নতুন করে ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া ওয়েস্ট বেঙ্গল ডিস্ট্রিক্ট স্পোর্টস ফেডারেশন

0

ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন : প্রায় থমকে থাকা সংস্থা। পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত জেলা ক্রীড়া সংস্থাদের প্রতিনিধিদের নিয়েই এই সংস্থা – ওয়েস্ট বেঙ্গল ডিস্ট্রিক্ট স্পোর্টস ফেডারেশন (WBDSF)। নানান প্রতিবন্ধকতার মধ‍্যে চলতে চলতে নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর মরিয়া চেষ্টায় WBDSF-এর কর্তারা। আজ,বৃহস্পতিবার দুপুরে কলকাতা ক্রীড়া সাংবাদিক ক্লাব তাঁবুতে নিজেদের বার্ষিক সাধারণ সভায় ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিলেন WBDSF এর কর্তারা।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য,গত কয়েক বছর ধরেই এই WBDSF সংস্থার সক্রিয়তায় ভাটা পড়েছে। কোনও রকমে চলছে। দুই বছর আগে এই সংস্থার সভাপতি ছিলেন প্রাক্তন ফুটবলার তনুময় বসু। তাঁকে নিয়ে WBDSF -এর কমিটি মেম্বারদের মধ‍্যে বিস্তর বিতর্কের সৃষ্টি হয়। বিতর্ক মেটাতে ২০২২ সালের ১৯ জুন মালদা শহরে সভা ডেকে সংস্থার নতুন কমিটি গঠন করা হয়। তনুময় বসুর জায়গায় নতুন সভাপতি নিযুক্ত হন রায়গঞ্জের সুদীপ বিশ্বাস। নতুন কমিটি হওয়ার পর এই সংস্থা দুটি টুর্নামেন্ট করেছে। বিভিন্ন জেলা ক্রীড়া সংস্থা খেলাধূলা নিয়ে যেমন সক্রিয় ভূমিকা দেখা যায়,সেই ভাবে খেলাধূলায় WBDSF -এর ভূমিকা খুবই সীমিত। তার বড় কারণ অবশ‍্যই আর্থিক সমস‍্যা। সংস্থার কর্তারা নিজস্ব কোনও অফিস করতে পারেননি। দুই একটা টুর্নামেন্ট ছাড়া সেই ভাবে জেলার খেলাধূলার উন্নয়নে কোনও পরিকল্পনা গ্রহণ করতে পারেননি। তার বড় কারণ সেই আর্থিক সমস‍্যা।

গৌতম গোস্বামী যখন WBDSF -এর সচিব ছিলেন তখন প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলির সাহায্য নিয়ে মোটা টাকার স্পনসর এনেছিলেন। প্রসঙ্গত,সৌরভ সেই সময় থেকেই এই সংস্থার পেট্রন-ইন- চিফ পদে আছেন। যদিও স‍ৌরভের দেওয়া সেই স্পনসর আর নেই। পরবর্তীকালে আর নতুন কোনও স্পনসরও সংস্থায় দেখা যায়নি। সংস্থার পেট্রন হিসেবে আছেন ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস।

তাহলে এই সংস্থার ভবিষ্যৎ কি? এভাবেই চলবে? নাকি নতুন করে বদলে যাবে? এই ব‍্যাপারে সংস্থার সচিব দেবব্রত সাহা ‘ইনসাইড স্পোর্টস’কে বলছিলেন,”কয়েক বছর ধরে নানান কারণে আমাদের সংস্থা ভাল ভাবে চলেনি ঠিকই। ২০২২ সালে যখন আমাদের নতুন কমিটি হল তখন বিদায়ী সভাপতি তনুময় বসু WBDSF -এর বিরুদ্ধে মামলা করে সংস্থাকে অসহযোগিতাই করেছেন। এটা আমরা আশা করিনি। তিনি চলে যাওয়ার পর মামলা করেছিলেন। সেই সব সমস‍্যা মুক্ত হতেই তো একটা বছর চলে গেল। ওই এক বছরে সংস্থার ব‍্যাঙ্ক অ‍্যাকাউন্টে আমরা কোনও লেনদেন করতে পারিনি। এখন সেই সব সমস‍্যা মিটে গিয়েছে। তবে আর্থিক সমস‍্যাটা আছেই। আমরা অনূর্ধ্ব-১৫ ফুটবল টুর্নামেন্ট করতে পেরেছি। এবার আমরা সিনিয়র মহিলা ফুটবল টুর্নামেন্ট করতে চলেছি। খেলার মধ‍্যে থাকলেই সংস্থা থাকবে। সেটাকে লক্ষ‍্য রেখেই আশাকরছি আমরা সুষ্ঠুভাবে এগোতে পারব।”

WBDSF সংস্থাকে ভাল জায়গায় ফেরাতে বেশ কিছু উদ‍্যোগ নিয়েছেন কর্তারা। যেমন, (এক), আগামী দিনে আর্থিক পরিস্থিতি সুদৃঢ় করা। (দুই), আইএফএ – র সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রেখে ফুটবল প্রতিযোগিতার সংখ‍্যা ও গুনগত মানের প্রচেষ্টা করা।
(তিন), যুগোপযোগি সংবিধান পরিমার্জন ও নিবন্ধীকরনে সচেষ্ট হওয়া। (চার), অনাদায়ী অর্থ সংগ্রহের প্রচেষ্টা। আগামী দিনে সাংগঠনিকভাবে একটি প্ল‍্যাটফর্ম গঠনের চেষ্টা করা হচ্ছে।

WBDSF – এর কর্তারা সাম্প্রতিক অতীতের কালিমা মুছে সামনের দিকে অগ্রসর হতে চাইছেন সেটা বোঝা যাচ্ছে। তবে সময় উত্তর দেবে। এদিনের বার্ষিক সাধারণ সভায় উপস্থিত ছিল আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, কালিম্পং, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগণা, চন্দননগর, বীরভূম, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, মানভূম, বাঁকুড়া। তবে সভায় দেখা যায়নি জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং, বর্ধমান, হুগলী, হাওড়া, শিলিগুড়ি এবং নদীয়ার প্রতিনিধিদের।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here