প্রভাব খাটিয়ে ক্ষমতায় আসতে চাই নাঃ অনির্বান দত্ত

0

◆সন্দীপ দে◆

উল্টে দেখুন হয়তো পাল্টে যাচ্ছে ক্রমশ। ফুটবলকে কেন্দ্র করে শুধু কলকাতা ময়দানেই নয়, সমগ্র বাংলার ফুটবল প্রশাসনে কি প্রতিবাদের মুখ হতে চলেছেন জয় ওরফে অনির্বান দত্ত? উত্তরটা সময়ই বলবে। সম্প্রতি রাজ‍্য ফুটবল নিয়ামক সংস্থা আইএফএ-এর কোষাধ‍্যক্ষ নির্বাচন নিয়ে ফুটবল সংসারে উত্তেজনা চরমে পৌঁছে গিয়েছে। যাঁর আগমনে এই কাণ্ডটি ঘটছে তিনি হলেন কিংবদন্তি ফুটবল প্রশাসক,আইএফএ-এর প্রাক্তন সচিব প্রদ‍্যোৎ দত্তর জৈষ্ঠ পুত্র অনির্বান দত্ত। তিনি কি সত‍্যিকারের প্রতিবাদের মুখ হতে যাচ্ছেন? শেষ পযর্ন্ত তিনি রণে ভঙ্গ দেবেন না তো? যদি লড়াই চালিয়ে যান তাহলে তাঁর পরিকল্পনা কি? দত্ত পরিবারের সদস‍্য হওয়ায় কতটা সুবিধা পাচ্ছেন? “ইনসাইড স্পোর্টস”-এর কাছে এমন সব প্রশ্নের উত্তর দিলেন অনির্বান দত্ত।

একদা সদ‍্য প্রয়াত সুভাষ ভৌমিকের প্রিয় পাত্র ছিলেন অনির্বান দত্ত (ফাইল ছবি)

প্রশ্নঃ কিছু দিন আগে পযর্ন্ত সবাই ধরেই নিয়েছিল,IFA-এর কোষাধ‍্যক্ষ পদের নির্বাচন হচ্ছেই।আর আপনার জেতাটা ছিল সময়ের অপেক্ষা। কিন্তু শেষ মুহূর্তে পাশার দান উল্টে গেল। এমনটা হবে ভাবতে পেরেছিলেন?

অনির্বান দত্তঃ না, ভাবতে পারিনি। আশা করেছিলাম লড়াই হবে। ক্লাবগুলি গণতান্ত্রিক ভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করে নিজেদের পছন্দের ব‍্যক্তিকে বেছে নেবেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়, অসাংবিধানিক পদ্ধতিতে পুরো প্রক্রিয়াটিকে আটকে দেওয়া হল। ১৮৯৩ সালের ঐতিহ্যবাহী, গৌরবময় সংস্থার ইতিহাস কালিমালিপ্ত হয়ে গেল।

প্রশ্নঃ IFA -তে আপনি যাতে ঢুকতে না পারেন তার জন‍্য শাসক গোষ্ঠীর একটা অংশের সক্রিয় ভূমিকা আছে বলে আপনি মনে করেন?

অনির্বান দত্তঃ শাসক গোষ্ঠী বলতে কি বোঝাচ্ছেন? শাসক গোষ্ঠী মানে তো একটা দল। সেই দলের সদস‍্যদের সঙ্গে কথা বলেই কিন্তু আমি লড়াইয়ে নেমেছি। তবে হ‍্যাঁ, দলেও মুষ্টিমেয় কয়েকজন থাকতেই পারে যাঁরা আমাকে আইএফএতে ঢুকতে দিতে চায় না।

প্রয়াত প্রদ‍্যোৎ দত্তর দুই ছেলে অনির্বান ও অনিনদর সঙ্গে সুব্রত দত্ত

প্রশ্নঃ ময়দানে আপনাকে সবাই ভদ্র,সজ্জন বলেই জানে,চেনে। বাবা প্রদ‍্যোৎ দত্তর মতোই মানুষের পাশেও দাঁড়ান। কিন্তু আপনার প্রতি শাসক গোষ্ঠীর “মুষ্টিমেয়” কয়েকজনের এত অ‍্যালার্জি কেন?

