প্রতিষ্ঠা দিবসে ঘুরে দাঁড়নোর শপথ কলকাতা ক্রীড়া সাংবাদিক ক্লাবের

0

◆ঝুলন গোস্বামীর হাতে ‘লাইফটাইম অ‍্যাচিভমেন্ট’পুরস্কার তুলে দিচ্ছেন ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। সঙ্গে সিএসজেসির সভাপতি সুভেন রাহা ও ‘বানিয়ান ট্রি গ্রুপ’-এর কর্ণধার প্রবীর কুমার চৌধুরী। সোমবার সিএসজেসি ক্লাব তাঁবুতে◆

ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন : এ যেন নতুন করে পথ চলা শুরু কলকাতা ক্রীড়া সাংবাদিক ক্লাবের (সিএসজেসি)। বাংলার ক্রীড়া সাংবাদিকদের নিয়ে গড়া একমাত্র সংগঠিত ক্লাব নতুন করে ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া। আর সেই ঘুরে দাঁড়ানোর জন‍্যই সোমবার ক্লাবের প্রতিষ্ঠা দিবসে ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের উপস্থিতিতে নতুন করে শপথ ক্লাবের সকল সদস‍্যরা।

সিএসজেসির ওয়েবসাইট উদ্বোধন করছেন ঝুলন গোস্বামী ও ক্রীড়ামন্ত্রী

৭০ বছর আগে দৈনিক কাগজের ক্রীড়া সাংবাদিকরা নিজেদের একটা সংগঠন তৈরি করেন। আজকের ‘কলকাতা ক্রীড়া সাংবাদিক ক্লাব’ – এর নামকরণ তখনও হয়নি। প্রবীন ক্রীড়া সাংবাদিক মানিক ব‍্যানার্জি ও এস সাবানায়েকন কাছে জানা গেল, ১৯৫২ সালে প্রথম ক্রীড়া সাংবাদিকরা একটি ক্লাব গড়েন। যার নাম ছিল ”পেন অ‍্যান্ড ইঙ্ক”। পরে নাম বদলে করা হয় ”ওয়েষ্ট বেঙ্গল স্পোর্টস জার্নালিস্ট অ‍্যাসোসিয়েশন।” ১৯৫২ সালে প্রথম সচিব ছিলেন প্রখ‍্যাত ক্রীড়া সাংবাদিক রাখাল ভট্টাচার্য। সভাপতি ছিলেন পৃত্থীশ্বর মিশ্র। পরবর্তী কালে নিজস্ব ক্লাব তাঁবু গড়ার জন‍্য রাখালবাবুদের উত্তরসূরীরা অক্লান্ত চেষ্টা করেন। বিশেষ করে সন্তোষ কুমার শীলের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল। তাঁর সঙ্গে সক্রিয় ভূমিকা ছিল শ‍্যামসুন্দর ঘোষ, দিপালি কুমার ঘোষ,ত্রিদিব মিশ্র, বিপুল ব‍্যানার্জির মতো সাংবাদিকদের।

সিএসজেসিকে শুভেচ্ছা জানিয়ে গেলেন কলকাতা প্রেস ক্লাবের কর্তা অরিজিৎ দত্ত ও নিতাই মালাকার

তখন ক্রীড়া সাংবাদিকদের ময়দানে নিজস্ব কোনও ক্লাব তাঁবু ছিল না। শুরুর দিকে খিদিরপুর স্পোর্টিং ক্লাবে বসতেন সেই সময়কার ক্রীড়া সাংবাদিকরা। পরে ভবানীপুর ক্লাবে একটা অস্থায়ী বসার ব‍্যবস্থা হয়। ততদিনে “ওয়েস্ট বেঙ্গল স্পোর্টস জার্নালিস্ট অ‍্যাসোসিয়েশন”-এর নাম বদলে করা হয় “কলকাতা ক্রীড়া সাংবাদিক ক্লাব।”

