◆বাংলা দল◆
◆বাংলা – ১( সুরজিৎ)
◆সার্ভিসেস – ০
ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন : ধারে,ভারে অনেক শক্তিশালী দল সার্ভিসেস। এমন এক কঠিন ম্যাচে বাংলা মাঠে নামার চার ঘন্টা আগে ভারতের প্রাক্তন ফুটবলার অমিত ভদ্র ম্যাচের ভবিষ্যৎ নিয়ে ‘ইনসাইড স্পোর্টস’-এর এই প্রতিবেদকের কথা হচ্ছিল। অমিত ভদ্র অভয় দিয়ে বলেছিলেন,”সার্ভিসেস কঠিন দল তাতে কোনও সন্দেহ নেই। বিশ্বজিতের সঙ্গে আমার ফোনে নিয়মিত যোগাযোগ আছে। দেখিস, আজ বাংলা জিতে ফাইনালে চলে যাবে।”
সার্ভিসেস সত্যিই শক্তিশালী দল। যেমন গতি তেমন শারীরিক সক্ষমতা সঙ্গে পাসিং ফুটবল। ম্যাচের প্রথম পনেরো মিনিট সার্ভিসেসের দাপট দেখে মনে হচ্ছিল বাংলা তিন-চার গোলে হেরেই মাঠ ছাড়বে। অমিত ভদ্র এই বাংলা দলটাকে নিয়ে বেশ চর্চার মধ্যে আছেন। নিজের খেলোয়াড়ি অভিজ্ঞতা দিয়েই নিজের ভবিষ্যতবানী করেছিলেন। তাঁর কথায় সত্যি হল। আমেদাবাদে ন্যাশনাল গেমসের সেমিফাইনালে সার্ভিসেসকে ১-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালে পৌঁছে গেল বাংলা। ২৫ মিনিটে জয়সৃচক গোলটি করেছেন সুরজিৎ হাঁসদা। ফাইনালে বাংলার প্রতিপক্ষ কেরল।
গ্রুপ লিগের তিনটি ম্যাচে জিতে ছন্দেই আছে বাংলা। কোচ বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য তবু সতর্ক ছিলেন। প্রথমার্ধের শুরু থেকেই রক্ষনাত্মক ফুটবল খেলিয়েছেন। প্রথমে প্রতিপক্ষ সার্ভিসেসকে একটু দেখে নিয়ে প্রতিআক্রমণে উঠে গিয়েছেন সুরজিৎ,পিন্টু, তারক, বাসুদেবরা। সেই প্রতি আক্রমণেই ম্যাচের একমাত্র গোলটি করে ফেলেন সুরজিৎ হাঁসদা। তার গোল লক্ষ্য করে শট প্রতিপক্ষের এক ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে জালে জড়িয়ে যায়। গোলটা খেতেই একটু যেন চাপে পড়ে যায় সার্ভিসেস। বাংলা তখন প্রতিআক্রমণের ঝাঁজটা বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু কখনই নিজেদের রক্ষনকে আলগা হতে দেয়নি বাংলার ছেলেরা।
ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে বাংলা একটু বেশি রক্ষণাত্মক হয়ে পড়ে। ফলে সার্ভিসেসের মুহুর্মুহ আক্রমণের ঝড় আছড়ে পড়ছিল বাংলার বক্সে। সেনার লড়াইকে থামাতে বহুবার টাফ ফুটবল খেলতেও পিছপা হয়নি বাংলা। তার ফলও পেয়েছে হাতে নাতে। এই ম্যাচে অমিত,তারক, বাসুদেব,আকাশ,দীপেশ এবং পিন্টু মাহাতো – সব মিলিয়ে বাংলার ৬ ফুটবলার হলুদ কার্ড দেখেছেন। চোট পেয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে সুরজিতকে। দ্বিতীয়ার্ধে সার্ভিসেস তো গোল করে দিয়েছিল। কিন্তু অফ সাইডের জন্য সেই গোল বাতিল হয়ে যায়। গোলটি বৈধ হলে বাংলার কপালে কি ছিল তা অনুমান করা যায়। মাত্র এক গোলে লিড নিয়ে দ্বিতীয়ার্ধের পুরোটাই কেন এত রক্ষণাত্মক হবে বাংলা? কোচ বিশ্বজিতের ট্যাকটিক্যাল গেম? হয়তো। তবে এক ঝাঁক বাঙালি ফুটবলারের বিপক্ষের আক্রমণ রুখে দেওয়ার কঠিন লড়াইকে সেলাম করতেই হবে। ৯০ মিনিট শুরু হতেই ফোর্থ রেফারি অতিরিক্ত সময় দেখালেন ১৩ মিনিট। কোনও ভুল করেননি। গোলকিপার রাজা থেকে তারক, নরহরিরা যেভাবে সময় নষ্ট করেছেন (এটাও পার্ট অফ দ্য গেম) তাতে রেফারির অতিরিক্ত সময় নিয়ে প্রশ্ন না ওঠায় উচিত।
কয়েক মাস আগে সন্তোষ ট্রফির ফাইনালে কেরলের কাছে হারতে হয়েছিল বাংলাকে। এবার কি সেই প্রতিশোধ নিতে পারবেন কোচ বিশ্বজিতের ছেলেরা? পর পর চার ম্যাচ জিতে ছন্দে বাংলা। তাতে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু মিস পাস এবং অতিরিক্ত রক্ষণাত্মক ফুটবল দেখে চিন্তা থেকেই গেল। কারণ এবার প্রতিপক্ষ কেরল। সার্ভিসেসের থেকেও শক্তিশালী।তবে কোচটার নাম বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য। ভরসা করা যেতেই পারে।