অনির্বান দত্তঃ এটা তো যার যার ব‍্যক্তিগত ব‍্যাপার। কারও ভাবনায় তো আমার নিয়ন্ত্রণ থাকতে পারে না। আমার মনে হয় ব‍্যক্তিগত অ‍্যালার্জির উর্দ্ধে উঠে আইএফএ-এর ও ফুটবল উন্নয়ন নিয়ে ভাবা দরকার। আমি বেশির ভাগ ক্লাব ও জেলা প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেই লড়াইয়ে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ওঁরা প্রত‍্যেকেই পরামর্শ দিয়েছেন। ওঁরা না বললে কি আর এগোতাম ভেবেছেন?

প্রশ্নঃ আপনি প্রদ‍্যোৎ দত্তর ছেলে। বিশ্বনাথ দত্তর ভাইপো। সুব্রত দত্তর ভাই। অনেকেই ভেবেছিল, লাল কার্পেটে হেঁটে আপনার IFA -তে প্রশাসক হিসেবে এন্ট্রি হবে। কিন্তু সেটা হল না। ময়দানের বিখ‍্যাত “দত্ত” পরিবারের প্রভাব থাকা সত্বেও IFA-তে ঢুকতে এত বাধা কেন?

অনির্বান দত্তঃ বাধা আছে কি নেই সেটা বোঝা যাবে নির্বাচন হলে। আমি জানি আমাদের দত্ত পরিবার বহু বছর ধরে ময়দানের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত। সবাই জানে সেই কথা। নতুন কিছু নয়। আমিও ২০ বছর বয়সে জর্জ টেলিগ্রাফ স্পোর্টস ক্লাবের প্রশাসনে এসেছি। আপনি বিশ্বাস করবেন কিনা জানি না, আমি প্রভাব খাটিয়ে ক্ষমতায় আসতে চাই না। আর চাই না বলেই কিন্তু বিভিন্ন ক্লাবে ছুটে গিয়েছি। ক্লাব প্রতিনিধিরা বলেছেন,”তুমি এসো। তুমিই পারবে”। তাঁদের পরামর্শ নিয়েই আমি লড়াইয়ে নেমেছি। ক্লাব যা চায়বে সেটাই গ্রহণযোগ্য হবে। ক্লাবই শেষ কথা।

জর্জের এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারি ও ভাইপো অধিরাজ দত্তর সঙ্গে অনির্বান

প্রশ্নঃ ময়দানের সবার একটাই কৌতুহল, আপনার এই লড়াইয়ে দাদা সুব্রত দত্ত কতটা সাহায‍্য করছেন? এই বিষয় নিয়ে সুব্রত দত্তর সঙ্গে আপনার কোনও কথা হয়েছে?

অনির্বান দত্তঃ ক্লাব প্রতিনিধিদের কাছে গিয়ে লড়াই করার সমর্থন পাওয়ার পরই আমি দাদার (সুব্রত দত্ত) কাছে গিয়েছিলাম। দাদার কাছেই আমি প্রশাসনের কাজ শিখেছি। দাদাকে তো বলতে হবেই। স্বাভাবিক ভাবেই দাদাকে আমার ইচ্ছের কথা খুলেই বলেছিলাম। সব শুনে দাদা আমাকে বলেছেন,”তুই বহুদিন মাঠ করছিস। তুই আইএফএ-এর প্রশাসনে আসতেই পারিস। কিন্তু একটা কথা বলে রাখি, আমি তোর জন‍্য কারও কাছে সভর্থন চাইতে পারব না। কারণ তুই আমার ভাই। আমি একটা পদে থেকে ভাইয়ের জন‍্য বললে স্বজনপোষনের প্রশ্ন উঠবে। সেই জন‍্য তোর লড়াইয়ে আমি নিরপেক্ষ থাকব। ক্লাব চাইলে তুই আসবি। আমার সমস‍্যা নেই”। দাদার পরামর্শ আমার ভালই লেগেছে।

সুব্রত দত্ত

প্রশ্নঃ যে কোনও নির্বাচনের সময় কিছু মানুষ ঢুকে পড়েন। নির্বাচন শেষ হলে আর তাদের দেখা যায় না। অনেকটা মরসুমি পাখির মতো। অনির্বান দত্তকে ৩৬৫ দিন পাওয়া যাবে? নাকি মরসুমি পাখি হবেন?