১৯৭৭ সালে নিজস্ব ক্লাব তাঁবু গড়ার জন‍্য ময়দানের জমির জন‍্য আবেদন করা হয়। সেই সময় ক্লাব তাঁবুর জমি পাওয়ার ক্ষেত্রে তৎকালীন মন্ত্রী ও ক্রীড়াপ্রেমী যতীন চক্রবর্তীর বিরাট ভূমিকা ছিল। ক্লাব গড়ার অনুমতি পেয়ে কাজও শুরু হয়। ১৯৮০ সালে ক্লাব তাঁবুর কাজ শেষ হয়। উদ্বোধন হয় ১৯৮২ সালে। উদ্বোধন করেছিলেন রাজ‍্যের ত‍ৎকালীন মুখ‍্যমন্ত্রী জ‍্যোতি বসু। তারপর থেকে কলকাতা ক্রীড়া সাংবাদিক ক্লাব নিজস্ব গতিতেই এগিয়ে চলেছে। তবে গত তিন বছরে খুবই খারাপ অবস্থা তৈরি হয়েছিল। এই বছর নতুন কমিটির সদস‍্যরা এসে সকল ক্রীড়া সাংবাদিকদের একত্রিত করে নতুন করে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। গত চার মাসে ক্লাব তাঁবুর নতুন করে সংস্করণ হয়েছে। মাতঙ্গিনী হাজরার স্ট‍্যাচুর সামনে ফের মাথা উঁচু করে,উজ্জ্বল হয়ে দাঁড়াতে পেরেছে বাংলার একমাত্র ক্রীড়া সাংবাদিকদের ক্লাব। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ক্রীড়া সাংবাদিকদের এই ক্লাবকে নতুন করে সাজিয়ে তোলার দায়িত্ব নিয়ে স্বতঃস্ফূর্তভাবে এগিয়ে এসেছেন ‘বানিয়ন ট্রি গ্রুপ’-এর কর্ণধার প্রবীর কুমার চৌধুরী।

কিছুদিন আগে ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলি ও ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ক্লাব তাঁবুর উদ্বোধন করে গিয়েছেন। আর আজ,সোমবার “কলকাতা ক্রীড়া সাংবাদিক ক্লাব”-এর প্রতিষ্ঠা দিবসে হাজির থেকে সবরকম ভাবে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে গেলেন ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। এদিন ছোট্ট অনুষ্ঠানের মধ‍্যে দিয়ে প্রতিষ্ঠা দিবস পালন করা হয়। এই অনুষ্ঠানেই সদ‍্য অবসর নেওয়া ভারতের ক্রিকেটার ঝুলন গোস্বামীকে ক্লাবের পক্ষ থেকে ‘লাইফটাইম অ‍্যাচিভমেন্ট’ পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

মেডিকার উদ‍্যোগে সিএসজেসিতে স্বাস্থ‍্য পরীক্ষা শিবিরের একটি মুহূর্ত

আবেগাপ্লুত ঝুলন বলেন,”ক্রীড়া সাংবাদিকরা আমাকে অনেক সাহায‍্য করেছেন। এই সম্মান আমার কাছে বিরাট প্রাপ্তি। কয়েক বছর আগে আমি আপনাদের ক্লাবে এসেছিলাম। তখন খুব খারাপ অবস্থা ছিল। এবার এসে দেখতে ভাল লাগছে। পুরোটাই পাল্টে গেছে। আপনারা এই ভাবেই এগিয়ে চলুন।”

ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসও সব সময় ক্লাবের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। এদিন প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষ্যে মেডিকা হাসপাতালের পক্ষ থেকে বিনামূল‍্যে সোমবার সকাল থেকেই স্বাস্থ‍্য পরীক্ষা শিবির করে। হার্টের যাবতীয় পরীক্ষা ছাড়াও লিপিড প্রোফাইল সহ চিকিৎসকরা পরামর্শ দেন। ক্লাবের সদস‍্য ও তাদের পরিবারের সদস‍্য মিলিয়ে মোট ৫৭ জন স্বাস্থ‍্য পরীক্ষা করিয়েছেন। এদিন কলকাতা প্রেস ক্লাবের পক্ষ থেকেও কলকাতা ক্রীড়া সাংবাদিক ক্লাবকে শুভেচ্ছা জানায়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here