দুর্ব‍্যহারের অভিযোগ পাওয়ার ২ ঘন্টার মধ‍্যে কোচকে ডাকলেন IFA সচিব

0

ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন : খেলো ইন্ডিয়ার বাংলা কোচের বিরুদ্ধে ফুটবলারের সঙ্গে দুর্ব‍্যবহারের অভিযোগ পাওয়ার দুই ঘন্টার মধ‍্যে ডেকে পাঠালেন আইএফএ সচিব অনির্বান দত্ত। আজ, সোমবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ আইএফএ সচিব অনির্বান দত্তর কাছে কোচ অমিত ঘোষের নামে নালিশ জানিয়ে লিখিত অভিযোগ পত্র জমা দিয়েছিলেন ফুটবলার রিতম ভট্টাচার্যের বাবা প্রবীর ভট্টাচার্য। অভিযোগ পাওয়ার দুই ঘন্টার মধ‍্যে বাংলা কোচ অমিতকে তলব করে দেখা করার নির্দেশ দেন সচিব অনির্বান। আইএফএ সচিব অনির্বানের তলব পেয়ে বাংলা দলের ম‍্যানেজার শুভজিত সাহাকে সঙ্গে করে আইএফএ অফিসে হাজির হন বিতর্কিত কোচ অমিত ঘোষ।

সচিব অনির্বান, কোচ ও ম‍্যানেজারকে নিয়ে নিজের অফিস ঘরে আলাদা করে বৈঠক করেন। বৈঠক করে ঘর থেকে বেরোনোর সময় কোচ অমিতকে গম্ভীর থাকতে যায়। সচিবের ঘর থেকে বেরিয়েই সহসচিবদের ঘরে ঢুকে পড়েন অমিত ও শুভজিত। ওই সময় ছিলেন সহসচিব রাকেশ (মুন) ঝাঁ। এই সময় বাংলা কোচ অমিতকে প্রশ্ন করলে তিনি ‘ইনসাইড স্পোর্টস’কে বলেন,”সচিবের সঙ্গে কথা হল। আমি আমার বক্তব‍্য জানিয়েছি। আগেও আপনাকে বলেছি,ফুটবলারটি যে অভিযোগ করেছে তা আমি বলিনি।”

কোচের সঙ্গে কি কথা হল? আইএফএ সচিব অনির্বান দত্তকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন,”যে অভিযোগ পেয়েছি তা জানতে চেয়েছি। কোচ তাঁর বক্তব‍্য বলেছেন। এই মুহুর্তে আর বেশি কিছু বলতে চাই না।” সচিব বেশি কথা না বললেও ফুটবলার রিতমের অভিযোগ নিয়ে কোচ অমিত ঘোষকে লিখিত চিঠি পাঠাতে চলেছে আইএফএ। তবে এই চিঠিতে কি লেখা থাকবে তা জানা যায়নি।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, খেলো ইন্ডিয়ার কোচ অমিত ঘোষের বিরুদ্ধে দুর্ব‍্যবহারের অভিযোগ এনে আইএফএ সচিবের কাছে নালিশ করেছেন গোলরক্ষক রিতম ভট্টাচার্য। আজ সোমবার দুপুরেই এই মর্মে প্রতিবেদন প্রকাশ করে ‘ইনসাইড স্পোর্টস।’ কোচ অমিতের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করার পাশাপাশি রিতম ‘ইনসাইড স্পোর্টস’কে জানিয়েছেন,”বাংলা দলের সঙ্গে বেঙ্গল ফুটবল অ‍্যাকাডেমির বিরুদ্ধে প্র‍্যাকটিস ম‍্যাচ ছিল। তিনটে অর্ধে ম‍্যাচ হয়েছিল। আমাকে প্রথম দুটি অর্ধে নামানো হয়নি। তৃতীয় অর্ধে আমাকে নামান কোচ। আমাদের স্টপার ও আমার – দুজনের ভুলে গোল খাই। তারপরেই আমাকে তুলে নেওয়া হয়। মাঠেই আমাকে বকাঝকা করেন কোচ। সেটাও কিছু মনে করিনি। কিন্তু একদিন পর প্র‍্যাকটিস শুরুর ঠিক আগে ফুটবলারদের লাইনে দাঁড় করিয়ে সবার সামনে আমাকে খুব খারাপ ভাবে অপমান করেন কোচ অমিত স‍্যার। তিনি বলতে থাকেন,’তোর জন‍্যই টিম হেরেছে। এই দিনটার জন‍্যই অপেক্ষা করছিলাম। তোকে এখনই বাদ দিতে পারি। কেউ কিচ্ছু করতে পারবে না। তোর জন‍্য দশ-বারো জন আমাকে ফোন করছে। আমি বিরক্ত।’ এই কথা গুলি শুনে কোচকে বলেছিলাম, আমার পারফরম্যান্স খারাপ হলে বাদ দিয়ে দিন। সমস‍্যা নেই। কিন্তু আপনি বলুন কারা আমার জন‍্য আপনাকে ফোন করছে। নামগুলো বলুন। আমার প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি কোচ।
আমি লিস্টের এক নম্বরে ছিলাম। অথচ আমাকেই বলছেন,এই দিনটার জন‍্যই অপেক্ষা করছিলেন। তারমানে আমার একটা ভুলের জন‍্য অপেক্ষা করেছিলেন আমাকে বাদ দেবে বলে? কোচ আমাদের কাছে শিক্ষকের মতো। তিনিই ভুল শুধরে দেবেন। ভাল খেললে প্রশংসা করবেন। খারাপ খেললে বকাঝকা করবেন। এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তিনি যে ভাবে কথাগুলি বলে আমাকে অপমান করলেন তা মেনে নেওয়া যায় না। ওই অপমান সহ‍্য করেও পরে দুদিন প্র‍্যাকটিসে গিয়েছিলাম। কিন্তু কোচ আমার সঙ্গে কথায় বলতেন না। খুব খারাপ লাগত। তারপর আর বাংলা শিবিরের প্র‍্যাকটিসে যায়নি। আমি বাংলা দলের চূড়ান্ত দলে সুযোগের জন‍্য আইএফএ সচিবকে নালিশ করছি না। আমি জানি ভাল খেললেও এই কোচ আমাকে নেবেন না। আমি চাই ভবিষ্যতে আর কোনও ফুটবলার যেন এমন ভাবে অপমানিত হতে না হয়। এই অপমান একধরনের মানসিক অত‍্যাচার।” আপনি নিজে আইএফএ সচিবের কাছে এলেন না কেন? রিতম ফোনে জানান,”আজ সকালেই আমাকে বিশেষ কাজের জন‍্য কেরল আসতে হয়েছে। তাই আমি চিঠি লিখে বাবার হাত দিয়ে আইএফএ সচিব অনির্বান স‍্যারের কাছে পাঠিয়েছি। তিনি যদি আমাকে পরে ডাকেন তখন অবশ‍্যই অনির্বান স‍্যারের কাছে যাব।”

উল্লেখ্য,কোন কোচের বিরুদ্ধে, কোনও ফুটবলার লিখিত অভিযোগ করছে তা সাম্প্রতিক কালে শোনা যায়নি। হয়তো আইএফএ-এর ইতিহাসে এই প্রথম। এই অভিযোগ করার পর ময়দানে তীব্র আলোচনা চলছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here