অনির্বান দত্তঃ (হাসতে হাসতে বললেন) দেখুন, গত ২৩ বছর ধরে মাঠ করছি। ফুটবল আমার কাছে প‍্যাশন। আমি কাজ করতে ভালবাসি। কাজ করতে চাই। আইএফএ-ভিতর থেকে হোক বাইরে থেকে হোক, কাজ করার সুযোগ আছে। তবে আইএফএ-এর স্বার্থ রক্ষা করাটাই মূল লক্ষ‍্য হলেও অন‍্যায় হলে আমি প্রতিবাদ করব। আমি মরসুমি পাখি হব, নাকি ৩৬৫ দিন ময়দানে থাকব সেটা তো ভবিষ্যতে দেখতে পাবেন। তার জন‍্য আপনাকে অপেক্ষা তো করতেই হবে।

প্রশ্নঃ যিনি আপনার বিরুদ্ধে প্রার্থী হিসেবে লড়াইয়ে নেমেছিলেন সেই রবীন ঘোষ এই প্রতিবেদককে একদিন এক আড্ডায় বলেছিলেন,”জয় ভদ্র ছেলে। ওকেই তো সামনের বছর সচিব হিসেবে আমরা তুলে ধরব। এখন কেন কোষাধ‍্যক্ষ হতে আসছে?” আপনি সত‍্যিই কি শুধু কোষাধ‍্যক্ষ পদে আসতে চায়ছেন?

অনির্বান দত্তঃ আপনি নিশ্চয় জানেন, IFA-এর ফিনান্স কমিটিতে আমার কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে। ফলে কোষাধ‍্যক্ষর কাজের ধারণা আমার আছে। কোষাধ‍্যক্ষের কাজটা ভালভাবেই করতে পারব বলে মনে করি।

প্রশ্নঃ ময়দানের ধারণা আপনিই নাকি ভবিষ‍্যতের IFA সচিব?

অনির্বান দত্তঃ কোষাধ‍্যক্ষের কাজটা করার ক্ষেত্রে আমার আত্মবিশ্বাস আছে। এই কাজটা করতে করতেই আইএফএ-এর সার্বিক কাজ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকতে পারব। তখন যদি মনে হয় আমি সচিবের যোগ‍্য তখন না হয় ভাববো। সত‍্যি কথা বলতে কি, আগে আমাকে কাজটা তো শিখতে হবে। দায়িত্ব পালন করতে হবে। যোগ‍্যতা অর্জন করতে হবে। এখন সচিব হয়ে ফেল করলে, শুধু আমি ফেল করব না, বাংলার ফুটবলও ফেল করবে। যে কোনও কাজ করতে হলে সুষ্ঠু পরিকল্পনার দরকার। আগে নিজেকে যোগ‍্য করে তুলতে হবে। কাজেই আমি এখনই সচিব নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছি না। আপাতত কোষাধ‍্যক্ষ নিয়েই ভাবতে চাই।

মাঠের মানুষ প্রদ‍্যোৎ দত্ত (ফাইল ছবি)

প্রশ্নঃ নাম না করে IFA সচিব আপনাকে একটু চিমটে কেটেছেন। বলেছেন, যখন ট্রেজার ছিল না, তখন কেউ IFA-তে আসতে চায়নি। এখন ট্রেজার আসছে তাই অনেকেই ট্রেজারার হতে আসছেন। কি বলবেন?

অনির্বান দত্তঃ (আবার হাসতে হাসতে উত্তর দিলেন) উনি তো অনেকের আসার কথা বলেছেন। শুধু আমার কথা বলেছেন কি? আমি এখন ফিনান্স কমিটিতে নেই। কাজেই আইএফএ-এর বর্তমান আর্থিক ব‍্যাপারটায় আমার স্বচ্ছ ধারণা নেই। তবে যতটুকু শুনেছি বর্তমানে আইএফএ-তে এখনও আর্থিক সমস‍্যা আছে। স্টাফেদের স‍্যালারির জন‍্য সচিব নাকি টাকা ধার দিয়েছেন। তাই যদি হয় তাহলে কোথায় ট্রেজার আছে আমাকে বলতে পারেন? আর সত‍্যি যদি ট্রেজার থেকে থাকে তাহলে আমি খুব খুশিই হব।

প্রশ্নঃ সচিব জয়দীপ মুখার্জির দাবি, আপনাকে নাকি এখনই সচিবের চেয়ার ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন? এমনও শুনছি অন‍্য পদের অফারও নাকি আছে? এটাকি সত‍্যি?

