্যাচে ১৩৪টি গোল আছে তাঁর। দু’বার জিতেছেন সিরি আ লিগ। রয়েছে ইউরোপিয়ান ট্রফিও।
১৯৮২ সালে কার্যত একার হাতে ইটালিকে তৃতীয়বারের জন্য বিশ্বচ্যাম্পিয়ন করেন রোসি। বিশ্বকাপে সোনার বল, সোনার বুট এবং সেবছরের ব্যালন ডি ওর’, তিনটি পুরস্কার জিতেছিলেন পাওলো। তিনিই প্রথম ফুটবলার যিনি কিনা একই সঙ্গে এই তিনটি পুরস্কার জিতেছিলেন।
এমন এক কিংবদন্তি ফুটবলারের প্রয়ানে গোটা ফুটবল বিশ্বে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া।