ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন: দিকে দিকে নিভিছে দেউটি। কয়েক মাস আগেই চলে গিয়েছেন পিকে, চুনী। এবার চলে গেলেন অলিম্পিয়ান ফুটবলার নিখিল নন্দী। মঙ্গলবার দুপুরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় ১৯৫৬ অলিম্পিয়ান নিখিল নন্দীর। তাঁর মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর।
দীর্ঘদিন ধরে বয়সজনিত কারণে তিনি ভুগছিলেন। কয়েক মাস আগে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। পরেও সুস্থ হয়ে ফিরে এলেও প্রচন্ড দুর্বল হয়ে গিয়েছিলেন। সব সময় বিছানাতেই শুয়ে থাকতেন। যে মানুষটা মহামারি করোনা রোগ আসার আগেও দমদম সেন্ট্রাল জেলের মাঠে গিয়ে বাচ্চাদের ফুটবল শেখাতেন, সেই মানুষটি লকডাউন শুরুর পর থেকে বাড়িতেই সময় কাটাতেন।
১৯৫৬ মেলবোর্ন অলিম্পিক্সে তিনি ছিলেন ভারতীয় ফুটবল দলের অন্যতম সদস্য।
১৯৫৬ মেলবোর্ন অলিম্পিকে ভারত চতুর্থ হয়েছিল৷ অলিম্পিকে ভারতীয় ফুটবলে সেরা পারফরম্যান্সের সাক্ষী ছিলেন নিখিল নন্দী।
বহু আলোচিত ১৯৫৬ অলিম্পিকে ভারতের চতুর্থ হওয়ার পিছনেও বড় ভূমিকা ছিল নিখিলের৷ তিনিই ছিলেন এক ঐতিহাসিক বাঁকের সাক্ষী৷ ঠিক আগের অলিম্পিকে যুগোস্লাভিয়া ১০ -১ গোলে হারিয়েছিল ভারতকে৷ সেই সময় জাতীয় দলের কোচ রহিম সাহেব দলকে খেলাতেন ৩-২-৫ ছকে৷ বেশ ভয়েই তিনি যুগোস্লাভদের বিরুদ্ধে সেমিফাইনাল ম্যাচে ছক পাল্টে দেন। খেলান ৩-৩-৪ ফর্মেশনে। নিখিল নন্দীর মার্কিং করার ক্ষমতার জন্যই তাঁকে প্রথম টিমে আনা হয় মাঝমাঠে৷ ওই ম্যাচে ভারত ১-৪ হারে৷ কিন্তু তাঁর ফুটবলের রীতিমতো প্রশংসা করেছিলেন যুগস্লাভিয়ার স্ট্যানলি ম্যাথুস।
নিখিল নন্দী সেই বিরল পরিবারের লোক , যেখান থেকে চার ভাই ভারতীয় ফুটবল টিমে খেলেছেন৷ দুই ভাই খেলেছেন অলিম্পিকে। নিখিলবাবুর নেতৃত্ব এবং কোচিংয়ে ইস্টার্ন রেল দলে খেলেছেন পিকে বন্দ্যোপাধ্য্যায়ও৷
শুধু জাতীয় দলের জার্সি গায়েই নয়, ঘরোয়া ফুটবলে অনন্য কৃতিত্বের অধিকারী নিখিল নন্দী। ১৯৫৮-য় তাঁর নেতৃত্বেই দুই প্রধান ইস্ট-মোহনকে টপকে কলকাতা লিগ জেতে ইস্টার্ন রেল। কিংবদন্তী ফুটবলার নিখিল নন্দীর প্রয়াণে শোকের ছায়া ফুটবল মহলে। শোকজ্ঞাপন করেছেন ময়দানের বর্তমান ও প্রাক্তন ফুটবলাররা।