অনির্বান দত্তঃ হ‍্যাঁ, আমাকে বলেছিলেন। কিন্তু আমি এখনই সচিব পদে বসতে চাই না। কেন বসতে চাই না তা একটু আগেই আপনার এক প্রশ্নের উত্তরে বলেছি। আর কোষাধ‍্যক্ষর পদে কেন আসতে চাইছি সেটাও আপনাকে আলোকপাত করেছি।

প্রশ্নঃ সচিব বলছেন,আপনি খুব ভাল মনের মানুষ। আপনার সঙ্গে ভাল সম্পর্ক। কিন্তু আপনাকে কিছু মানুষ ভুল পরামর্শ দিচ্ছেন।

অনির্বান দত্তঃ আমার প্রশংসা করার জন‍্য প্রথমেই সচিবকে ধন‍্যবাদ জানাই। আর যারা আমাকে পরামর্শ দিচ্ছেন তারা ভুল বলছেন, নাকি ঠিক বলছেন, সে তো ভবিষ্যতেই জানা যাবে। বিভিন্ন ক্লাব প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলেছি,তাঁদের পরামর্শ নিয়েছি। তাঁরাই আমাকে তাদের মুখপত্র হিসেবে বেছে নিয়েছেন। তাঁদের সমস‍্যার কথা তুলে ধরাটাই আমার কর্তব‍্য।

বিশ্বনাথ দত্ত

প্রশ্নঃ সচিবের অনুযোগ, আইএফএ নিয়ে কিছু ভুল বোঝাবুঝি থাকতেই পারে। কিছু বলার থাকলে সচিবকেই তো আপনি ফোন করতে পারেন। সেটা না করে আগে মিডিয়া, সোসাল মিডিয়ায় জানাচ্ছেন কেন?

অনির্বান দত্তঃ আমার মতামত সচিবকে আগেই জানিয়েছিলাম। কিন্তু আমার মতামত জানার পরও উনি নিজের মতো করে চলছেন। প্রতিবাদ পত্র যখন লিখছি তখন সবার জানা উচিৎ। এটা কিন্তু প্রেম পত্র নয়। প্রতিবাদ লুকিয়ে করা যায় না। প্রকাশ‍্যেই করতে হয়। আমার সঙ্গে যে সব ক্লাবগুলি আছে তাদের আড়াল করে প্রতিবাদ করব কেন? আমি আপনাকে একটু আগেই বলেছি, আমি ক্লাব গুলির মুখপত্র।

প্রশ্নঃ আপনার বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ আছে। প‍্যানডামিক সিচুয়েশেনের কারণ দেখিয়ে ২২ জানুয়ারি আপনি SGM বাতিলের দাবি জানিয়েছিলেন। আবার ২৬ জানুয়ারি এই প‍্যানডামিক সিচুয়েশনেই কোষাধ‍্যক্ষের নির্বাচন চায়লেন। যা পরস্পর বিরোধী। অভিযোগ আইএফএ সচিব জয়দীপ মুখার্জির।

অনির্বান দত্তঃ ২২ জানুয়ারি প্রথম চিঠি দিয়েছিলাম, করোনা বিধিনিষেধ লঙ্ঘন করে SGM করা ঠিক হবে না। কারণ ওই মিটিংয়ে ৩০০ – এর বেশি সদস‍্য হাজির হবে। রাজ‍্য সরকার পরিস্কার জানিয়ছে, ২০০ বেশি মানুষ উপস্থিত হতে পারবে না। আর নির্বাচন চেয়ে দ্বিতীয় চিঠি দিয়ে কোনও ভুল করিনি। ভোটারের সংখ‍্যা ৬০। এঁদের সঙ্গে আরও কিছু নিয়ে সব মিলিয়ে ৭০-৮০ জন হবে। রাজ‍্য সরকারের গাইডলাইন মেনে ২০০ জনের উপস্থিতির থেকে যা অনেক কম। ৭০-৮০ জনকে নিয়ে নির্বাচন করা যেত না? ভুলটা কি বলেছি?

প্রশ্নঃ ২০১৯ সালে আপনি IFA-এর ফিনান্স কমিটিতে ছিলেন। সেই সময় ভুল গুলি তুলে ধরতেন। সোচ্চারও হতেন। আবার পরামর্শও দিতেন। কিন্তু পরের টার্মে আর আপনাকে ফিনান্স কমিটিতে দেখা যায়নি। মিটিংয়ে ভুল ধরতেন, সোচ্চার হতেন বলেই কি আপনাকে ফিনান্স কমিটি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল?

