ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন : অভিনব উদ্যোগ ‘দ্য রিফিউজ’ -এর। ওঁদের বহুদিনের ইচ্ছে ছিল, ইডেনে গিয়ে কোনও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ দেখা। ইচ্ছে থাকলে হবে কি, তাঁরা তো গৃহহীন। জীবনের শেষ দিনগুলি কোথায় কাটাবেন তাই ওরা জানতেন না। কেউ ফুটপাথে থাকতেন, কেউ আবার বিভিন্ন পাড়ার রাস্তায়। সেই অনিশ্চিত জীবনকে আশ্রয় দিয়েছে বৌবাজারের ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া বিপরিতে অনাথ আশ্রম ‘দ্য রিফিউজ’ সংস্থা। আর এই সংস্থার অন্যতম কর্তা বিশ্বরূপ দে।
গৃহহীন মায়েরা ইডেনে গিয়ে খেলা দেখার কথা বিশ্বরূপবাবুকে বলেছিলেন। ওঁদের কথা শুনে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছিলেন বিশ্বরূপবাবু। শেষ পযর্ন্ত তাঁদের ইচ্ছে মতন,ইচ্ছে পূরণ করলেন সিএবির প্রাক্তন কর্তা বিশ্বরূপ দে। একদিকে কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা,অন্যদিকে ইডেনে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের বোধন। মা লক্ষ্মীর আরাধনার দিনে ‘দ্য রিফিউজ’-র মায়েরা ইডেনের নন্দন কাননে।
শনিবার ইডেনে ছিল বিশ্বকাপের বাংলাদেশ-নেদারল্যান্ড ম্যাচ। এটাই ছিল এবারের বিশ্বকাপের ইডেনের প্রথম ম্যাচ। দুপুর হতে না হতে ‘দ্য রিফিউজ’-র অন্যতম কর্তা ও ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিশ্বরূপ দে নিজে এক ঝাঁক বয়স্ক মহিলাদের ইডেনে নিয়ে আসেন। কি ভাবে মাঠে ঢুকবেন,কোথায় বসবেন সব ব্যবস্থা করে দেন তিনি।
হাতে টিকিট নিয়ে ইডেন গার্ডেন্সের সবুজ গালিচায় ঢুকে সেই সব মায়েরা অবাক দৃষ্টিতে শুধু চারিদিক দেখছিলেন। এই সব গৃহহীন মায়েদের কারও কারও শেকড় ছিল বাংলাদেশ। কারও ফরিদপুর, কারওবা ঢাকা,ময়মনসিংহ। ওঁরা ক্রিকেটের আইন বোঝেন না, ওঁরা চেনেন না বাংলাদেশের কোনও ক্রিকেটরকে। ওঁরা চেনেন শুধু বাংলাদেশকে। স্বাভাবিক ভাবেই ইডেনে এসে নীরবে সমর্থন করে গেলেন তাঁদের আঁতুরঘর বাংলাদেশকে। জীবনের সাধ মেটালেন ইডেনের ঝাঁ চকচকে আলোয় চোখ মেলে।
গৃহহীন মায়েদের কিছুটা সাধ পূর্ণ করতে পেরে তৃপ্তি পেয়েছেন ‘দ্য রিফিউজ’ সংস্থার কর্তা বিশ্বরূপ দে। তিন’ইনসাইড স্পোর্টস’কে বলছিলেন,”এই সব মায়েদের একটা সময় থাকার কোনও জায়গা ছিল না। আমাদের সংস্থা আশ্রয়হীন ছেলে-মেয়েদের পাশাপাশি গৃহহীন মহিলাদেরও থাকা,খাওয়ার ব্যবস্থা করে থাকে। তাঁদের ইচ্ছে হয়েছিল ইডেনে ম্যাচ দেখার। সেই ম্যাচ দেখার ব্যবস্থা করতে পেরে ভাল লাগছে। ওঁরা খুশি মানে আমরাও খুশি।”