◆রবিবারের আইএফএ গভর্নিং বডির সভায় আসেননি অনেক সদস্যই◆
ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন : ‘পিসফুল’ গভর্নিং বডির বৈঠকে যা হওয়ার তাই হল। গত এক সপ্তাহ আগে যে বিষয় নিয়ে রাজ্য ফুটবলের নিয়ামক সংস্থায় উত্তেজনার সূষ্টি হয়েছিল তা রবিবার মূহুর্ত্তের মধ্যেই নিস্পত্তি হয়ে গেল। অর্থাৎ কলকাতা লিগের প্রথম ডিভিশন থেকে প্রিমিয়ারে উঠবে চারটি দল। আর প্রথম ডিভিশন থেকে দ্বিতীয় ডিভিশনে নামবে মাত্র দুটি দল। আজ,রবিবার বিকেলে আইএফএ-এর গভর্নিং বডির সদস্যদের মত নিয়েই আসন্ন মরসুমে এই নিয়ম লাগু হবে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, প্রিমিয়ার ডিভিশনের ‘এ’ ও ‘বি’ মিলিয়ে দেওয়ার পর কোনও কোনও কর্তা আড়ালে ডায়মন্ডহারবার এফসির প্রসঙ্গ তুলেছেন। কিন্তু প্রকাশ্যে সরকারি ভাবে সেই প্রসঙ্গকে প্রতিবাদে রুপান্তরিত করার সাহস হয়তো পাননি সেই সব ‘কোনও কোনও কর্তা।’ তবে এই সুযোগে প্রথম ডিভিশনের কিছু কর্তা প্রিমিয়ারে প্রোমোশন দলের সংখ্যা বাড়ানোর দাবি জানিয়ে হৈচৈ ফেলে দিয়েছিলেন। তাঁদের লক্ষ্য একটাই,প্রোমোশন দলের সংখ্যা বাড়িয়ে নিতে পারলে সামনের বছর সহজেই প্রিমিয়ারে খেলার সুযোগ চলে আসবে। এই ইস্যুতে সামনে চলে এলো চার নেতা-মন্ত্রীর ক্লাব। কঠিন চাপে পড়লেও শিড়দাঁড়া শক্ত রেখেই লড়াই করে গিয়েছিলেপ আইএফএ সচিব অনির্বান দত্ত। পাশে পেয়েছিলেন সভাপতি অজিত ব্যানার্জিকেও।
অনির্বান দত্ত ও অজিত ব্যানার্জি চেয়েছিলেন কলকাতা লিগের কাঠামোটা পিরামিডের আকার দিতে। তার জন্য অন্তত তিন বছর সময় লাগবে। সেই লক্ষ্য নিয়ে বিভিন্ন ডিভিশনের দলের ওঠানামার সংখ্যা ঠিক করা হয়েছে। আইএফএ সচিব-সভাপতি চেয়েছিলেন প্রিমিয়ার থেকে এবার চারটি দল নামবে আর প্রথম ডিভিশন থেকে দুটি দল প্রিমিয়ারে উঠবে। সেই ভাবনায় বাধা পায় প্রথম ডিভিশনের কিছু কর্তার অতি সক্রিয়তায়। তাঁদের দাবি ৬ টা দল প্রিমিয়ারে উঠুক আর প্রথম ডিভিশন থেকে নামুক দুটি দল। গত মঙ্গলবার প্রথম ডিভিশনের ক্লাব কর্তাদের নিয়ে বৈঠকে হাজির হয়েছিলেন বিধায়ক মদন মিত্র। ছিলেন তৃণমৃলের স্পোর্টস সেলের চেয়ারম্যান স্বপন ব্যানার্জি। ঝড় ওঠে বৈঠকে। সচিব,সভাপতি প্রস্তাব দেন দল চারটি উঠুক আর দ্বিতীয় ডিভিশনে নামুক চারটি দল। মানতে চাননি মদন মিত্ররা। তাতেও রাজি করানো যায়নি সচিব অনির্বান দত্তকে। তিনি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য গভর্নিং বডির সভায় বিষয়টি ফেলেন।
গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বৈঠক শেষে ক্রীড়ামন্ত্রীর ভাই, আইএফএ-এর সহসভাপতি এবং সুরুচি ক্লাবের কর্তা স্বরূপ বিশ্বাস মদন মিত্রকে পাশে নিয়ে সাংবাদিকদের কাছে বলেছিলেন,”সচিব মনে করলেই আজ দাবিটা মেনে নিতে পারতেন। কিন্তু মানলেন না।” তাঁর কথার অর্থ পরিস্কার, এত চাপের কাছে অনির্বানকে বাগে আনা যায়নি। অনির্বান সেদিন বলেছিলেন, ক্লাবগুলির দাবির সঙ্গে সহমত হতে সমস্যা হচ্ছে। যা হবে গভর্নিং বডির সদস্যরাই ঠিক করুন। তাই বিষয়টা গভর্নিং বডিতে প্লেস করেছি।” আজ, রবিবার সেই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিলেন গভর্নিং বডির উপস্থিত ২৩ জন সদস্য (৯ জন অফিস বেয়ারার্সদের নিয়ে ২৩ জন)।
পারিবারিক কারণে সভাপতি অজিত ব্যানার্জি এদিনের সভায় উপস্থিত থাকতে পারেননি। সভা পরিচালনা করেন আইএফএ চেয়ারম্যান সুব্রত দত্ত। বিভিন্ন এজেন্ডার মধ্যে এই দল ওঠা নামার বিষয়টা তুলতেই সভার উপস্থিত সদস্যদের মধ্যে চার-পাঁচ জন সদস্য বলে উঠলেন,”চার-দুই, চার-দুই।” সভার মূল আকর্ষণীয় বিষয়ের সিদ্ধান্ত নিতে সময় লাগল মাত্র ৩৫ সেকেন্ড। নিছকই ‘পিসফুল’ বৈঠক নাকি ‘সেটিং’ বৈঠক? ‘সেটিং’ বলেই কি এদিনের সভায় একাধিক সদস্য গরহাজির থাকলেন? এই বিষয়ে তথ্যগত কোনও প্রমাণ নেই। কাজেই যে, যেমন ভাবে দেখবেন,বুঝবেন। বুঝে নিতে হবে।
চার-চার করতে না পেরে কি খারাপ লাগছে? উত্তরে আইএফএ সচিব অনির্বান দত্ত জানান,”ভাল লাগা,খারাপ লাগা আপেক্ষিক ব্যাপার। একটা লক্ষ্য রেখে এগোতে চাইছি। গভর্নিং বডির সভার সদস্যরা যে রায় দিয়েছেন সেটাই মানতে হবে। সমস্যা কোথায়?”