অনির্বান দত্তঃ আইএফএ-বর্তমান ফিনান্স কমিটিতে আমি কেন নেই সেই ব‍্যাপারে কিছুই বলতে পারব না। আমি শুধু ভুল ধরিনি, সমস‍্যার সমাধানের কথাও বলেছি। সংস্থার কমিটি সুষ্ঠুভাবে চালানোর জন‍্য সবাইকে সচেষ্ট হতে হবে। এটা সংশ্লিষ্ট সদস‍্যের কর্তব‍্যর মধ‍্যে পড়ে। এরপরও যদি কারও খারাপ লেগে থাকে তাহলে আমার কিছু করার নেই।

প্রশ্নঃ বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে, শাসক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নাকি ময়দানের একটা বড় অংশ বিরক্ত। তাদের কাজে অসন্তুষ্ট। কিন্তু সরাসরি কেউ মুখ খুলতে চান না। তারা এমন একজনকে চায়ছেন যিনি সামনে থেকে নেতৃত্ব দেবেন। আপনাকেই নেতা হিসেবে চায়ছেন। আপনি সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে তৈরি তো?

অনির্বান দত্তঃ আমি তো আপনাকে আগেই বললাম, বহু ক্লাব আমাকে বলেছে। তাঁদের সমস‍্যা তুলে ধরাটাই আমার কাজ। একটা কমিউনিকেশন গ‍্যাপ তৈরি তো হয়েছে। আমি ব্রিজের কাজটা করতে চাই। আমি স্বীকার করছি, আমি ক্লাবগুলির মুখপত্র হতে চাই। আমি তৈরিই আছি।

জর্জ তাঁবুতে বিভিন্ন ক্লাব কর্তাদের সঙ্গে অনির্বান দত্ত

প্রশ্নঃ আপাতত দৃষ্টিতে ময়দানে সম্মুখযুদ্ধে জয় বনাম জয়দীপ। প্রথম রাউন্ডে জিতেছেন জয়দীপ। দ্বিতীয় রাউন্ডে জিততে পারবেন?

অনির্বান দত্তঃ আমি তো সচিব পদে নির্বাচনে লড়াই করছি না। তাহলে জয়দীপের সঙ্গে হার জিতের প্রশ্ন আসছে কেন? এটা কোনও মারামারি নয়। বক্সিং নয়। এটা মানুষের কাজ করার জায়গা। বাংলার ফুটবলের স্বার্থে সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। কে ক্ষমতায় আসবে, সে তো ঠিক করবে ক্লাব প্রতিনিধিরা। এটাই গণতন্ত্র।

প্রশ্নঃ ফুটবল নিয়ে আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?

অনির্বান দত্তঃ কোষাধ‍্যক্ষ পরিকল্পনায় বলতে পারি, IFA -এর ফাইনান্সিয়াল প্ল‍্যান তৈরি হওয়া উচিত। IFA যে পরিকল্পনা নিয়েছে বা নিতে যাচ্ছে তারও বাজেট থাকা উচিত এবং পুরো বিষয়টা ফিনান্স কমিটিতে আলোচনা করা উচিত। অ‍্যানুয়াল বাজেট করা উচিত। এই বাজেটের নিয়মিত রিভিউ করাও প্রয়োজন। আর্থিক স্বচ্ছতা থাকাটা ভীষণ জরুরি। ক্লাবদের দেনা পাওনার ক্ষেত্রে স্বচ্ছ ধারণা থাকার ব‍্যবস্থা করতে হবে। পরিকল্পনা মাফিক নির্দিষ্ট আর্থিক বাজেট থাকতে হবে। ক্লাবগুলিকে অন লাইনে পেমেন্ট করাটা বাঞ্জনীয়।

প্রশ্নঃ শেষ প্রশ্ন, মাঠের লড়াইয়ে আপনার অনুপ্রেরণা কে?

অনির্বান দত্তঃ দুজনের কথা বলব। প্রথমত, মাঠ করার ক্ষেত্রে আমার অনুপ্রেরণা আমার বাবা প্রদ‍্যোৎ দত্ত। কাজের মধ‍্যে দিয়ে বাবা অসংখ‍্য মানুষের ভালবাসা পেয়েছেন। মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে বাবাকে ভালবেসে এসেছেন। যখন মানুষের পাশে থেকে মানুষের জন‍্য কাজ করবেন, তখন তাঁদের ভালবাসা পাবেন। দ্বিতীয়ত, মুখ‍্যমন্ত্রী মমতা বন্দ‍্যোপাধ‍্যায়। প্রায় তিন দশক তিনি লড়াই করে গিয়েছেন, তার পর এই জায়গায় এসেছেন। তাঁর লড়াইয়ের জার্নিটায় অনেক কঠিন লড়াই আছে। তিনি কখনও হাল ছাড়েননি। এটাই আমাকে অনুপ্রাণিত করে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here